ঢাকা, শুক্রবার   ১৪ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

লালদিঘী গণহত্যা: বিস্মৃত এক নাম মহিউদ্দীন শামীম

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:১০, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ | আপডেট: ১৬:০৬, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

১৯৮১ সালের ১৭মে শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর থেকে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে মোট ১৯বার। এর মধ্যে এরশাদ আমলেই দুই বার। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারির হামলাটি ছিল প্রথম হামলা। আর মহিউদ্দিন শামীম ছিলেন সেই হামলায় প্রথম শহীদ। তবে অসংখ্য নেতার ভিড়ে শামীমের আত্মত্যাগের কথা আজ হয়তো অনেকে ভুলেই গেছেন।

প্রায় ৩৫ বছর আগে ঠিক এই দিনের ঘটনা। মহিউদ্দিন শামীম তখন টগবগে তরুণ। ছিলেন ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ নেতা। সেদিন চট্টগ্রামে লালদিঘী ময়দানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার স্বৈরাচার বিরোধী সমাবেশ। লোকমুখে শুনা গিয়েছিল পুলিশ বাধা দিবে। তাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো সব বাধা পার করে হলেও সমাবেশ হবেই। 

হাজার হাজার নেতাকর্মী পরিবেষ্টিত হয়ে এয়ারর্পোট থেকে নিউমার্কেট হয়ে কোর্ট বিল্ডিং যাচ্ছিল শেখ হাসিনার গাড়িবহর। এর মধ্যেই পথে পথে চলছিল বিডিআরের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। শেখ হাসিনার গাড়িকে নিরাপদে কোতয়ালী মোড় পার করে দেওয়ার জন্য দারুল ফজল মার্কেটের সামনে মানব বেষ্টনী তৈরি করে সীতাকুণ্ড ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ। সেখানে নেতৃত্বে ছিলেন সীতাকুণ্ড কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন শামীম ও অমল কান্তি দাশ।

ছাত্রলীগ কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে কৃষ্ণ কুমারী স্কুলের দেয়াল থেকে বিডিআর গুলি চালায়। প্রথম দফা গুলির একটি নি:শব্দে শামীমের উপরের চোয়াল দিয়ে ঢুকে মাথার পিছন দিয়ে বের হয়ে যায়। মাটিতে ঢলে পড়া শামীমকে ধরতে যান অমল দাশ। কিন্তু দ্বিতীয় গুলিটি তার চিবুক হয়ে বাম চোয়ালের একটি অংশ ছিঁড়ে বেরিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন শামীম।

মহিউদ্দিন শামীম বাবাকে হারিয়েছিলেন ছোট বেলায়। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন প্রথম। বাবার মৃত্যুর পর অনেক কষ্টে মা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে একটি চাকরি জোগাড় করেছিলেন। টেনেটুনেই চলছিল সংসার। মায়ের স্বপ্ন ছিল ছেলে বড় হয়ে সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর বাস্তবে রূপ নেয়নি। 

মহিউদ্দীন শামীমের মৃত্যুর পর তার পরিবারের সদস্যরা অনেকটা অবহেলিতই থেকে গেছেন। শামীমের মামা সাবেক ছাত্রনেতা শাহেন শাহ ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছিলেন "আমরা এসব নিয়ে কথা বলতে চাই না। সন্তান হারালে আমার বোন হারিয়েছে, এ যন্ত্রণা আর কেউ বুঝবে না।"

সন্তান হারানোর পর শামীমের মাকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাকে সান্ত্বনা দিতে সশরীরে গিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে স্থানীয় নেতারা উদ্যোগ নিয়ে পরিবারটির কোনো সাহায্য করেনি। কোনো ধরনের মূল্যায়ন বা স্বীকৃতিও দেয়নি। শেষ পর্যন্ত শামীমের বিধবা মা আমেরিকায় পাড়ি জমান।  

এসবি/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি