সংগীতের মেধাস্বত্ব নিয়ে দিনব্যাপী আলোচনা
প্রকাশিত : ০০:১৩, ৫ জুন ২০২৪
বাংলাদেশে সংগীত প্রণেতাদের মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ, মেধাস্বত্বের বিপরীতে রয়্যালটি আদায় ও বিতরণ বিষয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত বাংলাদেশের একমাত্র সিএমও হিসেবে বাংলাদেশ লিরিসিস্ট, কম্পোজার্স এন্ড পারফর্মারস সোসাইটি (বিএলসিপিএস) বিগত ২০১৩ সাল থেকে কাজ করে আসছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস ও বিএলসিপিএস যৌথভাবে একটি দিনব্যাপী মেন্টরশীপ প্রোগ্রাম আয়োজন করে।
‘কপিরাইট ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত সংস্থাসমূহের পরিচালনার নিমিত্তে ওয়াইপো মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম’ শীর্ষক এই মেন্টরশিপ প্রোগ্রামে WIPO (ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অর্গানাইজেশন), CISAC (বিশ্বব্যাপী সিএমওগুলোর আন্তর্জাতিক কনফেডারেশন) এবং IPRS (ইন্ডিয়ান পারফর্মিং রাইট সোসাইটি)-এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান করেন।
সকাল ১০টায় অনুষ্ঠানের সূচনা হয় বিএলসিপিএস, WIPO এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যথাক্রমে হামিন আহমেদ, সিইও, বিএলসিপিএস, এরপর Ms. Miyuki (মিয়ুকি ) Monroing, Program Officer, Copyright Management Division, Copyright and Creative Industries Sector, WIPO, মি. বেনজামিন এনজি, রিজিওনাল ডিরেক্টর ফর এশিয়া প্যাসিফিক, সিআইএসএসি এবং নাফরিজা শ্যামা, অতিরিক্ত সচিব, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে। এরপর কপিরাইট রেজিস্ট্রার মো. দাউদ মিয়া, এনডিসি (অতি. সচিব) কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
উদ্বোধনের পর আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনের পর পর্যায়ক্রমে মোট পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম সেশনের বিষয় ছিল-স্থানীয় সিএমও’র প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য কালেকটিভ ম্যানেজমেন্ট এবং নতুন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে WIPO-এর কার্যক্রম। সেশনটি পরিচালনা করেন Ms Miyuki Monroing, Program Officer, Copyright Management Division, Copyright and Creative Industries Sector, WIPO.
দ্বিতীয় সেশনে ‘বিশ্বজুড়ে সংগীত প্রণেতাদের নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রতিনিধিত্ব করা এবং কার্যকরভাবে সংগীত প্রণেতাদের কাছে রয়্যালটি প্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য CISAC এর ভূমিকা এবং উদ্যোগসমূহ’-এই বিষয়ের উপর আলোচনা করেন Mr Benjamin Ng, Regional Director for Asia-Pacific CISAC.
মধ্যাহ্ন বিরতির পর অনুষ্ঠিত দিনের তৃতীয় সেশনের বিষয় ছিল-‘সংগীত প্রণেতা এবং সংগীতের শ্রোতা/ভোক্তাদের জন্য একটি সৃজনশীল ইকোসিস্টেম তৈরিতে স্থানীয় সিএমওগুলোর ভূমিকা : সিএমওগুলো আপনার প্রতি কী অবদান রাখতে পারে?’ এই প্রসঙ্গে আলোচনা করেন যথাক্রমে Mr. Satoshi Watanabe, CISAC Mr. Rakesh Nigam, Chief Executive Officer, IPRS এবং Mr. Surhit Bhattacharyya, Chief Information Officer, IPRS.
‘বাংলাদেশে কপিরাইট এবং রিলেটেড রাইটসের বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যতে সংগীত প্রণেতা এবং সৃজনশীল শিল্পকে সমর্থন করার জন্য যে সকল সহযোগিতা দিতে পারে’- এই বিষয়ের উপর দিনের চতুর্থ সেশনটি পরিচালনা করেন মো. দাউদ মিয়া, বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার। দিনের শেষ সেশনে বিএলসিপিএস’র বর্তমান কার্যক্রমের অবস্থা এবং ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন এর সিইও হামিন আহমেদ।
তিনি অনুষ্ঠান শেষে বলেন, বাংলাদেশের গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীদের সিএমও হিসেবে বিএলসিপিএস (বাংলাদেশ লিরিসিস্ট, কমপোজার অ্যান্ড পারফরমার্স সোসাইটি) সরকারি অনুমোদন পায় ২০১৪ সালে। দেশের গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীদের কপিরাইটসহ অন্যান্য স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য কাজ করছে। পশ্চিমা দেশগুলোতে এ ধরনের উদ্যোগ অনেক সফলতা পেয়েছে। আর এর বিকল্প নেই। বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫৩ বছর কেটে যাওয়ার পরও মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ এবং রয়্যালটি আদায়ের বিষয়টি ছিল হযবরল। এই কারণে বাংলাদেশের গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীদের জন্য সিএমও হিসেবে কাজ করছে। আর বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিতে এই ধরনের সুবিধা নেওয়ার সিস্টেম দ্বিতীয়টি নেই।
অনুষ্ঠানে নকীব খান, শহীদ মাহমুদ জঙ্গি, শেখ মনিরুল ইসলাম টিপু (ওয়ারফেজ), মাকসুদুল হক, শওকত আলী ইমন, অর্ণব, বালাম, আলিফ আলাউদ্দিন, জয় শাহরিয়ার, রাহুল আনন্দ (জলের গান), প্রীতম হাসান, গীতিকার সুরকার প্রিন্স মাহমুদ, অ্যাসেজ ব্যান্ডের জুনায়েদ ইভানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
কেআই//