শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় চিরনিদ্রায় শায়িত বৈমানিক জাওয়াদ
প্রকাশিত : ১৬:১৯, ১০ মে ২০২৪
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারানো স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদকে মানিকগঞ্জ শহরের সেওতা কবরস্থানে চিরসমাহিত করা হয়েছে। শুক্রবার (১০ মে) বিকেল ৩টার দিকে ‘সোর্ড অব অনার’ সম্মাননাপ্রাপ্ত জাওয়াদকে ‘গার্ড অব অনার’ দিয়ে দাফন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন তার বাবা ডা. মো. আমান উল্লাহসহ আত্মীয়-স্বজন এবং বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাসহ হাজারো মানুষ।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে জাওয়াদের মরদেহ বহনকারী বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার মানিকগঞ্জ শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে পৌঁছায়। হেলিকপ্টার থেকে তার মরদেহের কফিন কাঁধে করে নামিয়ে আনেন জাওয়াদের সহকর্মী বিমান বাহিনীর সদস্যরা। ছেলের মরদেহবাহী কফিন দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা নীলুফা আক্তার খানমসহ তার স্বজনরা। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুলসংখ্যক মানুষ। জুমার নামাজের পর ওই স্টেডিয়াম মাঠে জাওয়াদের তৃতীয় জানাজার নামাজ সম্পন্ন হয়। সেখান থেকে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সেওতা কবরস্থানে।
তারও আগে ঢাকায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বাশার প্যারেড গ্রাউন্ডে বৈমানিক জাওয়াদের ‘ফিউনারেল প্যারেড’ এবং দ্বিতীয় জানাজার নামাজ সম্পন্ন হয়। সেখানে তার মরদেহে দেওয়া হয় ‘গার্ড অব অনার’।
বৈমানিক জাওয়াদের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয় চট্টগ্রামের বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হকের প্যারেড গ্রাউন্ডে।
গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের অদূরে কর্ণফুলী নদীতে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারান স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ।
এ বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হক থেকে উড্ডয়নের পর প্রশিক্ষণ শেষে ফেরার সময় কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। দুর্ঘটনার পর বৈমানিকদ্বয় উইং কমান্ডার মো. সোহান হাসান খাঁন এবং স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ জরুরি প্যারাসুট দিয়ে বিমান থেকে নদীতে অবতরণ করেন। দুইজন বৈমানিককে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী দল এবং স্থানীয় জেলেদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত চিকিৎসার জন্য বিএনএস পতেঙ্গাতে নেওয়া হয়। চিকিৎসক সর্বাত্মক প্রচেষ্টার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আইএসপিআর থেকে বলা হয়, বিমানটিতে আগুন ধরে যাওয়ার পর বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে বৈমানিকদ্বয় অত্যন্ত সাহসিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে সেটিকে বিমানবন্দরের নিকট ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় (নদীতে) নিয়ে যেতে সক্ষম হন।
কেআই//
আরও পড়ুন