শেষ ম্যাচেও বড় হারের লজ্জা পেল বাংলাদেশ
প্রকাশিত : ২১:০২, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ০৯:২৭, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ঘরে মাঠে ফের বড় ব্যবধানে হারের তোতো স্বাদ পেলে টাইগাররা। ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ভাগ থেকে দিশা হারানো বাংলাদেশ শেষে এসেও কক্ষপথে ফিরতে পারেনি। প্রথমে টাইগারদের এলোমেলো ব্যাটিং পরে দিশে হারা ব্যাটিং দেখলো বাংলাদেশি ক্রিকেট প্রেমিরা।
রবিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১০ রানের পাহাড় গড়ে লঙ্কানরা।
গুনাথিলাকা ও কুশাল মেন্ডিস উদ্বোধনী জুটির ওপর ভর করে দুর্দান্ত শুরু করেন লঙ্কানরা। উদ্বোধনী জুটিতে ৯৮ রান সংগ্রহ করেন তারা।
নিয়মিত বোলাররা যখন কোনো উইকেটের দেখা পাচ্ছিলেন না তখন পার্টটাইম বোলার হিসেবে সৌম্য সরকারকে আমন্ত্রণ জানান মাহমুদউল্লাহ। বোল হাতে লঙ্কানদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন তিনি। সৌম্যের বলে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরেন গুনাথিলাকা। ৩৭ বলে ৪২ রান করে আউট হন তিনি।
১৫.৩ ওভারে দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পান অভিষিক্ত পেসার আবু জায়েদ। তার বোলে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হন থিসারা পেরেরা। আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে ৩১ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলে যান তিনি।
অার ১৬.৩তম ওভারে এসে উইকেটের দেখা পান বাংলাদেশের পেস সেনসেশন মুস্তাফিজুর রহমান। মুস্তাফিজের স্লোয়ারে মেহেদী হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে কুশাল মেন্ডিস। প্যাভিলিয়নের ফেরার আগে ৪২ বলে ৭০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন লঙ্কান এই ওপেনার।
১৯.৪ ওভারে এসে উইকেটের দেখা পান সাইফ উদ্দিন। সৌম্যের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হওয়ার আগে ১৩ বলে ২৫ রান করেন উপল থারাঙ্গা। আর ১১ বলে ৩০ রানে দুসান শানাকা এবং ১ বলে ২ রানে দিনেশ চান্দিমাল অপরাজিত থাকেন।
খেলার শুরু দিকে দুই বার সফলতার হাতছানি থাকলেও কাজে লাগাতে পারেননি ফিল্ডাররা। নাজমুল ইসলাম অপুকে ছক্কা হাঁকিয়ে পরের বলে ফিরে যেতে পারতেন দানুশকা গুনাথিলাকা। দারুণ চেষ্টা করেও তার ক্যাচ মুঠোয় নিতে পারেন তামিম ইকবাল।
বাঁহাতি স্পিনার নাজমুলের বলে ড্রাইভ মাটিতে রাখতে পারেননি গুনাথিলাকা। মিড অফে ঝাঁপিয়ে চেষ্টা করেছিলেন তামিম। কিন্তু হাত থেকে ছুটে যায় ক্যাচ। সে সময় ১৫ রানে ছিলেন গুনাথিলাকা।
আর মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের স্লোয়ার বল ঠিক মতো খেলতে পারেননি গুনাথিলাকা। লাফিয়ে দুই হাতে চেষ্টা করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু ক্যাচ নিতে পারেননি। সে সময় ২৮ রানে ছিলেন গুনাথিলাকা। এর আগে ১৫ রানে তামিম ইকবালের হাতে জীবন পেয়েছিলেন তিনি।
২১১ রানের জয়ের লক্ষ্য ব্যাট করতে নেমে ২২ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ৮ রানের মাথায় শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেন সৌম্য সরকার। আর ব্যক্তিগত ৬ ও ৫ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন যথাক্রমে মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন।
এরপর ব্যাটে ঝড় তোলার আভাস দিচ্ছিলেন তামিম ইকবাল। তবে আশা জাগিয়েও খুব বেশিদূর এগোতে পারেননি দেশসেরা এই ওপেনার। ২২ বলে ২৯ রান করে অভিষিক্ত আমিলা আপোনসোর ঘূর্ণিতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তামিম। আরিফুল হকও প্রাপ্ত সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ৩ বলে মাত্র ২ রান করে জীবন মেন্ডিসের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি।
সতীর্থরা আসছেন আর যাচ্ছেন। এমন অবস্থায় অধিনায়ক হিসেবে গুরুদায়িত্ব পালনের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে খেলতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউটের শিকার হয়েছেন টাইগার দলপতি।
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের শট বোলার ইসুরু উদানার হাতে লেগে চলে যায ফিল্ডার মেন্ডিসের হাতে। এর মধ্যে উইকেট থেকে অনেকটা বেরিয়ে এসেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। মেন্ডিসের কাছ থেকে বল পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই স্ট্যাম্প ভেঙে দেন উদানা।
৩১ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ৪১ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। ওই ওভারেই সাইফউদ্দিনও আউট হয়ে যান ২০ রান করে। স্বভাবতই লোয়ার অর্ডারের বাকি ব্যাটসম্যানদের পক্ষে এরপর আর এত বড় লক্ষ্যের কাছে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ২১০/৪ (গুনাথিলাকা ৪২, মেন্ডিস ৭০, থিসারা ৩১, থারাঙ্গা ২৫, শানাকা ৩১*, চান্দিমাল ২*; জায়েদ ১/৪৫, নাজমুল ০/২৮, মেহেদি ০/২৫, মুস্তাফিজ ১/৩৯, সাইফ ১/৪৬, সৌম্য ১/২৫)
বাংলাদেশ: ১৮.৪ ওভারে ১৩৫ (তামিম ২৯, সৌম্য ০, মুশফিক ৬, মিঠুন ৫, মাহমুদউল্লাহ ৪১, আরিফুল ২, সাইফ ২০, মেহেদি ১১, মুস্তাফিজ ৮, জায়েদ ২, নাজমুল ১*; মাদুশাঙ্কা ২/২৩, দনঞ্জয়া ১/২০, শানাকা ১/৫, থিসারা ০/৩৩, আপনসো ১/৩১, জিবন ১/৮, উদানা ১/১২, গুনাথিলাকা ২/৩)
ফল: শ্রীলঙ্কা ৭৫ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজে ২-০তে জয়ী শ্রীলঙ্কা
টিকে