‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা উন্নত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছি’
প্রকাশিত : ২৩:৪৮, ২৭ মার্চ ২০২২
বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন কর্তৃক আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রফেসর ড. মো. সেলিম উদ্দিন, এফসিএ, এফসিএমএ। তিনি বলেন,‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর দর্শন বাস্তবায়নে আমরা উন্নত সমৃদ্ধির পথে যাচ্ছি’।
ড. সেলিম তাঁর বক্তব্যের শুরুতে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী স্বাধীনতার মহান ঘোষক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, তিনি আরো স্বরণ করেন ৩০ লক্ষ শহীদ ও লক্ষ লক্ষ মা বোনদের, যাদের আত্মত্যাগ ও সম্ভ্রম এর বিনিময়ে আমাদের এই স্বাধীনতা। স্বাধীনতার মূল অর্থ হলো অধীনতা বা পরাধীনতা থেকে মুক্তি। আত্মউন্নয়নের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে নিজেকে বিকশিত করার সুযোগ লাভ। প্রতিটি স্বাধীনতা দিবস আমাদের জীবনের নতুন সম্ভাবনা।
তিনি বলেন, বাংলা, বাঙ্গালি ও বঙ্গবন্ধু একই বৃত্তে তিনিটি চেতনার ফুল। তিনি বাংলার মানুষকে দিয়েছেন একটি স্বাধীন ভূখন্ড, একটি পতাকা, একটি মানচিত্র, জাতীয় সংগীত, সংবিধান ও বিশ্বের বুকে গর্বিত পরিচয়।
জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য অপরীসিম। এ দিনটি বাঙ্গালীর জীবনে বয়ে আনে আনন্দ বেদনার অম্ল মধুর অনুভূতি। একদিকে হারানোর কষ্ট অন্যদিকে প্রাপ্তি ও আনন্দ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস একটি ঐতিহাসিক ও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এই দিনটির গুরুত্ব অপরীসীম। মুজিব জন্মশতবর্ষ, মুজিববর্ষ, স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীতে আজকের দিনটি নব প্রত্যয় ও শপথ গ্রহণের দিন।
ড. সেলিম বলেন বঙ্গবন্ধুর দর্শন ছিল ক্ষুদামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, শোষণহীন, বৈষম্যহীন সন্ত্রাসমুক্ত, জঙ্গীমুক্ত সোনার বাংলা। শেখ হাসিনার বিস্ময়কর উন্নয়ন, স্বপ্ন ও তাঁর বাস্তবায়নের উল্লেখযোগ্য বিস্ময়কর ০৫ টি বিস্ময়কর ঘটনা সারা পৃথিবীকে নাড়া দিয়েছে: ১) পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন ২) ১১ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় ৩) যুদ্ধাপরাধিদের বিচার ৪) ডিজিটাল বাংলাদেশ ৫) কোভিড-১৯ কে সফলভাবে মোকাবিলা।
বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণতা অর্জন করেছে। পাট রপ্তানীতে-১ম, ইলিশ রপ্তানীতে-১ম, তৈরি পোষাক রপ্তানীতে-২য়, মিঠা পানির মাছ রপ্তানীতে-২য়, চাল ও সবজি উৎপাদনে-৩য়, চাল উৎপাদনে-৪র্থ ও আলু উৎপাদনে-৭ম অবস্থানে বাংলাদেশ।
আমরা সবাই জানি-স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের অর্থনীতি ছিল সংকটাপন্ন, দেশে কৃষি ছিল অচল, শিল্প কারখানা বন্ধ ছিল, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অবকাঠামো বিধ্বস্ত, ব্যাংকগুলো অর্থশূন্য, বৈদিশিক মুদ্রার তহবিল খালি, রাষ্ট্রযন্ত্র অকেজো, এক কোটি শরণার্থী,পারিবারিক অর্থনীতি ধ্বংস ও সম্বলহীন মানুষকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, প্রত্যয় ও দর্শনকে কাজে লাগিয়ে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা বিশ্বের মানচিত্রে সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ নামক দেশটি বহুল আলোচিত নামে প্রতিষ্ঠিত করেছে। দক্ষ জনশক্তি, যুগোপযুগী অবকাঠামো, প্রত্যন্ত অঞ্চল জোড়ে তথ্য প্রযুক্তির বিস্তারসহ শিল্প বাণিজ্যের উত্তরোত্তর উন্নয়ন বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করেছে এক সীমাহীন সম্ভাবনার ক্ষেত্র হিসেবে।
২০২১ সালের জাতীয় বাজেটের আকার ৬ লক্ষ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা যা ২০০৬ সালে ছিল ৬১ হাজার ছয় কোটি টাকা, জিডিপি বৃদ্ধি ২০২১ সালে ৫.০২ শতাংশ যা ২০০৬ সালে ছিল ৫.০৪ শতাংশ। জিডিপির আকার ২০২১ সালে ৩৫ লক্ষ ৩৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা যা ২০০৬ সালে ছিল ৪ কোটি ৮২ লক্ষ ৩৩৭ কোটি। বর্তমানে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৫৫৪ মার্কিন ডলার যা ২০০৬ সালে ছিল ৫৪৩ ডলার। ২০২১ সালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আয় ৪৮.০৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা ২০০৬ সালে ছিল ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তৈরী পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়।
বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন কর্তৃক আয়োজিত “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্বে এবং সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের উন্নয়ন” শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম।
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিচালনা পর্ষদের সদস্য তপন কুমার ঘোষ এবং ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন ড. নাছিমা আকতার।
এছাড়াও বিএইচবিএফসি’র উপব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাকগণ, উপ-মহাব্যবস্থাকগণ, সকল জোনাল, রিজিওনাল ও শাখা ম্যনেজারসহ কর্পোরেশনের সকল স্তরের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
কেআই//
আরও পড়ুন