শিক্ষকদের অবহেলায় এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া হলো না শাওনের
প্রকাশিত : ১৬:৫০, ১ মে ২০২৩
সারাদেশে শুরু হয়েছে এসএসসি পরীক্ষা। প্রস্তুতি নিয়েও ঢাকার নবাবগঞ্জে ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বসতে পারছে না শাওন মন্ডল নামে এক শিক্ষার্থী।
শাওন উপজেলার কৈলাইল ইউনিয়ন টেকনিক্যাল হাই স্কুলের শিক্ষার্থী। সে উপজেলার মোল্লাকান্দা গ্রামের কৃষক প্রাণতুষ্ট মন্ডলের ছেলে।
অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভুলে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে শাওনের। পরীক্ষার যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েও গত বুধবারের আগে জানতে পারে, বোর্ডে তার নিবন্ধনই হয়নি। এমন ঘটনায় শুধু হতবাক নয় রীতিমতো ক্ষুব্ধ ছেলেটির পরিবার, প্রতিবেশি ও এলাকাবাসাী।
শাওন মন্ডল বলেন, আমার সকল সহপাঠীদের মতো আমি স্কুলের বেতন, সেমিষ্টার, রেজিষ্ট্রেশন ফি সহ সকল ধরণের ফি পরিশোধ করেছি। আমার কোন বকেয়া নেই। টাকা ও কাগজপত্র যেহেতু জমা নিয়েছে সেহেতু আমি তো নিশ্চিত ছিলাম আমার রেজিষ্ট্রশন হয়েছে। আমার সাথে টাকা ও কাগজপত্র জমা দেয়া অন্য বন্ধুদের তো সমস্যা হয়নি। তাহলে আমার রেজিষ্ট্রেশন কেন হলো না।
শাওন আরো বলেন, চলতি বছরের মার্চ মাসের ২২ তারিখে আমাদের এসএসসি ব্যাচের বিদায় অনুষ্ঠান করা হয়। ঈদের ছুটির পর গত ২৬ এপ্রিল সহপাঠীদের সাথে আমি প্রবেশ পত্র আনতে স্কুলে গেলে জানতে পারি আমার প্রবেশ পত্র আসেনি। পরে আমাকে জানানো হয় আমার নাকি রেজিষ্ট্রেশনই হয়নি।
শাওনের বাবা প্রাণতুষ্ট মন্ডল বলেন, ছেলের মুখে ঘটনা শুনে আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ফোন দিলে তিনি আমাকে আশ্বাস দেন বিষয়টি সমাধান করার। কিন্তু পরদিন আবার আমি ফোন দিলে আমাকে জানান, এ বছর শাওনের পরীক্ষা দেয়া সম্ভব নয়। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আগামী বছর বিনা খরচে শাওনের পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দিবেন তিনি। দুঃখ প্রকাশ করে কি হবে। ওই স্যার কি আমার ছেলের জীবনের দুই বছর ফিরিয়ে দিতে পারবে।
শাওনরে মা সুবিতা মন্ডল বলেন, আমার ছেলে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। পরীক্ষার জন্য দিনভর পড়াশুনা করেছে। কিনেছিল নতুন জামা। ওর সব স্বপ্নই শেষ হয়ে গেল।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, নবম শ্রেণিতে যখন ছাত্র-ছাত্রীদের রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু হয় তখন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শাওন মন্ডল তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও রেজিষ্ট্রেশন ফি জমা দেয়নি। তাছাড়া সে নিয়মিত স্কুলেও আসতো না। চূড়ান্তভাবে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের তালিকা আসলে শাওন মন্ডলের নাম না থাকার বিষয়টি আমরা জানতে পারি। আমি বোর্ডে যোগাযোগ করেছিলাম, তবে এ বছর আর পরীক্ষা দিবার সুযোগ নেই। আগামী বছর শাওন পরীক্ষা দিতে পারবে। এর দায় দুই পক্ষেই রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহজালাল লিটন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি একবারেই অবগত নই। এখানে একটি ছেলের ভবিষ্যতের বিষয়। আগে জানালে আমি বোর্ডে কথা বলে রেজিষ্ট্রেশনের বিষয়ে চেষ্টা করতে পারতাম। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
এমএম/
আরও পড়ুন