ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

শিক্ষার্থীকে ‘জানোয়ার’ বললেন উপাচার্য, অডিও ভাইরাল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:১৪, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

হুট হাট করে বহিষ্কার, স্বেচ্ছাচারীতা ও দুর্নীতির কারনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের অপসারনের দাবিতে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গালি দিয়ে তাদেরকে ক্যাম্পাস থেকে লাথি মেরে বের করে দেওয়ার কথা বলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে। 

এর আগে গতকাল শনিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, উপাচার্য সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে তাদেরকে পিছু হঠাতে চেষ্টা করছেন। তবে উপাচার্যের অপসারণ বা পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার কথা বলছেন শিক্ষার্থীরা। 

জানা যায়, উপাচার্য খন্দকার নাসির উদ্দিন তার অফিস কক্ষে এক শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে ‘জানোয়ার’ বলে গালি দিয়েছেন বলে অডিও প্রকাশ পেয়েছে। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই অডিও ভাইরাল হয়ে যায়। ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসের জের ধরে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বকা-ঝকার একটি অডিও ছড়িয়ে পড়েছে। অডিওতে শোনা যায় ভিসি শিক্ষার্থীদের জানোয়ার বলে সম্বোধন করেন।

তিনি বলেন, ‘এই জানোয়ার তোর বাপ বিশ্ববিদ্যালয় চালায়? জানোয়ারের দল। লাথি দিয়া বের করে দিতে ইচ্ছে করে। তোর বাপেরে চালাইতে ক। দেখি কি চালায় তোর আব্বা। তোরা জানোয়ারের দল। কোনডারে ছাড়বো। এক্টার চেয়ে আরেকটা বেশি। তোরা চালা তাইলে বিশ্ববিদ্যালয়।’

বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি, নারী কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগে উপাচার্য খন্দকার নাসির উদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে গত বুধবার থেকেই আন্দোলন চালিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যেই শুক্রবার স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ হলেও শনিবার সকাল ১০টায় প্রশাসন জানায়,  ৩ আক্টোবর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এক ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে হবে। কিন্তু তারা এই সিদ্ধান্ত না মেনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। পরে আন্দোলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে হল থেকে বের হলে শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। এ ঘটনার প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবির।

রোববার খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আন্দোলনের মুখে ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্ত না মেনে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এখনও আমরণ অনশন করছেন শিক্ষার্থীরা। 

এদিকে শিক্ষার্থীদের মারধরের প্রতিবাদ ও উপাচার্য খন্দকার নাসির উদ্দিন আন্দোলকারীদের জানোয়ার বলায় তার কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেছে, জাহাঙ্গীরনগর ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

তবে উপাচার্য দাবি করছেন, এসব সরকার বিরোধীদের ষড়যন্ত্র। অভিযোগের ভিত্তি নেই।

উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর ফেইসবুকে স্ট্যাটাসের জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। বহিষ্কারের বিষয়ে দেশ ব্যাপি সমালোচনা হলে গত বুধবার সন্ধ্যায় তার বহিষ্কারাদেশ তুলে নেয় প্রশাসন। তবে বুধবার রাতেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

পরে বুধবার রাতেই ১৪টি সমস্যার সমাধান করার কথা উল্লেখ করে একটি বিজ্ঞপ্তিও দেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার কথা বলছেন।

জানা যায়, বিএনপি-জামায়াত রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা, নারী কেলেঙ্কারী, ভর্তি ও নিয়োগ দুর্নীতি, প্রকল্প দুর্নীতি, বাকস্বাধীনতা হরণ, শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারা, আবাসন সংকট, বৃক্ষরোপনসহ বিভিন্ন খাতের মাধ্যমে অর্থ লোপাট, গুন্ডাবাহিনী তৈরিসহ নানা বিষয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

এমএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি