শোলাকিয়ায় ছয় লাখ মানুষের ঈদের নামাজ
প্রকাশিত : ১৩:৪০, ৩১ মার্চ ২০২৫

এক মাস সিয়াম সাধনার পর, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে দেশ ও উপমহাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় ৬ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে এ বছরের জামাতটি অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ঐতিহাসিক হয়ে উঠেছে। সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ১০টায় শুরু হওয়া জামাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো মুসল্লি যোগ দেন।
ঈদের জামাতে অংশ নিতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ কিশোরগঞ্জে আসেন। ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দুটি বিশেষ ট্রেন সকালে মুসল্লিদের নিয়ে কিশোরগঞ্জে পৌঁছায়। সকাল ৯টার মধ্যে ঈদগাহ ময়দান জনসমুদ্রে পরিণত হয়ে যায়। দীর্ঘ ১৫ বছর পর জামাতে ইমামতি করেন কিশোরগঞ্জ শহরের বড় বাজার মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। বিকল্প ইমাম হিসেবে ছিলেন মাওলানা জুবায়ের ইবনে আব্দুল হাই।
শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পুলিশের ড্রোন, সিসিটিভি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার এবং অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়। নিরাপত্তা রক্ষায় সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিজিবি-এর মোট ৫টি প্লাটুন মোতায়েন করা হয়। মাঠে বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক এবং মেডিকেল টিমও দায়িত্ব পালন করে।
শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান ২৭৪ বছরের ইতিহাস ধারণ করে। ১৭৫০ সালে এর যাত্রা শুরু হলেও, ১৮২৮ সালে আনুমানিক সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। এরপর থেকে এ ঈদগাহ ময়দানটি দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত আয়োজনে পরিচিত হয়ে ওঠে।
এই বছর শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ১৯৮তম জামাত অনুষ্ঠিত হলো। নামাজের পর মুসল্লিরা বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহর কল্যাণের জন্য মোনাজাত করেন। প্রতিবারের মতো, জামাত শুরুর আগে ছয়টি শর্টগানের ফাঁকা গুলি দিয়ে মুসল্লিদের সংকেত দেওয়া হয়।
২০১৬ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় চারজন নিহত এবং ১৬ মুসল্লি আহত হন। তবে, সেসময়ও ঈদগাহ ময়দানের জামাত আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে, যদিও করোনা অতিমারির কারণে দুই বছর এখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি।
এ বছর, শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে জামাত শেষে মুসল্লিরা শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফিরতে সক্ষম হয়েছেন। প্রশাসন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায়, ঈদের জামাত সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
এমবি//
আরও পড়ুন