ঢাকা, শনিবার   ৩০ নভেম্বর ২০২৪

শাহনাজ রহমতুল্লাহর অজানা কথা

প্রকাশিত : ১৫:৩৬, ২৪ মার্চ ২০১৯ | আপডেট: ১৬:০৬, ২৪ মার্চ ২০১৯

খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় রাজধানীর বারিধারায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে নিজ বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তিনি স্বামী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।

তার স্বামী মেজর (অব.) আবুল বাশার রহমত উল্লাহ ব্যবসায়ী। মেয়ে নাহিদ রহমত উল্লাহ থাকেন লন্ডনে আর ছেলে এ কে এম সায়েফ রহমত উল্লাহ যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করে এখন কানাডায় থাকেন।

১৯৫২ সালে জন্ম নেয়া এ সংগীত শিল্পী জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নায়ক জাফর ইকবাল ও বরেণ্য সুরকার আনোয়ার পারভেজের বোন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আলতাফ মাহমুদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ। সেই সুবাদে শিশু বয়সেই গানের জগতে জায়গা করে নেন শিল্পী শাহনাজ রহমত উল্লাহ।

সংগীতশিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহর ডাক নাম শাহীন। যিনি গান শুরু করেছিলেন মায়ের অনুপ্রেরণায়। তার পরিবারের ঘনিষ্ঠ দেশের আরেক বরেণ্য গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার। শাহনাজ রহমত উল্লাহ ষাটের দশকেই চলচ্চিত্র, টেলিভিশন এবং গ্রামোফোন রেকর্ডেও সমানভাবে জায়গা করে নিয়েছিলেন কিছুটা ব্যতিক্রমী কণ্ঠের কারণে।

এ শিল্পী ১০ বছর বয়স থেকেই গান শুরু করেন। খেলাঘর থেকে শুরু করা এ শিল্পীর কণ্ঠ শুরু থেকেই ছিল বেশ পরিণত। গজল সম্রাট মেহদী হাসানের শিষ্য হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শাহনাজ রহমত উল্লাহ খুব অল্প বয়সে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন কি করে? এমন প্রশ্নে হয়তো অনেকেরই।

আসলে সুরের সঙ্গে একটা শাস্ত্রীয় কাজ থাকতো তার। গলার ঢং ছিলো রেওয়াজি। এটিই তাকে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভের মূহুর্তে শাহনাজ রহমত উল্লাহর কণ্ঠেই ধ্বনিত হয়েছিলো ‘জয় বাংলা-বাংলার জয়’ গানটি।

এ গানটিসহ শাহনাজ রহমত উল্লাহর গাওয়া তিনটি গান ঠাঁই পেয়েছিলো বিবিসির শ্রোতাদের ভোটে মনোনীত সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বিশটি বাংলা গানের তালিকাতেও।

ষাটের দশকে তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনের ঢাকা কেন্দ্রের শুরুর দিকেই প্রযোজক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব মোস্তফা কামাল সৈয়দ, তার অনুষ্ঠানেই শাহনাজ রহমত উল্লাহ অনেকগুলো কালজয়ী গান গেয়ে অগণিত মানুষের মন জয় করেছেন।

পুরনোদের পাশাপাশি শাহনাজ রহমত উল্লাহ প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন পরবর্তীকালে উঠে আসা শিল্পীদের কাছেও।

 

রহমত উল্লাহকে ১৯৯২ সালে একুশে পদক দেওয়া হয়। ১৯৯০ সালে ‘ছুটির ফাঁদে’ সিনেমাতে গান গেয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। এ ছাড়া ২০১৬ সালে ‘চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’ আয়োজনে আজীবন সম্মাননা, ২০১৩ সালে সিটি ব্যাংক থেকে গুণীজন সংবর্ধনা দেওয়া হয় তাকে। এ ছাড়া গান গেয়ে আরও অসংখ্য পুরস্কার আর সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।

এসএ/

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি