শাবি প্রেসক্লাবের সিকিম ভ্রমণ মেঘ পাহাড়ের মিতালী
প্রকাশিত : ২৩:৪১, ২৮ জুলাই ২০২০ | আপডেট: ২৩:৪৯, ২৮ জুলাই ২০২০
গতবছরের অক্টোবরে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের বাৎসরিক আন্তর্জাতিক ট্যুর শিলং, মেঘালয়, আসাম, সিকিম হয়ে কলকাতায় এসে সমাপ্তি টানে। ৯ দিনের এ ভ্রমণ অভিজ্ঞতার সাথে ছিলাম আমরা ক্লাবের ১৫জন সদস্য।
৭ অক্টোবর, ২০১৯। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সকাল ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাবে সবাই এক এক করে জড়ো হই আমরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে যাত্রা শুরু করি। সকাল সাড়ে ৭টায় সিলেটের বিখ্যাত পানসী রেস্টুরেন্ট থেকে সকালের নাস্তা শেষে ১০ টায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের তামাবিল বর্ডারে পৌছাই। যেটা ভারতের অংশে ডাউকি সীমান্ত হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ থেকে যারা সিকিম যায় তাদের অধিকাংশই বাংলাবান্ধা অথবা ফুলবাড়ী বর্ডার দিয়ে যাতায়াত করে। ট্যুরে একটু বৈচিত্র আনতে এবং সিলেট থেকে এই বর্ডার কাছে হওয়ায় আমরা তামাবিল বর্ডার ব্যাবহারের সিদ্ধান্ত নিই।
বর্ডারের দুই পাশের চেকপোস্টে আমাদের সমস্ত ঝামেলা মিটিয়ে ট্যুরিস্ট বাসে করে রওয়ানা দেই মেঘালয়ের রাজধানী শিলং এর উদ্দেশ্য। এতদিন জাফলংয়ে যেয়ে দূর থেকে দাঁড়িয়ে যে পাহাড়গুলো দেখে আফসোস করতাম আর বলতাম, ইশ! একবার যদি যেতে পারতাম এই পাহাড়গুলোর কাছে। আজ সে পাহাড়গুলোর কাছে যেয়েই শুধু ক্ষান্ত হই নি। তার চূড়ায় উঠে মেঘের মধ্যে থেকে বৃষ্টিতে ভিজেছি।
রাজধানী বলতে আমরা বুঝি বড় বড় অট্টালিকা, মিল-কারখানা আর হাজার হাজার গাড়ির উপস্থিতি। কিন্তু আপনার এ ধারণা সম্পূর্ণই বদলে যাবে শিলং শহরকে একবার অবলোকন করলে। শতশত পাহাড়ের সমষ্টি, সবুজের অরণ্য, না চাইতে বৃষ্টি আর এখানকার মানুষের অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকার প্রবণতা পৃথক করেছে অন্যসব নগরী থেকে। যাইহোক, আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা বেয়ে বেলা ৩টার দিকে শিলং এ পৌঁছাই। সেখানে ঘন্টাখানেক বিশ্রাম নিয়ে সরাসরি বাসে করে রওয়ানা দেই শিলিগুড়ির
উদ্দেশ্য। কেননা, লক্ষ্য আমাদের সিকিম!
যদিও কালিমপং এবং দার্জিলিং হয়ে সিকিম যাওয়া ব্যবস্থা আছে। তবে আপনার সবথেকে ভালো হবে শিলিগুড়ি হয়ে গেলে। আগেই বলেই নিই, সিকিম যেহেতু ভারতের কেন্দ্রশাসিত প্রদেশ সুতরাং এখানে প্রবেশের জন্য আপনাকে আলাদা অনুমতি নিতে হবে। এজন্য শিলিগুড়ি যেয়ে আপনি প্রথমেই ‘এসএনটি-সিকিম ন্যাশনালাইজড ট্রান্সপোর্ট’ থেকে অনুমতি নিবেন। তাহলে সিকিম সীমান্তে যেয়ে অনুমতিপত্রের জন্য আলাদা ঝামেলা পোহাতে হবে না। আর তাছাড়া, শিলিগুড়ি থেকে অনুমতিপত্র নিলে আপনি মাত্র ২৫০ রুপি দিয়ে সরকারী বাসে শিলিগুড়ি হতে সিকিম যেতে পারবেন।
কিন্তু আমাদের ভ্রমনের সময় নেপালীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান আর দূর্গা পূজা চলায় বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ সুবিধাগুলো নিতে পারিনি। আর তাছাড়া, শিলং হতে প্রায় ১৫ ঘন্টা জার্নি শেষে আমাদের সবাই ক্লান্ত থাকায় এখানে খুববেশী দেরী না করে দুটো সুমো জিপ ভাড়া করে রওয়ানা হই সিকিমের উদ্দেশ্য। সুমোভেদে গ্যাংটক পর্যন্ত ২৫০০-৪০০০ রুপি নিতে পারে।
আরেকটি বিষয়, সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন শিলিগুড়ি হতে কোন এজেন্সি ছাড়া সিকিমে যেতে। কেননা, শিলিগুড়ির এজেন্সিগুলো আপনাকে কম খরচে যতবেশী সুযোগ-সুবিধার কথা বলুক না কেন। তারা আপনার থেকে কিন্তু টাকার পরিমাণটা অনেক বেশীই রাখবে। এরা আপনাকে বিভিন্নভাবে বোঝাবে যে তাদের সাহায্য ছাড়া আপনি কোথাও ভালোভাবে ঘুরতে পারবেন না, কিন্ত এদের কোন কথাতেই কান দেবেন না। নিজে নিজেই অনেক টাকা বাচিয়ে আপনি আরামসেই ঘুরে আসতে
পারবেন।
আগেই বলে নিয়েছি, সরকারী ছুটি থাকায় আমরা শিলিগুড়ি থেকে সিকিমের ট্রান্সপোর্ট পারমিশন নিতে পারিনি। এজন্য সিকিম
সীমান্তের র্যাংপো থেকে আমাদের পারমিশন নিতে হয়েছে। এখানে একটা বিষয়, আপনাকে যদি র্যাংপো থেকে পারমিশন নিতে হয় তাহলে চেষ্টা করবেন, পথে কোথাও দেরী না করে খুব দ্রুত র্যাংপো সীমান্ত পৌছানোর। কেননা, সন্ধ্যার সাথে সাথে সীমান্ত বন্ধ হয়ে যায়। আমরা অবশ্য, বেলা ২টার দিকে পৌঁছিয়েছিলাম।
র্যাংপোতে পারমিশন নিতে কোনো টাকা লাগে না, পাসপোর্ট, পাসপোর্টের কপি, ভিসার কপি ও এক কপি ছবি নিয়ে গেলে সেগুলো রেখে পাসপোর্টে একটা সিল দিয়ে দেয় ও একটা কাগজে গ্রুপে যে কয়জন থাকে সে কয়জনের নাম লিখে একটা পারমিট পেপার দিয়ে দেয়। ফেরার দিন আবার র্যাংপোতে এসে অরিজিনাল পেপার টা জমা দিয়ে দিবেন ও প্রত্যেকের পাসপোর্টে ডিপার্চার ডেট লিখিয়ে নিয়ে যাবেন। তা নাহলে বর্ডার পার হতে পারবেন না।
বাংলাদেশ ছেড়ে সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে প্রবেশ করেছেন মানে আপনি এক ভিন্ন এক জগতে প্রবশে করছেন। কেননা এ শহরে নেই চিরচেনা কোলাহল, অযথা গাড়ির হর্ণ, গাড়ি চালকদের একে অপরকে টপকানোর প্রতিযোগিতা, আর যত্রতত্র ময়লা ফেলে ময়লার ভাগাড় তৈরীর ক্ষেত্র। সত্য বলতে গ্যাংটকের এসবকিছু আপনাকে মুগ্ধ করবে। আর তার থেকে মুগ্ধ করবে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে হাজার হাজার ফুট উচ্চতায় থেকে ভোর বেলায় কোন হোটেলের জানালা খুলে যখন দেখবেন অদূরেই পাহাড়ের
সাথে মেঘের কথা হচ্ছে। তাদের আড্ডাটা প্রাণবন্ত করে তুলছে ভোর বেলার মিষ্টি রোদ। আর তার প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী আপনি!
যাইহোক, ওইদিনই আমরা বিকাল বেলায়ই গ্যাংটকে পৌছাই। কম মূল্যের ভিতরেই ভালো একটা হোটেল খুজে বের করি। রুমে ঢুকে ফ্রেস হয়ে সন্ধার গ্যাংটক দেখতে বের হই। আমাদেও উদ্দেশ্য ছির নর্থ সিকিম ঘুরা এবং সেজন্য আপনাকে যেকোন এজেন্সী থেকে নর্থ সিকিমের প্যাকেজ নিতে হবে, প্যাকেজ ছাড়া নর্থ সিকিম কোনভাবেই ঘোরা সম্ভব নয়। অনেক ভালো একটা এজেন্সী থেকে ২ দিন ১ রাতের নর্থ সিকিম প্যাকেজ নিলাম প্রতিজন ৩হাজার টাকায়। এজন্সীর ক্ষেত্রে কোনরকম জালিয়াতী আপনি এখানে পাবেন না, এখানের মানুষগুলো বাঙালীর ন্যায় প্রতারণা খুব কমই বোঝে। আপনাকে যে কথা দিবে সেটা করবে। পরে সারা শহর ঘুরে আর অনেক রকমের স্ট্রিটফুড খেয়ে হোটেলে এসে রাতের খাবার খেয়ে ঘুম দিলাম।
গ্যাংটকে একরাত থেকে ভোরবেলায় রওয়ানা দিলাম নর্থ সিকিমের সর্বশেষ গ্রাম লাচুং এর উদ্দেশ্যে। কেননা লক্ষ্য আমাদের সিকিমের জিরোপয়েন্ট মানে একদম চায়না বর্ডার।
সত্য বলতে গ্যাংটক হতে লাচুং যেতে যেতে আপনার সৌন্দর্য পিপাসু মনের অর্ধেক তৃষ্ণা এখানেই মিটে যাবে। পথে যেতে খুব কাছ থেকেই দেখবেন তিস্তা নদীর উৎপত্তি, পাহাড় বেড়ে নামা হাজারো ঝর্ণা, আঁকা-বাকা পাহাড়ি রাস্তা আর আকাশ ছোঁয়া মেঘের মধ্যে দিয়ে সার্বক্ষনিক চলাচল তো আছেই। আর একটা বিষয়, এখানে কিন্তু প্লাস্টিক সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এখানের মানুষের প্রধান আয়ের উৎস পর্যটনশিল্প। এখানের পুরুষেরা প্রত্যেকে গাড়ির ড্রাইভার নয়তো কোন এক এজেন্সি প্রধান কিংবা হোটেল মালিক। আর মহিলারা গৃহসংলগ্ন দোকান আর সংসারের দায়িত্বে রয়েছে।
আমরা গ্যাংটক থেকে ১১০ কি.মি দূরের লাচুং এ এসে ‘স্নো ভেলী কটেজ’ এ উঠেছিলাম। আরেকটা বিষয়, জিরোপয়েন্ট যেতে গেলে আরো একবার পারমিশন এবং এক্ধসঢ়;্রট্রা টাকা লাগে। আর তাছাড়া, জিরোপয়েন্ট অত্যাধিক ঠান্টা থাকায় কটেজ থেকে বলা হয় জ্যাকেট, বুট আর হাতমোজা ভাড়া করে নিতে। অনেকে নিজেকে শক্তিশালী ভেবে আর দেশ থেকে নেওয়া কিছু ভারি কাপড় থাকায় ভাড়ায় এগুলো নিতে চান না। এগুলো করবেন না। জিরোপন্টে যথেষ্ট ঠান্ডার সাথে মোকাবেলা করতে
আপনার অবশ্যই এগুলো দরকার।
আর হ্যাঁ, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১১০০০ ফুট উচ্চতায় মাইনাস ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় লাচুংয়ের ‘স্নো ভেলী কটেজ’ এ
আমরা শাবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সভা আয়োজিত করেছিলাম, যা ইতিহাস হয়ে থাকবে।
পরদিন লাচুং থেকে ভোর ৫টায় জিরোপয়েন্ট এর উদ্দেশ্য রওয়ানা দিয়ে পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় সকাল ৮টা বেজে গেল। যাত্রাপথে আপনি সেসব দৃশ্যগুলো দেখতে পাবেন, যেগুলো এতকাল বিভিন্ন ক্যালেন্ডার কিংবা সিনেমায় দেখেছিলেন। যাহোক, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৭০০০ ফুট উচ্চতায় এসে হটাৎ নিজেকে অন্যরকম আবিষ্কার করলাম। যেখানে হিমালয়ের উচ্চতা ২৯০০০ ফুট। সাথে মাইনাস ৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রা। সবারই মাথা ঘুরতে শুরু করলো। সাথে বমি বমি ভাব। আর অক্সিজেন স্বল্পতায় শ্বাসকষ্টতো আছেই। তবুও মেঘ-পাহাড়- বরফ আর ঝরণার সখ্যতা থেকে কি আর নিজেকে আলাদা করা যায়? প্রায় একঘন্টা প্রকৃতির সৌন্দর্যের পিপাসা মিটিয়ে পাশের টং থেকে নুডলস, ছোলা আর কফি খেয়ে শরীর গরম করে আবার রওয়ানা দিলাম লাচুং এর উদ্দেশ্য।
আর হ্যাঁ, কেউ বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে এত উচ্চতায় উড়ানোর চেষ্টা করবেন না। কেননা, সিকিমের মানুষ কিন্তু এটা ভালো চোখে দেখে না। একজন ভাই একবার পতাকা বের করে চেষ্টা করেছিল এখানে বাংলাদেশের পতাকাকে স্বাক্ষী রাখার । কিন্তু ড্রাইভারের চোখ রাঙানী সেটা আর হতে দেয় নি।
লাচুং হতে জিরোপয়েন্ট যেতে গেলে আপনাকে পথে ইয়ামথাং ভ্যালি রেখে যেতে হবে। কিন্তু জিরোপয়েন্টে সকালে মেঘ থেকে পাহাড়ে বরফ তৈরির দৃশ্য দেখতে গেলে, আপনার উচিত হবে এখানে না দাড়িয়ে বরং ফিরতি পথে এখানে দাড়ানো। আমরাও তাই করেছিলাম। তবে জিরোপয়েন্ট দেখার পর ইয়ামথাং ভ্যালি দেখার স্বাদ মিটে যাবে। এজন্য আমরা এখানে খুব বেশী দেরী না করে রওয়ানা দিলাম লাচুং এর উদ্দেশ্য। কেননা কটেজ থেকে ব্যাগপাতি নিয়ে যতদ্রুত সম্ভব আবার গ্যাংটক রওয়ানা দিতে হবে।
লাচুং থেকে গ্যাংটকে আসতে আসতে রাত হয়ে যাওয়ায় গ্যাংটকে রাতটা কাটিয়ে একবুক কষ্ট নিয়ে পরদিন কলকাতায় রওয়ানা হই। কেননা পরিকল্পনা ছিল, লাচুং থেকে গ্যাংটকে ফিরে পরদিন স্যাংগু লেকে যাবো। যেটাও সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৮০০০ ফুট উপরে। কিন্তু কোন রকম পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই একবারে ১৭০০০ ফুট উচ্চতায় জিরোপয়েন্ট এ উঠায় আমাদের অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। যার কারণে স্যাংগু লেক পরিকল্পনা বাদ দিয়ে রওয়ানা দেই কলকাতার অভিমুখে। আর রেখে যাই সম্পূর্ন সিকিম না দেখতে পারার আক্ষেপ। তবে ওইদিন একদম ভোরে, সিকিম শহর যখন ঘুমিয়ে তখন আমরা ঘুরতে বের হই। এমজি মার্ক আর শহরের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র এত সাজানো গোছানো আর পরিপাটি যা শুধু স্বপ্নেই কল্পনা করা যায়।
তো, সকালে ঘুরে ডোমিনস পিজ্জাতে ব্রেকফাস্ট করে আমরা দুইটা সুমো জিপ নিয়ে শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। শিলিগুড়ী থেকে এখন কলকাতায় ফেরার পালা। বাসে যাওয়ার প্লান থাকলেও অনেকেই ট্রেনে করে ফিরতে চাইলেন। তাই আমরা নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশনে চলে গেলাম। আগেই জানতাম যে আমরা ফরেইন কোটায় কোন টিকেট পাবো না, অগ্যতা জেনারেল টিকেট কাটলাম মাত্র ১৬৫ রূপি করে। এই রুটে আমাদের বাজেট ছিলো ১২০০-১৫০০ রূপি। যদিও অনিচ্ছাকৃতভাবে
অনেক টাকা বাচিয়ে ফেলেছিলাম কিন্তু ট্রেনে সবাইকে দাড়িয়ে বা ফ্লোরে বসে কোলকাতা ফিরতে হয়েছিল।
পরদিন সকালে পৌছালাম কলকাতায়। এখানে থাকার প্লান দুইদিন। চিন্তা করলাম ট্রেনে যা টাকা বাচিয়েছি তা এখানে খেয়ে শেষ করবো। তাই প্লানমাফিক আরসালানের বিরিয়ানী, দাদা বৌদির বিরিয়ানী, ভজহরি মান্না, বসন্ত কেবিন, আমিনিয়া, হলিদিরাম আর ড্রেকার্স লেনের স্নাকর্স কোনকিছুই বাদ দেই নি আমরা। কলকাতার শপিং ব্যস্ততা আর কাচ্চি বিরিয়ানির স্বাদ পেলেও সিকিমকে কেন যেন ভূলতে পারছিরাম না।
কলকাতায় দুইদিন কিভাবে গেল বুঝতেই পারলাম না। তৃতীয়দিন সকালে বেনাপোল বর্ডার দিয়ে রাতে ঢাকায় এবং পরদিন সকালে সিলেট পৌছালাম।
জেনে রাখা ভালো আপনি যদি প্রথমবার সিকিম ভ্রমণ করে থাকেন তাহলে আপনাকে কিছু বিষয় জেনে রাখা ভালো। গ্যাংটক শহরের আওতায় সকল যায়গায় প্রকাশ্যে উন্মুক্ত স্থানে ও পাবলিক স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ, ধরা পড়লে ৫০০ রুপি জরিমানা। আর ময়লা বা প্লাস্টিকের বোতল যেখানে সেখানে ফেললে ৫০০০ রুপি জরিমানা, ৫ বছরের জন্য ভারত ভ্রমণে নিষিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনাও আছে। গ্যাংটকে যে এজেন্সিতেই যান সব কিছু ডিটেইলে জিজ্ঞেস করে নিবেন। সিম আগের থাকলে ভালো, নতুন নিলে শিলিগুড়ি থেকে নিতে পারবেন। পাসপোর্ট, পাসপোর্টের ১০ টি কপি, ভিসার কপি ১০ কপি ও পাসপোর্ট সাইজ ১০ কপি ছবি অবশ্যই নিবেন। শিলিগুড়ী থেকে কলকাতায় ট্রেনে যেতে সিকিম যাওয়ার আগেই টিকেট কেটে নিবেন, সম্ভব হলে বাংলাদেশ থেকেই কেটে যাবেন। কোন অবস্থাতেই শিলিগুড়ীর ট্যুর এজেন্সীগুলোকে পাত্তা দিবেন না, তাদেন ব্যাপারে কোন বাংলাদেশীদেরই ভালো অভিজ্ঞতা নেই। কলকাতায় থাকার ক্ষেত্রে নিউ মার্কেটের আসে পাশে না থেকে একটু দূরে থাকুন, সেক্ষেত্রে হোটেল ভাড়া অনেক কমে যাবে।
সিলেট ব্যতিত বাংলাদেশের অন্য যেকোন প্রান্ত থেকে সিকিম বা দার্জিলিং ভ্রমণের জন্য সহজ পোর্ট হচ্ছে বাংলাবান্ধা। সময় বাঁচাতে বর্ডারে যাওয়ার আগেই ট্রাভেল ট্যাক্স পরিশোধ করে নিবেন ।
আরকে//
আরও পড়ুন