শাস্ত্রীয় সঙ্গীতকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন পংকজ বসু
প্রকাশিত : ১৪:৪৯, ৩ অক্টোবর ২০১৯ | আপডেট: ১৪:৫০, ৩ অক্টোবর ২০১৯
কলা,বিদ্যার শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত।এতে মানুষের নীরব মনের সরব অভিব্যাক্তি প্রকাশ পায়। এর মাধ্যমে মানুষ খুঁজে নেয় তার হাসি আনন্দ আর বেঁচে থাকার প্রেরণা। চিত্ত পুলকিত হয় সঙ্গীতের মূর্চ্ছনায়। বিভিন্ন জন বিভিন্ন সঙ্গীতের অনুরাগী। যেমন শাস্ত্রীয়, লোক ও আধুনিক সঙ্গীত। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে পাণ্ডিত্য অর্জন করে শ্রোতার মনের মনিকোঠায় স্থান দখল করে নিয়েছেন দেশের স্বনামধন্য শিল্পী খেয়ালী পংকজ বসু।
তিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অমিয় ধারায় নিজেকে শিক্ত করার পাশাপাশি তার সঙ্গীতলব্ধ জ্ঞান ছড়িয়ে দিচ্ছেন এ দেশের হাজারো শিক্ষার্থীর মাঝে। শুধু তাই নয় তার নিরলস চেষ্টা ও পরিশ্রমের ফলে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সকল শ্রেণি শ্রোতাদের মাঝে একদিন ডানা মেলবে এমন প্রত্যাশা তার। তার নিত্য নতুন ভাবনা নিয়ে তিনি শাস্ত্রীয় সংগীতকে এরইমধ্যে নিরীক্ষা ধর্মী অনুষ্ঠান করে শ্রোতাদের মন জয় করেছেন। সম্প্রতী কলকাতার উত্তর ২৪ পরগণার ডমরু মিউজিক্যাল ফাউন্ডেশন, উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশের খেয়ালী পংকজ বসুকে পন্ডিত উপাধিতে ভূষিত করেছেন।
সবমিলিয়ে কেমন আছেন? দিনকাল কেমন চলছে? পংকজ বসু বলেন, বেশ ভালো। খুব ব্যস্ততায় কাটছে সময়। তবে সেটা উপভোগও করছি। সম্প্রতি কলকাতার উত্তর ২৪ পরগণার ডমরু মিউজিক্যাল ফাউন্ডেশন, উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে ও ভয়েস ট্রেনিং বিশেষ অবদানের জন্য পন্ডিত উপাধিতে ভূষিত করেছেন। এটা আমার জীবনের জন্য অনেক বড় পাওয়া।
তার সঙ্গীত জীবনের শুরুর দিনগুলোর সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বয়স যখন ১৮ বছর, তখন আমি ভারতে চলে যাই।সংগীত গুরু আচার্য জয়ন্ত বোসের কাছে ১৮ বছর যাবৎ ভয়েস ট্রেনিং সহ শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম গ্রহন করি। বাংলাদেশে ফিরে ২০০৭ সালে আমি সঙ্গীত নিয়ে কাজ শুরু করি। প্রতিষ্ঠা করি বীণকার মিউজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন পায় ২০১৪ তে। বীণকার মিউজিক্যাল সোসাইটি তে প্রতি চার মাস অন্তর ভারতের প্রশিক্ষকরা এই প্রতিষ্ঠানে এসে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।
আমি সংগীতের হাওয়া বদলের চেষ্টা করেছি। ক্লাসিক্যাল মিউজিককে, ট্রাডিশনাল ক্লাসিক্যাল মিউজিকে রূপান্তর করে নতুন রূপে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা স্বপ্ন এদেশের সম্ভাবনাময় সংগীত শিক্ষার্থীদের নিয়ে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার। সেটা হতে পারে ক্লাসিক্যাল সিম্ফন, ভোকাল সিম্ফন, বা শাস্ত্রীয় সংগীত মেলবন্ধনের মাধ্যমে,আর এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা, উৎসাহ নিয়ে আমরা কেবল এগিয়ে যেতে চাই। আমি চাই প্রকৃত সংগীত পিপাসুদের সহযোগিত।
মোটকথা, সকল ধারার সংগীতকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সেটা যে কোন ধারার হতে পারে। সে জন্য যা যা করার দরকার আমরা করবো। গান নিয়ে নিজের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে পংকজ বসু বলেন, এ দেশের সকল সংগীত পিপাসুদের কথা মাথায় রেখে‘বীণকার মিউজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ’কে আমি এমন ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, যেখানে সংগীতের সকল ধারা, সকল তালিম একই প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা অর্জন করতে পারবে।তার জন্য চাই সংগীতের পৃষ্ঠপোষক, সেটা সরকারী বা বেসরকারি উভয়ই হতে পারে। নইলে একার পক্ষে এটা করাটা একটু কঠিন মনে হচ্ছে।
ইতিমধ্যে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গানের মাধ্যমে আমাদের প্রতিষ্ঠান পরিচয় লাভ করেছে। যেমন দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, হরিয়ানা, ফরিদাবাদ, কোলকাতায় আমরা অনুষ্ঠান করেছি। আমি আরো বেশ কিছু কাজ করতে চাই সংগীত নিয়ে। সেটা একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই নিয়েছি।কিছু দিনের মধ্যেই সেটা আমরা সাংবাদিক সম্মেলনের মধ্যমে জানাবো। তাছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে দেশীয় সংগীতকে ছড়িয়ে দিতে নিত্য নতুন পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছি আমরা।
ভারতে সম্মানিত পণ্ডিত উপাধি প্রসঙ্গে পংকজ বসু বলেন, আমার মত একজন সাধারণ মানুষ যিনি শুধু সঙ্গীতকে ভালোবেসে এর সঙ্গে মিশে আছি, কতটুকু এতে অবদান রাখতে পেরেছি তা জানি না। এভাবে অন্য আরেকটি দেশ আমাকে সঙ্গীতে পন্ডিত উপাধি দেবে ভাবিনি। সত্যিই খুব ভালো লাগছে। শুদ্ধ সঙ্গীতের প্রতি দায়িত্ববোধ আরও বেড়ে গেলো। আমি আমার দেশ সহ যেখানেই সঙ্গীতে কাজ করার সুযোগ পাবো সেখানেই নিজের সর্বোচ্চ দেয়ার চেষ্টা করব। আমি সঙ্গীতের কারিগর হিসেবে কাজ করছি। আমি আমার জীবনকে গানের কারিগর হিসেবে উৎসর্গ করতে চাই।
টিআর/
আরও পড়ুন