সততার গ্রাম
প্রকাশিত : ১৪:৫২, ৩ অক্টোবর ২০১৮
চারদিকে পাহাড় আর পাহাড়। সবুজ পাহাড়ের কোল ঘেঁষে সরু রাস্তার দু ধারে ৩০০ লোকের বাস। পশ্চিম রোমানিয়ার একটি শান্ত, নিবিড় ও মনোরম পরিবেশের এবেন্থাল গ্রামের কথাই বলছি।
ছোট এ গ্রামটিতে মানুষ কম থাকার কারণ হলো যারা একটু শিক্ষিত বা অর্থের দিকে ছুটতে পছন্দ করে, তারা শহরে চলে যান। আর যারা থাকে তারা গ্রামটির মায়ায় পড়ে থাকে। তবে এখানে অধিকাংশই বয়োজ্যেষ্ঠ। জাতিগত দিক থেকে তারা চেক।
জেনে অবাক হবেন, ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী এই মানুষগুলো অত্যন্ত সৎ। গত ২০ বছরের বেশি সময় জুড়ে এই গ্রামে কোনও চুরি বা বড় ধরনের কলহ হয়নি।
এই গ্রামটিতে অস্বচ্ছলতা থাকলেও এদের কোনও কিছুর জন্য চুরির মনোভাব নিতে হয় না। যদি কিছুর প্রয়োজন হয়, তাহলে তারা একে অপরের কাছে চেয়ে নেন। এছাড়া যথেষ্ট শিষ্টাচার সম্পন্ন এই মানুষগুলোর কেউ কারও বাড়ির সীমানায় অনুমতি ছাড়া কখনই প্রবেশ করে না।
এ গ্রামের মানুষদের পছন্দের খাবার পাউরুটি। কিন্তু শহর থেকে অনেক দূরে গ্রামটি বলে প্রতিদিন গাড়ি আসতে পারে না। প্রতি দুই দিন পর পর পাউরুটির গাড়ি আসে। তাই গ্রামের মানুষ যখন কাজে চলে যায়, তখন তাদের মানিব্যাগে নির্ধারিত টাকা রেখে যান।
এদের মধ্যে কেউ আবার বড় নোট রেখে যায় আর একটি চিরকুটে কতোগুলো পাউরুটি প্রয়োজন তা উল্লেখ করে রঙিন ব্যাগে বাড়ির দরজায় কখনও আবার বাড়ির সামনে গেটে ঝুলিয়ে রেখে যান। নিয়ম অনুযায়ী, রুটির গাড়ি সময় মতো এসে প্রত্যেক বাড়ির সামনে ঝুলানো ব্যাগ থেকে চিরকুট পরে যে কয়টা রুটির দরকার হয় তা রেখে যান। শুধু তাই নয়, অনেক সময় টাকার বড় নোট থাকলে তা ভাঙ্গিয়ে ঠিক পরিমাণ টাকার হিসাব করে রেখে যান। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি যার দ্বারা গ্রামবাসীর মাঝে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে।
একে//