ঢাকা, শনিবার   ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে চিটাগাংকে হারিয়ে বিপিএল চ্যাম্পিয়ন বরিশাল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:১১, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | আপডেট: ০০:৫৬, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আবারও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল)  শিরোপা জিতলো  ফরচুন বরিশাল। শ্বাসরূদ্ধকর ফাইনালে চিটাগাং কিংসকে ৩ উইকেটের ব্যবধানে টানা দ্বিতীয়বারের মত এ টুর্নামেন্টের শিরোপা ঘরে তুললো তামিম ইকবালের বরিশাল।  অন্যদিকে, ২০১৩ সালের পর আবারও বিপিএলে প্রত্যাবর্তন করে চিটাগাং কিংস। দীর্ঘ ১২ বছর পর ফিরেই ফাইনালে জায়গা করে নেয় বন্দর নগরীর দলটি। তবে শিরোপা ছোঁয়া হলো না চিটাগাংয়ের। জমজমাট ফাইনালে বরিশালের কাছে ৩ উইকেটে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করেছে তারা। 

শিরোপানির্ধারণী ম্যাচটিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ উইকেটে ১৯৪ রান সংগ্রহ করে চিটাগাং। লক্ষ্য তাড়ায় অধিনায়ক তামিম ঝোড়ো শুরু এনে দেন। তবে জয়ের জন্য শেষ ৩ ওভারে ২৫ রান দরকার ছিল বরিশালের, হাতে ৬ উইকেট। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার কাইল মায়ার্স এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ উইকেটে থাকায় জয়টা একরকম হাতের মুঠোয়ই ছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। তবে ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে এসে সমীকরণ একেবারে পাল্টে দেন শরিফুল ইসলাম। ওই ওভারে মায়ার্স এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে আউট করার পাশাপাশি পাঁচ রান দিয়ে চিটাগংকে ম্যাচে ফেরান শরিফুল।

১৯তম ওভারের প্রথম ৩ বলে কেবল ৩ রান নিতে পারে বরিশাল। উইকেটে তখন মোহাম্মদ নবি ও রিশাদ হোসেন। দুজনই উইকেটে একদম নতুন। সবদিক বিবেচনায় ম্যাচটা তখন অনেকটাই হেলে পড়েছিল চিটাগংয়ের দিকে।   
 
তবে পরের গল্পটা পুরোটাই রিশাদের বীরত্বের। ১৯তম ওভারের চতুর্থ বলে দুর্দান্ত এক ছক্কা মেরে চাপ সরিয়ে বরিশালকে আবার চালকের আসনে বসান এই বোলিং অলরাউন্ডার। মিস ফিল্ডিংয়ের সুবাদে পরের বলে নেন ৩ রান। বরিশালের তখন দরকার ৭ বলে ৮ রান। তবে এই সহজ সমীকরণকে আবারও কঠিন করে তোলেন মোহাম্মদ নবি, ১৯ তম ওভারের শেষ বলে আউট হয়ে। 
 
শেষ ওভারে স্বীকৃত ব্যাটার বলতে উইকেটে ছিলেন কেবল রিশাদ। অন্যপ্রান্তে থাকা তানভীর ইসলাম কোনোমতে ব্যাট চালাতে পারেন। দলকে জেতাতে হলে রিশাদকেই কিছু করতে হতো। আর চাপের মুহূর্তে সেটা করেও দেখালেন তিনি। ৮ রানের সমীকরণে প্রথম বলেই দুর্দান্ত এক ছক্কা মেরে জয় অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেন এই অলরাউন্ডার। ১৯ ওভার ৩ বলে জয় নিশ্চিত করে বরিশাল।
 
মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে বিপিএলের একাদশ আসরের ফাইনাল ম্যাচে চিটাগং কিংসকে ৩ উইকেটে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জিতেছে তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল। 
 
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ঝড় তোলেন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে ওপর প্রান্তে তাওহীদ হৃদয় ছিলেন একটু সাবধানী। পাওয়ারপ্লেতে দুজনে মিলে ৫৭ রান তুলে দারুণ শুরু এনে দেন বরিশালকে।
 
দারুণ শুরুর পর নবম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বরিশাল। একই ওভারে তামিম ইকবাল এবং ডেভিড মালানকে ফিরিয়ে শরিফুল ইসলাম একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন। দ্রুত সময়ের ব্যবধানে ফেরেন তাওহীদ হৃদয়ও। ২৮ বলে ৩২ রান করেছেন তিনি। আর ১ ছক্কা ও ৯ চারে ২৯ বলে ৫৪ রান করেছেন তামিম।
 
দ্রুত ৩ উইকেট হারালেও বরিশালের ছন্দপতন হয়নি। মিডল অর্ডারে হাল ধরেন কাইল মায়ার্স। ৩ ছক্কা ও ৩ চারে ২৮ বলে ৪৬ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান এই অলরাউন্ডার দলকে জয়ের পথেই রাখেন। তবে ১৮তম ওভারে ২ উইকেট নিয়ে আবারও বরিশালকে বিপদে ফেলেন শরিফুল। 
 
চাপের মুহূর্তে হাল ধরতে পারেননি অভিজ্ঞ নবিও। রিশাদ হোসেনের ৬ বলে ১৮ রানের অসাধারণ ইনিংসে জয় নিশ্চিত করে বরিশাল। 
 
চিটাগংয়ের হয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন শরিফুল। দুই উইকেট নিয়েছেন নাইম ইসলাম এবং আরেকটি উইকেট গেছে বিনুরা ফার্নান্দোর ঝুলিতে। 

এর আগে, টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটিতে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে চিটাগং কিংস। ওপেনিং জুটিতে ১২.৪ ওভারে ১২১ রান তোলে তারা। ওই জুটির ওপর ভিত্তি করে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান করে মোহাম্মদ মিঠুনের দল। জবাবে বরিশালও ওপেনিং জুটিতে ৮.১ ওভারে ৭৬ রান যোগ করে। তামিম ও হৃদয়ের দেওয়া ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে কাইল মায়ার্স ও রিশাদ হোসেন বরিশালকে জয় এনে দিয়েছেন।

চিটাগং কিংসের হয়ে ২২ বছর বয়সী পাকিস্তানি ওপেনার খাজা নাফি ৪৪ বলে ৬৬ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন। টুর্নামেন্টের তৃতীয় ফিফটির পথে তার ব্যাট থেকে সাতটি চারের সঙ্গে তিনটি ছক্কার শট আসে। বিপিএলের শুরুতে ব্যাট হাতে ভালো করতে না পেরে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের তোপে পড়া ওপেনার পারভেজ ইমন ৪৯ বলে হার না মানা ৭৮ রানের ইনিংস খেলেন। তিনি ছয়টি চার ও চারটি ছক্কা হাঁকান। এছাড়া গ্রাহাম ক্লার্কের ব্যাট থেকে ২৩ বলে ৪৪ রান আসে। তিনটি ছক্কা ও দুটি চার মারেন তিনি।


এমবি//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি