ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

শেকড়-ঐতিহ্যের সন্ধানে ‘ঢাকা কেন্দ্র’ (ভিডিও)

মিনালা দিবা, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৩৬, ১৯ নভেম্বর ২০২২

লঞ্চঘাট, নাট্যমঞ্চ, গানের দল, পাঠাগারে সমৃদ্ধ পুরান ঢাকার প্রাচীনতম এলাকাগুলো একসময় ছিল এক একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। সবসময়ই থাকতো উৎসবমুখর পরিবেশ। এই প্রজন্মের মাঝে সেই ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিচর্চা জাগিয়ে রাখতে ঢাকা কেন্দ্র গড়েছেন ইতিহাসপ্রেমি আজম বখশ। 

পুরান ঢাকার মোহিনী মোহন দাস লেনে নজরকাড়া এই স্থাপনা ঢাকা কেন্দ্র। 

সংগ্রহশালাটির আলাদা আলাদা গ্যালারিতে রয়েছে বনেদি পরিবারগুলোর দুর্লভ সব ছবি, পানের কৌটা, রান্নার তৈজস, হুক্কা, শাড়ি-কাপড়সহ লবণদানি। 

বাদ যায়নি পুরান ঢাকাবাসীর ব্যবহার্য সামগ্রী, ছবি, ঐতিহাসিক দলিল, মানচিত্র, বুড়িগঙ্গার পাড়ে পত্তন হওয়া আদি নগরের বর্ণিল স্মৃতিচিহ্নও।

রয়েছে দেড়শ’ বছর আগের সংস্কৃত এবং বাংলায় হাতে লেখা দলিল, ঢাকায় প্রথম স্থাপিত মোটর সারাই কারখানার যন্ত্রাংশ, প্রাচীন মানচিত্র, কলের গান, পুরোনো ভবনের ইট-নকশা। 

ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আজিম বখ্‌শ বলেন, “আমাদের কাছে পেপার কিলিপিংয়ের মোটা ভলিউমের ৫০ খণ্ড আছে। পুরনো ছবি, পুরনো বই, বনেদি ৩৩টি পরিবারের কালেকশন আছে।”

দুই দশক ধরে অজস্র পাঠক ও গবেষকের প্রয়োজন মিটিয়ে চলেছে ঢাকার ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে লেখা সাত হাজার বই সমৃদ্ধ পাঠাগারটি।

শিক্ষার্থীরা জানান, “ ঢাকার কালচার, আরবান ফোক কালচার- সবকিছু মিলে এখানকার সংগ্রহই যথেষ্ট। এখানে সবকিছু একসাথে আছে এটা আমাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”

লেখক ও গবেষক মুহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, “ঢাকার গবেষণার ক্ষেত্রে প্রথম প্রতিবন্ধকতা হলো অপ্রতুল বই, অপ্রতুল তথ্য। সেটা অনেকটাংশে ঢাকা কেন্দ্র আমাদের সরবরাহ করছে।”

দশনার্থীদের ভিড়ে জমজমাট কেন্দ্রটি। বিদেশিদের পদচারণাও চোখে পড়ার মতো। 

বিদেশিরা বলছেন, “ঢাকার বনেদী পরিবারের ইতহাস আমরা বুঝতে পারছি। উনিশ শতকের পারিবারিক ভিত্তি ও মর্যাদা আমরা জানতে পারছি। সর্বোপুরি সুন্দর।”

ঢাকা কেন্দ্রের সমন্বয়ক মনিরুজ্জামান মোল্লা বলেন, “ঢাকা কেন্দ্রে রয়েছে একটি লাইব্রেরি, প্রদর্শনী কক্ষ, ৫০টি গ্যালারি, পারিবারি গ্যারারি এবং একটি মিউজিয়াম। বাইরে তিনটি কর্নার রয়েছে।”

শেকড়কে ধরে রাখতে কেন্দ্রটি যদি কারও সামান্য উপকারে আসে, সেটাই সার্থকতা বলেও মনে করেন চেয়ারম্যান।

আজিম বখ্‌শ বলেন, “ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জিনিসগুলো খুঁজে খুঁজে এনে মানুষকে জানানোটাই মূল উদ্দেশ্য। এখানে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের কোনো সাহায্য নেই। আমাদের পারিবারিক ট্রাস্ট থেকে এটা চলে।”

সেই গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হয়তো নেই কিন্তু এই প্রজন্ম চাইলে শেকড়ের কথা, ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরতে পারে অনায়াসেই। দায়িত্ব শুধু ব্যক্তি পর্যায়ে নয়, সরকারেরও। প্রত্যেকটি নাগরিকের সচেতনতা এবং প্রবল ইচ্ছার সাথে নিজের অস্তিত্বের ধারক-বাহককে রক্ষা করতে চাইলে তবেই ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ধরা রাখা যাবে স্বমহিমায়।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি