সংশোধিত নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইনের খসড়া প্রস্তুত
প্রকাশিত : ২১:৪৫, ১২ মার্চ ২০২৫

ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে যেভাবে মোরাল পুলিশিং বা নারীদের হেনস্তা করা হচ্ছে তা, সরকার তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না বলে সতর্ক করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, এসব ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
বুধবার (১২ মার্চ) সচিবালয়ে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় কমিয়ে অর্ধেক করতে সংশোধিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। এসব ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের প্রতিনিধি দলের সবাইকে জানানো হয়ে। আইনের সংশোধন দ্রুত উপদেষ্টা পরিষদে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, আমরা গত সোমবার এবং গতকাল মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে পরামর্শ সভা করেছি। আমার একটা খসড়া (সংশোধিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন) আইন করেছি, সেটি আজ আমরা সার্কুলেট করছি কিছু কিছু স্টেক হোল্ডারদের কাছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা আইনটি কঠোর করার চেষ্টা করবো। ধর্ষণের মামলার বিচার যাতে শুধু দ্রুত না, বিচারটা যাতে নিশ্চিত হয় এবং যথাযথ হয়- আমি এগুলো তাদের বলেছি।
বুধবার মঞ্চের পক্ষে ২৫ জনের প্রতিনিধি দল যান সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টার কাছে। এক মাসের মধ্যে সেই শিশু ধর্ষণের বিচার কার্যক্রম শেষ করা, স্বরাষ্ট্র, আইন এবং নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টাকে ব্যর্থতা স্বীকার করে জবাবদিহি করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানান তারা।
প্রতিনিধি দলের সব দাবি যৌক্তিক উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, নারী নির্যাতনের সাথে জড়িতদের কোন ছাড় দেয়া হবে না। তিনি বলেন, বিচারক যদি মনে করেন তবে ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই মেডিকেল সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে মামলার বিচার ও তদন্তকাজ চালাতে পারবেন- আইনে এমন বিধান রাখা হচ্ছে।
আসিফ নজরুল বলেন, বিজয় পরবর্তী সময়ে আমাদের দেশে মেয়েদের আক্রমণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন গোষ্ঠী থেকে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়েও তাদের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি।
ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের সঙ্গে বৈঠকের বিষয় তিনি বলেন, আজ তারা আমাকে যেসব কথা বলেছেন, আসলে আমার নিজেরও মনের কথা। মনের খুব দুঃখ-কষ্ট, এছাড়া সরকারের কাছে যে প্রত্যাশা সেটাও তারা তুলে ধরেছেন। আমি মনে করি তাদের প্রতিটি দাবি যৌক্তিক।
তারা বলেছেন মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় যাতে সর্বোচ্চ দ্রুততার সঙ্গে বিচার নিশ্চিত করা হয়। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি, মাগুরার ঘটনায় আসামি যারা আছে পুলিশ এরই মধ্যে তাদের ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করেছে গতকাল। এর বিচারকার্য কোনো ধরনের কাল বিলম্ব না করে দ্রুত এবং ন্যায় বিচার যাতে করা হয়, সেজন্য আমাদের একটা নজরদারি থাকবে সেটা তাদের বলেছি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, তারা বলেছেন ধর্ষণ সংক্রান্ত সব মামলার ক্ষেত্রে যাতে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আমরা বলেছি সাধ্যমতো চেষ্টা করব।
আসিফ নজরুল বলেন, তারা ধর্ষণের মামলার বিচার করার জন্য একটা স্পেশাল কোর্টের কথা বলেছেন। ধর্ষণের এখন বিচার হয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে। তবে সেখানে ধর্ষণের মামলা ছাড়াও আরও অনেক অপরাধের বিচার হয়। তাই সেখানে ব্যাকলক হয়ে থাকে, মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে বিলম্ব হয়। আমি তাদের কথা শুনেছি যৌক্তিকতা আছে এটা স্বীকার করেছি। আমার একার সিদ্ধান্তে তো হবে না। উপদেষ্টা পরিষদের আলোচনায় আমি বিষয়টি তুলবো, যথাসাধ্য চেষ্টা করবো এ ব্যাপারটি এক্সপ্লোর করে, করা যায় কি না। করা গেলে যত দ্রুত সম্ভব করা হবে।
এসএস//
আরও পড়ুন