শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদুল আজহার ১৯৭তম জামাত অনুষ্ঠিত
প্রকাশিত : ১২:২৩, ১৭ জুন ২০২৪
উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়ায় এবারও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদুল আজহার বড় জামাত। এটি ঈদুল আজহার ১৯৭তম জামাত।
সোমবার সকাল ৯টায় শুরু হয় ঈদের জামাত। জামাতে ইমামতি করেন মার্কায মসজিদের ইমাম হিফজুর রহমান খান।
রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে মুসল্লিদের সংকেত দিতে শর্টগানের ৬টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। ৩টি গুলি করা হয় জামাত শুরুর ১৫ মিনিটি আগে, ২টি ১০ মিনিট আগে এবং শেষটি জামাত শুরুর ১ মিনিট আগে ছোড়া হয়।
২০১৬ সালে জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। স্থানীয় লোকজনও জামাতের প্রস্তুতি ও নিরাপত্তার আয়োজন দেখে খুশি। নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে মাঠে আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করতে হয় মুসল্লিদের।
জামাতের সময় মাঠ ও আশপাশে মোতায়েন করা হয় পাঁচ প্লাটুন বিজিবিসহ পুলিশ, র্যাব ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের। পাশাপাশি মাঠে সাদাপোশাকে নজরদারি করে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। এছাড়াও পুরো ঈদগাহ মাঠ থাকে সিসি ক্যামেরার আওতায়। ড্রোন ও ভিডিও ক্যামেরা দিয়ে গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে অস্থায়ীভাবে তৈরি করা হয় ওয়াচ টাওয়ার।
এছাড়াও দূর-দূরান্তের মুসুল্লিদের যাতায়াতের জন্য ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে রেল কর্তৃপক্ষ। মুসুল্লিদের নিয়ে একটি ট্রেন সকাল ৬টায় ভৈরব থেকে আরেকটি ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ আসে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বহুসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক এবং কয়েকটি মেডিক্যাল টিমও।
তাছাড়া মুসল্লিদের জন্য খাবার পানি ও আপ্যায়নের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলেও জানা যায়।
জনশ্রুতি রয়েছে, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি এক সাথে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’। যা এখন শোলাকিয়া নামেই পরিচিত।
ইতিহাস সূত্রে জানা গেছে, ১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদের বড় জামাত অনুষ্ঠিত হলেও এর যাত্রা শুরু হয় ১৭৫০ সালে। এ হিসাবে শোলাকিয়া মাঠের আড়াইশ’ বছরেরও বেশি সময়ের ঐতিহ্য রয়েছে। মসনদ-ই-আলা ঈশাখাঁর ৬ষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খানের উত্তরসূরী দেওয়ান মান্নান দাদ খান ১৯৫০ সালে ৪.৩৫ একর ভূমি শোলাকিয়া ঈদগাহকে ওয়াকফ করে দেন।
দেওয়ান সাহেবের মা মাহমুদা আয়শা খাতুনের অসিয়ত মোতাবেক এ ওয়াকফনামা সম্পাদিত হয়। পরবর্তী সময়ে অন্যান্য সূত্রে প্রাপ্ত জমি মিলে বর্তমানে এ জায়গার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ একর। যা আগত মুসল্লিদের মাত্র অর্ধেকের বেশি ধারণ করতে পারে।
এএইচ
আরও পড়ুন