‘শিশুর জন্য বিনিয়োগ করি, সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ি’
প্রকাশিত : ১০:১৭, ৪ অক্টোবর ২০২১
শিশুরাই জাতির ভবিষ্যত। তারাই আগামী দিনে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব দেবে। জ্ঞানচর্চা ও প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ হয়ে গড়ে তুলবে সবার জন্য কল্যাণকর নতুন বিশ্ব। এ লক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবারও দেশে পালন করা হচ্ছে ‘বিশ্ব শিশু দিবস’। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার পালন করা হয় দিবসটি। সে হিসাবে ‘শিশুর জন্য বিনিয়োগ করি, সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ি’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে সোমবার (৪ অক্টোবর) সারাদেশে পালন করা হচ্ছে ‘বিশ্ব শিশু দিবস’। একইসঙ্গে শিশুর অধিকার, সুরক্ষা এবং শিশুর উন্নয়ন ও বিকাশে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও উদ্যোগী ও সচেতন করার লক্ষ্যে ৪ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত পালন করা হচ্ছে ‘শিশু অধিকার সপ্তাহ’।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, শিশু দিবস ও শিশু সপ্তাহ উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিবছরের মতো এ বছরও দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আলাদা আলাদা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, ইউনিসেফ, দেশি ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শিশুদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সচেতনতামূলক সভা, সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের নিয়ে আলোচনা সভা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ‘বিনিয়োগ হোক প্রারম্ভিক শৈশবেই’ শীর্ষক ওয়েবিনার এবং বাংলাদেশে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধে মতবিনিময় সভা।
বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে আরও আছে- শিশুদের উন্নয়ন, বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ, সুরক্ষা ও অধিকার বিষয়ে ক্যাম্পেইন, জাতীয় পর্যায়ে পলিসি ডায়ালগ সেশন, বিতর্ক প্রতিযোগিতা। আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় শিশুসংগঠক, শিশু বিশেষজ্ঞ, শিশু সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। এসব অনুষ্ঠান সরাসরি ও ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে প্রচার করা হবে।
বিশ্ব শিশু দিবসের অনুষ্ঠান ও টকশো বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশে বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচার করা হবে। প্রকাশ পাবে বিশেষ ক্রোড়পত্র ও স্মরণিকা, আয়োজন করা হবে আলোকচিত্র প্রদর্শনী। এছাড়া পোস্টার, পিভিসি ও ফেস্টুন-ব্যানার স্থাপনের মাধ্যমে বিভিন্ন ভবন ও ঢাকার প্রধান প্রধান সড়কদ্বীপ সাজিয়ে তোলা হবে। দেশের সব জেলা ও উপজেলায় বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উদযাপন করা হবে।
বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উদযাপনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে থাকছে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় উন্নয়ন সংস্থার মধ্যে রয়েছে ইউনিসেফ, শিশু অধিকার ফোরাম, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম, বাংলাদেশ ইসিডি নেটওয়ার্ক, এসওএস চিলড্রেন ভিলেজ, ওয়ার্ল্ড ভিশন, সেভ দ্য চিলড্রেন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, জাগো ফাউন্ডেশন, সিআইপিআরবি, ব্র্যাক, ডন ফোরাম, এডুকো বাংলাদেশ, শাপলানীড়, টিডিএইচ নেদারল্যান্ডস, জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামসহ বিভিন্ন শিশু সংগঠন ও সংস্থা।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের জন্য সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করেন। জাতিসংঘ ১৯৮৯ সালে শিশু অধিকার সনদ ঘোষণার ১৫ বৎসর আগে ১৯৭৪ সালে তিনি শিশুদের অধিকার সুরক্ষার জন্য শিশু আইনও প্রণয়ন করেছিলেন। সদ্য স্বাধীন দেশে শিশুর শিক্ষা, সুরক্ষা ও উন্নয়নে নিয়েছিলেন কল্যাণকর বিভিন্ন পদক্ষেপ। সেই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের শিক্ষা, পুষ্টি, সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন আইন, নীতি ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এসএ/