র্যাগিংয়ের শিকার দুই শিক্ষার্থী হাসপাতালে
প্রকাশিত : ১৮:৫১, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচয়পর্বের নামে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নবীন দুই শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের পর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো অভিযোগ উঠেছে অগ্রজ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চেকপোষ্ট সংলগ্ন একছাত্রী মেসে নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লিয়োনাকে পরিচয়পর্বের নামে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে একই ছাত্রী মেসে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থী নবীন শিক্ষার্থীকে বকাঝকা করেছে। মানসিক চাপ প্রয়োগ করায় এতে সিঁড়ি থেকে পড়ে আহত হয় লিয়োনা। অসুস্থ লিয়োনাকে প্রথমে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। পরবর্তীতে বমি করার পর তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে আরেক নবীন শিক্ষার্থী সানজিদা স্বর্ণাকে র্যাগ দেয়ার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।
এঘটনায় অসুস্থ শিক্ষার্থী লিয়োনাকে দেখতে হাসপাতালে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. শেখ সুজন আলী, সহকারী প্রক্টর ও নাট্যকলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আল-জাবির, অগ্নিবীণা হলের হাউজ টিউটর মাসুদুল মান্নান ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক মুশফিকুর রহমান হীরক।
শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী প্রক্টর ও নাট্যকলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আল-জাবির বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের কথা বলবো। আমি আমার শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা না দিতে পারলে আমার দায়িত্বের কি দরকার। শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে এটি স্পষ্ট যে তার উপর মানসিক চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে এবং এতে সে ভীত হয়ে পরেছে। পরবর্তীতে সে সিঁড়ি থেকে পড়ে আহত হয়েছে।
আমার এই শিক্ষার্থী একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, এই মানসিক নির্যাতন যারা করেছে তার বিচার না করতে পারলে আমি আমার সহকারী প্রক্টর পদ থেকে পদত্যাগ করবো।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. শেখ সুজন আলী বলেন, র্যাগিং নিয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না। দ্রুততম সময়ে এই সমস্যার সমাধান করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এবং আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন, রোববার এর মধ্যে এই বিষয়ের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, আমি মেয়েটির বিষয়ে অবগত। এটির সাথে যারাই যুক্ত থাকুক তাদের কোন ছাড় দেয়া হবে না। ইতোমধ্যে ৪ সদস্যের একটি এন্টি র্যাগিং কমিটি গঠন করে দিয়েছি। খুব দ্রুতই জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের এই ক্যাম্পাসে র্যাগিং এর নামে কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চলবে না। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ এই ঘটনায় জড়িতদের বিচার চায় বলে জানিয়েছে সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
উল্লেখ্য, নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগ ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কমিটি আগামী রবিবার সকাল ১০টায় র্যাগিং বিরোধী কর্মসূচি পালন করবে। অন্যদিকে র্যাগিং এর শিকার হয়ে সিএসই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ইমরানও হাসপাতালে ভর্তি ছিলো। এন্টি র্যাগিং কমিটির আহবায়ক ড. শেখ সুজন আলী, সদস্য সচিব প্রক্টর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, সদস্য হিসেবে রয়েছেন দুই হল প্রভোস্ট।
কেআই/
আরও পড়ুন