শেখ হাসিনা : জোয়ান অব আর্ক

বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ৭১তম জন্মদিন আজ। এ উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ: শেখ হাসিনা-দ্য মর্ডান ডে জোয়ান অব আর্ক’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করে শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ান। আনোয়ার এ. খান এ নিবন্ধটি লিখেন।

এই নিবন্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিশুকাল, রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা, বহু চড়াই-উতরাই, শিক্ষাজীবন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াবহ কালরাত্রি পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তার রাজনৈতিক জীবনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

নিবন্ধে শেখ হাসিনাকে তুলনা করা হয়েছে ফরাসী বীরকন্যা জোয়ান অব আর্কের সঙ্গে। পূর্ব ফ্রান্সের একটি দরিদ্র কৃষক পরিবারে জোয়ান অব আর্কের জন্ম। ফ্রান্স তখন ইংরেজ শাসনাধীন। ইংল্যান্ডের রাজা ষষ্ঠ হেনরি সিংহাসন দখল করলে ফ্রান্সের রাজা সপ্তম চার্লস পালিয়ে যান। এরকমই রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জোয়ান বেড়ে উঠছিলেন।

মাত্র ১৭ বছর বয়সে ফরাসী সেনাবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধ করে জয় এনেছিলেন তিনি। ফ্রান্স ফিরে পায় তাদের বেহাত হয়ে যাওয়া ভূমি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশও এগিয়ে চলছে উন্নয়নের পথে।

চার দশকের বেশি সময় ধরে চলছে তার রাজনৈতিক জীবন। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ এবং ১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তিনি বিরোধীদলীয় নেত্রী এবং ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮১ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তিনি।

২০০৮ সালে বিপুল ভোটে জয়ের মাধ্যমে দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তার হাত ধরে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এই প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আনোয়ার এ খানের লেখা একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে শ্রীলঙ্কান সংবাদমাধ্যম শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ান।

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারীদের মধ্যে ৩৬তম অবস্থানে আছেন শেখ হাসিনা। ২০১৬ সালে প্রভাবশালী সাময়িক ফোর্বসের করা জরিপ অনুযায়ী বিশ্বের শীর্ষ ১০০ ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় ৩৬তম অবস্থান দখল করেন তিনি।

বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা জানিয়েছিলেন, তার বাবার রাজনৈতিক জীবনের কারণে তিনি ভয়ের মধ্যে বেড়ে উঠেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাকে স্কুলে যেতে দেয়া হতো না। কারণ একটি কাঠের সেতু পাড়ি দিয়ে স্কুলে যেতে হতো। তিনি অনেক বেশি আতঙ্কিত ছিলেন। আমি যদি কাঠের সেতু থেকে পড়ে যাই; তাহলে নদীতে পড়ে যাব।’

২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে দেশজুড়ে ব্যাপক ভাঙচুর চলে। সেই সময় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আনোয়ার এ খান লিখেছেন, ওই সময় আমরা শেখ হাসিনার অনুরোধ যথাযথভাবে পালনের আহ্বান জানাই। ধ্বংসাত্মক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয় সবাইকে। কারণ দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনা বিশ্রামহীন কাজ করে যাচ্ছেন।

অনেক বিদেশি পর্যবেক্ষক শেখ হাসিনার উন্নয়নমূলক কাজের প্রশংসা করে তাকে আধুনিক যুগের জোয়ান অব আর্ক হিসেবে তুলনা করেছেন। তাকে গণমানুষের প্রতীক হিসেবে বলা যেতে পারে।