ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

শুভ মহালয়া

পার্থ প্রতীম ভট্টাচার্য

প্রকাশিত : ১৬:১৪, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

Ekushey Television Ltd.

শুভ মহালয়া।
মহালয়া মানেই দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে মর্তে আবাহন, মন্দিরে ঘট প্রতিষ্ঠা, শঙ্খের ধ্বনি ও চন্ডীপাঠ।
কিন্তু এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এ বছর মহালয়াতে সূচনা হচ্ছে না দেবীপক্ষের। সেই অর্থে নেই দুর্গাপূজোর ক্ষণগণনাও। বাতাসে এখনও পূজোর গন্ধ আসেনি কিংবা আসেনি সেই পরিচিত পরিবেশ যা মনে করিয়ে দেয় মিলন উৎসবের দিন দোরগোড়ায়।

শিউলি ফুল ফুটেছে, সাথে কাশও। কিন্তু আকাশে সেই তুলো তুলো মেঘ, ভোর বেলায় হালকা শীত শীত ভাব, ঘাসের আগায় শিশির এসব কিছুই আসেনি এখনও। 

আকাশবানীতে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে... ‘আশ্বিনের শারদ প্রাতে/বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জির/ধরনীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা/প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত/জ্যোতির্ময়ী জগতমাতার আগমন বার্তা...’ সম্প্রচার হয়েছে, কিন্তু আশ্বিন আসতে বাকি আরো একদিন।

করোনার কারণে এবার গঙ্গার ঘাটে ছিল না ভোরবেলার অতিপরিচিত সেই পিতৃতর্পনের দূশ্য, বন্ধ ছিল দক্ষিণেশ্বরের দরজাও। 

শাস্ত্রমতে এবার আশ্বিন মাসে দুটো অমাবস্যা তাই এটা মলমাস। মলমাসে মাঙ্গলিক কাজ নিষিদ্ধ সুতরাং মা পূজিত হবেন কার্তিকে।

এছাড়াও প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী দেবশয়নী একাদশীর দিন থেকে চতুর্মাসের জন্য ভগবান বিষ্ণু পাতাললোকে নিদ্রা যান। এ সময় সমস্ত ধরনের মাঙ্গলিক কাজ নিষিদ্ধ থাকে। ১ জুলাই ছিল দেবশয়নী একাদশী।

ধর্মীয় ব্যাখ্যা বাদ দিয়ে বরং মজা করে বলি, করোনাময় পৃথিবীতে মা এবার তাঁর সন্তানদের নিয়ম মেনেই কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। তাই হয়তো এই দেরী!

একটু মজাতে কেউ কষ্ট পাবেন না নিশ্চয়। হিন্দু ধর্মের সৌন্দর্যটা এখানেই যে অল্পে আমাদের ধর্মীয় অনুভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হয় না। 

বাঙ্গালি হিন্দুরা দেবী দুর্গাকে যেমন নিজের ঘরের মেয়ের মতো ভাবতে ভালবাসে, আবার তাঁকে দেবীর আসনে বসিয়ে পূজোও করে।

দুঃখের দিনে যখন অভিমান করবার তাগিদ পড়েছিল, তখন রামপ্রসাদ মাকে খাড়া করে বলেছিলেন, তোমাকে মা বলে আর ডাকব না। এতদিন ডেকে যা ফল হয়েছিল, না ডেকেও ফল তার চেয়ে বেশি হবে না।

জগজ্জননী মার কাছে আমরা সব আবেগ, অনুভূতি, অভিযোগ প্রকাশ করতে পারি, তাঁর উপর অভিমানও করা যায়। 

দুর্গতিনাশিনী মায়ের কাছে এবারের প্রার্থনা জরাগ্রস্ত আমাদের দুর্গতি তিনি নাশ করুন, সমৃদ্ধিতে ভরিয়ে দিন মর্ত্যভূমি। মায়ের দোলায় আগমনের ফল তো পাচ্ছিই। 

তবে নিজগৃহে দেবী ফিরবেন গজে। শাস্ত্রে তো আছেই, ‘গজে চ জলদা দেবী শস্যপূর্ণ বসুন্ধরা।’
শুভকামনা সবার জন্য

লেখক: সাংবাদিক

এমবি//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি