র্যাম্প মডেল থেকে জঙ্গি নেতা
প্রকাশিত : ১৬:৩৪, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৪:৪৭, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
ঢাকার বনশ্রী এলাকা থেকে বুধবার রাতে গ্রেফতার হওয়া যুবকের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। মেহেদী হাসান নামে ওই যুবক এক সময় র্যা ম্প মডেল ছিলেন। পরে তিনি যোগ দেন জামাতুল মোজাহেদিন বাংলাদেশে । গ্রেফতারের আগ পর্যলন্ত তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত ওই জঙ্গি সংগঠনের একজন ‘প্রথম সারির নেতা’ ছিলেন।
কারওয়ানবাজারে র্যালব মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, ঢাকার দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ পাস করা মেহেদীর বাড়ি পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার রাজাপুর গ্রামে। তার বাবা খোরশেদ আলম পুলিশের একজন অবসরপ্রাপ্ত এএসআই।
ছাত্রাবস্থায় মেহেদী নামে মডেলিং করতেন ওই যুবক। লেখাপড়া শেষ করে শুরু করেন ব্যবসা। জঙ্গিবাদে জড়ানোর পর ইমাম মেহেদী হাসান ওরফে আবু জিব্রিল নাম নিয়ে তিনি সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন।
র্যাব জানায়, গ্রেফতার হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মেহেদী বলেছেন, ২০১৫ সাল থেকে তিনি জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের সঙ্গে জড়িত। তার বাসা থেকে দুটি ল্যাপটপ, একটি মোবাইল ফোন, একটি পাসপোর্ট এবং উগ্রবাদী বই জব্দ করা হয়েছে। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা আলামত থেকে জানা যায়, ব্রিগেড আদ-দার-ই-কুতনী অপারেশনাল সক্ষমতা অর্জন করেছে এবং যে কোনো স্থানে নাশকতা চালাতে সক্ষম।
তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, ‘সে জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের বিগ্রেড আদ-দার-ই কুতনীর কমান্ডার। তাকে আমরা দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছিলাম। লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুহিনের নেতৃত্বেই বুধবার গভীর রাতে খিলগাঁও থানার দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মেহেদীকে গ্রেফতার করে র্যাব।
মেহেদীর বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা ও বনানী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রয়েছে বলে র্যা বের ভাষ্য।
র্যা বের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতবছর অক্টোবরে র্যাবের অভিযানের মধ্যে পালাতে গিয়ে নিহত হন জেএমবির তখনকার আমির সারোয়ার জাহান ওরফে আবু ইব্রাহিম আল হানিফ, যিনি তামিম চৌধুরীর সঙ্গে মিলে জেএমবির নতুন অংশটিকে সংগঠিত করেন। সারোয়ারের বাসায় পাওয়া আলামত থেকে এই সংগঠনের দুটি ‘সামরিক ব্রিগেড’ থাকার তথ্য পাওয়া যায়।
এর মধ্যে ‘বদর স্কোয়াড ব্রিগেড’ হলি আর্টিজান বেকারিসহ বিভিন্ন হামলায় সক্রিয় ভূমিকা রাখে। আর তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ ‘ব্রিগেড আদ-দার-ই-কুতনী’ গোপনে কর্মী সংগ্রহের পাশাপাশি ‘রিজার্ভ ফোর্স’ হিসেবে ছিল বলে র্যাবের ভাষ্য।আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ‘বদর স্কোয়াড’ দুর্বল হয়ে গেলে ‘ব্রিগেড আদ-দার-ই-কুতনী’ সদস্য সংগ্রহ করে শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা করে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, “ব্রিগেড আদ-দার-ই-কুতনীর বিভিন্ন পর্যায়ে বেশ কিছু সদস্য রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার মেহেদীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
//এআর
আরও পড়ুন