শহীদদের স্মরণে রাবি ‘বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ’
প্রকাশিত : ১২:০২, ৪ ডিসেম্বর ২০২১
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ডাকে অস্ত্র হাতে তুলে নেয় এদেশের মুক্তিকামী মানুষ। এক সাগর রক্ত আর অকৃত্রিম ত্যাগের বিনিময়ে ৯ মাসের যুদ্ধ শেষে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। মুক্তিযুদ্ধের অসংখ্য স্মৃতি ছড়িয়ে আছে সারাদেশে। সেইসব স্মৃতিচিহ্নের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ’ একটি।
১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল রাতে পাকিস্তানি বাহিনী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা জোহা হলে তাদের ক্যাম্প গড়ে তোলে। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জোহা হলকে তাদের ক্যান্টনমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করে।
বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাধীনতাকামী মানুষকে ধরে এনে এই ক্যাম্পে নির্যাতন করা হতো। তারপর হত্যা করে পাশের বধ্যভূমিতে ফেলে দিয়ে আসা হতো। এখানে রয়েছে ১০টি গণকবর।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ওই বধ্যভূমি থেকে বহু মানুষের হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়। সেই জায়গাটিতে তৈরি করা হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হল থেকে আধা কিলোমিটার পূর্ব দিকে বাহারি ফুলগাছের অপরূপ শোভায় শোভিত ছোট্ট একটু জায়গা। সমতল ভূমি থেকে কয়েকটি সিঁড়ি ভেঙে একটু উঁচুতে উঠলে কংক্রিটের চৌকোনা একটি বেদি চোখে পড়বে। বেদির মধ্যে তৈরি করা হয়েছে কংক্রিটের একটি বড় কূপ।
কূপের মধ্যে থেকে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে ৪২ ফুট উঁচু ছয় ধাপের চারকোনা বিশিষ্ট ইটের স্তম্ভ। সাজানো-গোছানো কোনো স্তম্ভ নয়। একটি পোড়ো বাড়ির খসে যাওয়া পলেস্তারার মতো দেখতে স্তম্ভটি। গায়ের বিভিন্ন জায়গায় কালো স্পট। যেন শুকিয়ে যাওয়া রক্ত। দেখলেই চোখের সামনে যে চিত্রটি ভেসে ওঠে, সেটি একটি মৃত্যুকূপের মতো।
১৯৭১ সালে এই অঞ্চলের হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে হত্যা করে গণকবর দেওয়া হয়েছিল এ জায়গায়। সেসব নাম না-জানা অসংখ্য শহীদের আত্মত্যাগ ও কান্নার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বধ্যভূমি।
এএইচ/