ঢাকা, মঙ্গলবার   ০১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন চায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ০৮:৩৬, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ১০:১১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক তাড়িত হয়ে আসা মিয়ানমারের নাগরিকদের জন্য ভারত, চীন ও অন্যান্য আশিয়ানভুক্ত রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে নিরাপদ ও সম্মানজনক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন চায় বাংলাদেশ। গত সন্ধ্যায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘আমরা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির জন্য একটি নিরাপদ আবাসস্থল যে এলাকা ভারত, চীন ও আসিয়ানভুক্ত অন্যান্য দেশসমূহের পর্যবেক্ষণাধীন থাকবে। যেহেতু চীন ও ভারতের সঙ্গে মিয়ানমারের বন্ধুত্ব রয়েছে তাই এ প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হতে পারে।’

মোমেন জানান, তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে কাল সন্ধ্যায় সাক্ষাতে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ প্রস্তাব দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। জবাবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিষয়টা দেখছি।’তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলাপকালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ আবাসস্থল নিয়ে আমার ভাবনা ব্যক্ত করলে তিনি এটিকে একটি ‘উদ্ভাবনমূলক’ ভাবনা বলে মন্তব্য করেছেন।’

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিতের বিষয় ছিল এ সফরের মূল উদ্দেশ বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, অন্যথায় এ অঞ্চলে ‘মৌলবাদ ও অনিশ্চয়তা বিস্তারলাভ করতে পারে যা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিকে বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে। জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ১০ লাখেরও বেশী রোহিঙ্গার গুরুভার বহন করায় নানাবিধ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক শিষ্ঠাচারের বর্ণনা দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ সকল রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে বিপুলসংখ্যক লোকের জীবন রক্ষা করেছেন। তা না হলে বিশ্বকে বিপুলসংখ্যক লোকের মৃত্যু দেখতে হতো। এ ঘটনা হতে পারতো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম গণহত্যা। এ প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ২৪ সহস্রাধিক লোক নিহত হয়েছে। ১৮ হাজার নারী ধর্ষিত হয়েছে।

১ লাখ ২০ হাজার বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। ১ লাখ ১৫ হাজার বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা তদেরকে আশ্রয় না দিলে তারা আরো বিপর্যস্ত হতো। ভারতে তার সফর সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি ছিল খুবই সফল এবং ইতিবাচক সফর। তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সুষমা সরাজ এবং ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং তাকে অভ্যর্থনা জানান। তিস্তার পানি বন্টন সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, শুধু তিস্তা নয় বাংলাদেশ চায় আলোচনার মাধ্যমে সকল বিষয়ের একটি সমাধান। তিনি বলেন, অভিন্ন ৫৪ টি নদীর সবকটির পানি বন্টন সমস্যার একটি সমাধান পাওয়া যেতে পারে।

আমাদের আলোচনায় শুধু একটি নদী নিয়েই সীমাবদ্ধ থাকা ঠিক হবে না। মোমেন ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সীমানা নিয়ে বিরোধের উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বর্তমানে চমৎকার সম্পর্ক বিরাজ করছে।

ফলে আলোচনার মাধ্যমে প্রতিবেশি এ দেশটির সঙ্গে সকল সমস্যার সমাধানে আমরা সক্ষম হব। বাংলাদেশকে ভারতের ৪.৫ বিলিয়ন ডলার লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, তিনি এ প্রক্রিয়াটি দ্রুত করার জন্য ভারত কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন।

টিআর/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি