ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

শখের অ্যাকুরিয়াম: পর্ব-১

মো: আতিকুর রহমান

প্রকাশিত : ১০:১৩, ৩০ মে ২০২১ | আপডেট: ১০:২৫, ৩০ মে ২০২১

ঘরের সৌন্দর্য বর্ধনে অ্যাকুরিয়াম এখন অপরিহার্য ব্যাপার। সৌখিন মানুষের প্রথম পছন্দও বটে। এক সময় উচ্চ ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারের ড্রয়িং রুমে দেখা যেত অ্যাকুরিয়াম। কিন্তু এখন তা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের ঘরে দেখা মেলে হরহামেশাই।

আমাদের শহর কেন্দ্রিক জীবনধারায় ড্রইং রুমে একটি অ্যাকুরিয়াম সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে তোলে নিঃসন্দেহে। ড্রয়িং রুমে ভারী আসবাবপত্রের সঙ্গে একটি অ্যাকুরিয়াম হলে মন্দ হয় না। কিন্তু এই সৌখিনতার পাশাপাশি চলে আসে সেই জিনিসটার প্রতি যত্ন এবং রক্ষণাবেক্ষণ। 

তার আগে জানবো কীভাবে তৈরি করতে হয় এই অ্যাকুরিয়াম। আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক অ্যাকুরিয়াম তৈরির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে।

অ্যাকুরিয়াম তৈরিঃ অ্যাকুরিয়াম তৈরি করা যেমন মজার বিষয়, তেমন চ্যালেজিংও হতে পারে। তবে ধাপে ধাপে কাজ করলে অ্যাকুরিয়াম তৈরি করা খুবই সহজ। অনেকে একে ফিশ ট্যাংকও বলে থাকে।

অনেকে ইট সিমেন্ট, রড বালি দিয়েও ফিশ ট্যাংক তৈরি করে থাকেন। সাধারণত এক বা দুই জাতের অনেক বেশী মাছ একসাথে বেশী পরিমাণে লালন পালন করলে, এই ফিশ ট্যাংক-এর প্রয়োজন পড়ে। তবে অনেক জাতের মাছ অল্প পরিসরে লালন পালন করলে গ্লাস দিয়ে বানানোই ভাল।

অ্যাকুরিয়াম তৈরি ও ধাপে ধাপে নির্দেশনা
আমরা এখন যে অ্যাকুরিয়াম তৈরি করব, তার দৈর্ঘ্য হবে ২৪ ইঞ্চি, প্রস্থ হবে ১২ ইঞ্চি, গভীরতা ১৮ ইঞ্চি। আমাদের অ্যাকুরিয়াম তৈরির জন্য যা যা লাগবে, তাহলো- গ্লাস বা কাঁচ, সিলিকন আঠা, সিরিঞ্জ, কসটেপ, কাঁচ কাটা কলম (যদি লাগে)।

গ্লাস বা কাঁচ কাটিয়ে আনলে কোনও ঝামেলা নেই, তবে নিজে কাটলে কাঁচ কাটা কলম লাগবে। গ্লাস বা কাঁচ কাটার আগে পরিকল্পনা করুন। মাপ ঠিক করে নিন, কেমন আকারের অ্যাকুরিয়াম আপনি তৈরি করবেন।

আমি একটি মাঝারি আকারের অ্যাকুরিয়াম তৈরি করব। এ ক্ষেত্রে আমি .৮ এমএম গ্লাস নেব। মানে গ্লাসটা একটু মোটা হবে। এমএম যত বেশি হবে গ্লাস বা কাঁচ ততবেশি মোটা হবে। আমাদের অ্যাকুরিয়াম তৈরির জন্য মোট ৫টা গ্লাস লাগবে। 

যেমন- 
১. ২৪/১৮ ইঞ্চি গ্লাস ২টা
২. ১২/১৮ ইঞ্চি গ্লাস ২টা
৩. ২৪.২/১২.২ ইঞ্চি গ্লাস ১টা

এখন অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, ২৪.২ বা ১২.২ কেন, দশমিক ২ বেশি কেন? এর কারণ হলো- এই গ্লাসটা নিচে থাকবে বা এই গ্লাস এর ওপরেই অন্য ৪টা গ্লাস বসবে।

এবার একটা সমান্তরাল যায়গায় ২৪.২/১২.২ ইঞ্চি গ্লাসটা রাখি। সিলিকন আঠা ইন্টেক সিল খুলে সিরিঞ্জ এর ভিতরে সিলিকন আঠা নিই। এবার ১২/১৮ ইঞ্চি গ্লাসটা হাতে নিয়ে যে পাশে কাটা, সেই পাশটায় সিলিকন আঠা লাগাবো। আঠা লাগানোর পর ২৪.২/১২.২ ইঞ্চি গ্লাসটার যে পাশটা ১২.২ ইঞ্চি, সে পাশে ১২/১৮ ইঞ্চি গ্লাস এর ১২ ইঞ্চি পাশটা বসাবো।


ফলে ১৮ ইঞ্চি খাড়াভাবে থাকবে। এবার গ্লাসটা ভারী একটা জিনিস দিয়ে আটকে রাখি। তারপর ২৪/১৮ ইঞ্চি গ্লাসটা হাতে নিই। এই গ্লাসের যে পাশটায় কাটা যায়গা সে পাশে সিলিকন আঠা লাগিয়ে নেই। এবার ২৪.২/১২.২ ইঞ্চি গ্লাসটার ২৪.২ ইঞ্চি পার্শ্বের উপরে ২৪ ইঞ্চি গ্লাসটা বসাবো। এবার কসটেপ দিয়ে উপরের দুইটা গ্লাস আটকে দেব। এভাবে বাকি গ্লাসগুলো একইভাবে সিলিকন আঠা লাগিয়ে বসাবো।
 
এবার অ্যাকুরিয়ামের সিলিকন দেয়া প্রত্যেকটা জয়েন্ট এ কসটেপ লাগিয়ে দিব। অ্যাকুরিয়ামের ভিতর দিক দিয়ে গ্লাসের প্রত্যেকটা জয়েন্টে সিরিঞ্জ দিয়ে সিলিকন আঠা লাগিয়ে নিব। সাধারণত ১২ ঘণ্টা পর আঠা শুকিয়ে যায় বা অ্যাকুরিয়ামে পানি দেয়ার মতো উপযুক্ত হয়। 

সুতরাং হয়ে গেল আমাদের শখের অ্যাকুরিয়াম তৈরি। এবার নিজের পছন্দ মতো অ্যাকুরিয়াম ঢাকনা বানিয়ে নিব বা কিনে নিব। তবে মানে রাখতে হবে যে, অ্যাকুরিয়াম ঢাকনার ভিতরে সাধারণত লাইটিং এর ব্যবস্থা করা হয়। লাইটিং হলো আমার অ্যাকুরিয়ামের আলোর ব্যবস্থা কেমন হবে তাই। চলবে...

লেখক- একুয়ারিস্ট ও গণমাধ্যম কর্মী।
ফেসবুক গ্রুপ: https://www.facebook.com/groups/aquariumfishprice

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি