ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪

শীতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ

মাজহারুল ইসলাম শামীম

প্রকাশিত : ১৪:৩০, ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ | আপডেট: ১৪:৩৩, ২৫ জানুয়ারি ২০২৩

সাগরের নীল জলরাশি দেখতে কার না ভালো লাগবে। শীতল বাতাস, নীলজল, আশপাশের পাহাড়, পায়ের নিচে চিকচিক করা বালু- এসবই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে একটা দৃশ্য আকারে ফুটে ওঠে। সবচেয়ে দীর্ঘ এই সমুদ্র সৈকতের মনোরম দৃশ্য মনে মহূর্তে প্রশান্তি এনে দেয়।
 
ইতিহাস অনুসারে, কক্সবাজারের প্রাচীন নাম ছিলো 'পালংকি'। আবার একসময় এটি 'প্যানোয়া' নামে পরিচিত ছিল, যার অর্থ ‘হলুদ ফুল'। অতীতে কক্সবাজারের আশপাশের এলাকা ছিল হলুদ ফুলের সমারোহে ভরপুর। ব্রিটিশ আমলে সমুদ্র ও জঙ্গলে ঘেরা পালংকিতে আশ্রিত লোকজনকে পুনর্বাসনের জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সকে নিয়োগ দেয়। ক্যাপ্টেন কক্স পালংকি এলাকায় একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করেন, যা কক্স সাহেবের বাজার নামে পরিচিতি পায়। পরে সেখান থেকেই 'কক্সবাজার' নামের উৎপত্তি। হারিয়ে যায় আদি নাম পালংকি।

অনেকের ধারণা, কক্সবাজারে যাওয়ার পর সমুদ্রে পা ভেজানো ও বিচে সামুদ্রিক মাছ খাওয়া ছাড়া আর কি বা করা যেতে পারে। বিকেলে একটু হাঁটাহাটি ও রাতে সমুদ্রের গর্জনের সাথে চারপাশের পরিবেশ উপভোগ করা, এইতো।  কিন্তু এখন কক্সবাজারে পর্যটকদের জন্য রয়েছে নানা বিনোদনের ব্যবস্থা। তারই কিছু তুলে ধরা হলো-

ক্যারাভানে মেরিন ড্রাইভ ভ্রমণ

এখন মেরিন ড্রাইভ ঘুরতে পারবেন টুরিস্ট ক্যারাভানে। পরিবার–পরিজন নিয়ে এক পাশে পাহাড়ের সৌন্দর্য এবং আরেক পাশে সাগরের বিশালতার সাথে মেরিন ড্রাইভ ঘোরার অভিজ্ঞতা আপনাকে এনে দিবে স্বর্গীয় সুখ। মেরিন ড্রাইভ ধরে ঘুরতে ঘুরতে মজার সব খাবার খাওয়া এবং সেই সঙ্গে খোলা ছাদে বই নিয়ে সমুদ্রের ঠিক পাশ দিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে এর আগে হয়নি। দোতলা ২০ জন ধারণক্ষমতার এই টুরিস্ট ক্যারাভানে আছে ছোট লাইব্রেরি, ওয়াশরুম এবং তিন বেলা খাবার ও চা-কফির ব্যবস্থা। 

শুধু মেরিন ড্রাইভই না, কক্সবাজারের মূল স্থানগুলো ঘুরতে চাইলেও আপনি ঘুরতে পারবেন এই ক্যারাভানে। কক্সবাজারে মন ভালো করে দেয়ার মতো এই ক্যারাভান ভ্রমণ আপনার চেক লিস্টে রাখতেই পারেন।

প্যারাসেইলিং

প্যারাসেইলিংয়ের মাধ্যমে পাখির মতো আকাশ থেকে পাহাড় ও সমুদ্র দেখার জন্য কক্সবাজার অন্যতম। পাখির চোখে যেকোনো কিছু দেখতেই নৈসর্গিক লাগে। রংধনুর মতো সাতরঙে রঙিন এ মানব ঘুড়িতে চড়ে উড়ে বেড়াতে চাইলে আসতে হবে হিমছড়ির দরিয়ানগর সমুদ্র সৈকতে। 

 

রেজু খালে কায়াকিং

কক্সবাজারের পাশেই রেজু খালে কায়াকিংয়ের সুব্যবস্থা রয়েছে। যা এখনো অনেকেই জানেন না। তাই সাগরপাড়ে ঘুরতে গিয়ে যদি ভিন্ন ধরনের কিছু করতে ইচ্ছা করে তবে রেজু খালে করতে পারেন কায়াকিং। একা কিংবা বন্ধুদের নিয়ে শান্ত সেই পরিবেশে কায়াকিংয়ের অভিজ্ঞতাটা কক্সবাজার ভ্রমণে আপনার মনে আলাদা জায়গা করে নিতে বাধ্য! 

যেভাবে যাবেন

বাংলাদেশের প্রায় সকল জায়গা থেকে এখন সরাসরি কক্সবাজার আসার ব্যবস্থা রয়েছে। ঢাকা থেকে এসি ও নন-এসি বিভিন্ন বাসে সরাসরি কক্সবাজার যাওয়া যায়। টিকিটের দাম নন-এসি বাসে জনপ্রতি ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকা, এসি বাসে ১৮০০ থেকে ২৫০০ টাকা হতে পারে। 

এছাড়া বিমানে গেলে জনপ্রতি ভাড়া সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজারের মধ্যে। 

কক্সবাজার শহর থেকে হিমছড়িতে যাবার জনপ্রিয় বাহন 'চাঁদের গাড়ি', এছাড়াও সিএনজি ও অটোরিকশাযোগে যেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আসা-যাওয়া মিলিয়ে খরচ পড়বে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা।

কোথায় থাকবেন

কক্সবাজার রাত্রিযাপন করার হোটেলের কোনো সংকট নেই। যদিও ছুটির দিনে একটু সমস্যা হয় অতিরিক্ত মানুষ ভ্রমণ করায়। তা না হলে বিভিন্ন মানের অসংখ্য হোটেল রয়েছে কক্সবাজার। 

লেখক: শিক্ষার্থী, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ফেনী সরকারি কলেজ।


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি