শিল্পকলায় দেশের সর্ববৃহৎ নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব উদ্বোধন
প্রকাশিত : ২১:৩২, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯
‘চতুর্দশ জাতীয় শিশু-কিশোর নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব-২০১৯’ নামে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন’র যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শিশুদের অংশগ্রহণে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব। ৬৪ জেলার সাংস্কৃতিক দল এবং ৯৪টি শিশু নাট্য সংগঠনের দশ হাজারেরও বেশি শিশুর অংশগ্রহণে ২০-২৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এই উৎসব। উৎসবে ৯৪টি শিশু নাট্যদলের পরিবেশনা উপস্থাপিত হবে।
একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা, জাতীয় চিত্রশালা, জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তন ও একাডেমি প্রাঙ্গণসহ প্রতিদিন ৮টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে ৯টি জেলার ৮৫টি পরিবেশনা।
সারাদেশ থেকে আগত শিশু-কিশোর শিল্পীরা পরিবেশন করবেন নাটক, একক অভিনয়, স্কুল থিয়েটার, সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন এবং ৭ মার্চের ভাষণ। আগত শিশুদের জন্য থাকবে অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র কর্মশালা, নাট্য কর্মশালা, পাপেট থিয়েটার, ঐতিহ্যবাহী পুতুলনাট্য, পাপেট নির্মাণ কর্মশালা, যাদু প্রদর্শনী, বঙ্গবন্ধু পুষ্পকানন নির্মাণ, মঞ্চকুঁড়ি পদক, তনয় শিশু নাট্য পদক, শিশু আনন্দমেলা এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনা।
শিশুরাই জাতির আশা ও ভবিষ্যৎ। শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে শিশুরা পরিপূর্ণ মানুষরূপে গড়ে উঠতে পারে। আজকের শিশুরাই ২০৪১ এর উন্নত বাংলাদেশ গড়তে ভূমিকা পালন করবে। এই উৎসবের মাধ্যমে শিশু নেতৃত্ব গড়ে উঠবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি শিল্প সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষে নিয়মিত কাজ করে চলেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কর্মকাণ্ড ৬৪ জেলা থেকে ৪৯৩ উপজেলা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে।
পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন দীর্ঘদিন শিশুদের মননশীলতার বিকাশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। ইতোপূর্বে পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন সারাদেশে শিশুনাট্য কর্মশালা, জাতীয় শিশুনাট্য উৎসব ও ৭টি বিভাগে বিভাগীয় শিশুনাট্য উৎসব আয়োজন করেছে। ‘বিকশিত শিশু, আলোকিত আগামী’ এ প্রত্যয় নিয়ে পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন জন্মলগ্ন থেকেই সারাদেশে শিশুনাট্য আন্দোলন পরিচালনা করে আসছে।
পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন ও এর সহযোগী প্রায় ২৫০টি শিশু নাট্যদল সারাদেশে নাটক মঞ্চায়নসহ নিয়মিতভাবে নাট্যচর্চা করে আসছে। শুধু দেশে নয় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের শিশু নাটক এখন প্রায় সুপ্রতিষ্ঠিত। এক্ষেত্রে পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন এককভাবে ২৮ বছর ধরে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। এই সংগঠন ১৯৯৫ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ১৩টি ‘জাতীয় শিশু-কিশোর নাট্য উৎসব’, ১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শিশু-কিশোর নাট্যোৎসব’ ও ১টি ‘আন্তর্জাতিক শিশু-কিশোর নাট্যোৎসব’ আয়োজন করেছে। বিভিন্ন জেলায় পরিচালনা করেছে আঞ্চলিক শিশু নাট্য কর্মশালা এবং বিভাগীয় শিশু-কিশোর নাট্যোৎসব। এ যাবত প্রায় ৭০টি আন্তর্জাতিক শিশু নাট্যোৎসবে অংশগ্রহণ করেছে পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশনভুক্ত বিভিন্ন শিশু নাট্যদল। শিশুনাট্য কর্মকাণ্ডে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘শিশু নাট্য পদক’ ছাড়াও পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন মেধাবী শিশু-কিশোরদের জন্য ‘মঞ্চুকুঁড়ি’, ‘মঞ্চমুকুল’ ও ‘মঞ্চসেনা’ পদক প্রদান করছে। অধুনা সারাদেশে চলছে স্কুল পর্যায়ে শিশুনাট্য কর্মসূচি। শিশুদের জন্য শিশুদের অভিনীত নাটক ছাড়াও বিশ্বের উন্নত দেশসমূহের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশের শিশুদের জন্য বড়দের নাটক মঞ্চায়নের ধারাও তৈরী করেছে। এছাড়া কেবলমাত্র যুবক-যুবতীদের জন্য তাদের উপযোগী যুব নাট্যচর্চার একটি নতুন ধারা প্রবর্তন করেছে পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন।
উৎসবের বিস্তারিত তুলে ধরতে ১৮ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলণে উৎসবের বিস্তারিত তুলে ধরেন উৎসব আহ্বায়ক লিয়াকত আলী লাকী। সংবাদ সম্মেলণের শুরুতে উৎসব সংগীত পরিবেশন করেন একাডেমির শিশু সংগীত দল। এবং উপস্থিত ছিলেন একাডেমির সচিব বদরুল আনম ভুঁইয়া ও প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক সুশান্ত কামারসহ একাডেমির কর্মকর্তা কর্মচারী এবং পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ।
এনএস/
আরও পড়ুন