‘সন্ত্রাসী ও ধ্বংসাত্মক পথ বেছে নিলে প্রতিরোধ করা হবে’
প্রকাশিত : ১৬:২৯, ১৮ এপ্রিল ২০২২ | আপডেট: ১৬:৪১, ১৮ এপ্রিল ২০২২
আন্দোলনের নামে বিএনপি যদি আবারও সন্ত্রাসী ও ধ্বংসাত্মক পথ বেছে নেয় তাহলে জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী বিএনপি এদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ দ্বারা বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে এবং ভয়াবহ পরিণতির সম্মুখীন হয়েছে। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হওয়া ও আন্দোলনের নামে বিএনপি যদি আবারও সন্ত্রাসী ও ধ্বংসাত্মক পথ বেছে নেয় তাহলে জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলার মাধ্যমে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।’
সোমবার (১৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতেই এই বক্তব্য প্রদান করা হয়।
অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিএনপিকে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভাবের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, তার এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে আবারও বিএনপির শক্তিহীনতা, দুর্বলতা, অক্ষমতা ও দৈন্যতার নির্মম বর্হিপ্রকাশ ঘটেছে। প্রকারন্তরে বিএনপি মহাসচিব স্বীকার করেছে যে, কার্যত বিএনপি একটি শক্তিহীন ও অন্তসারশূন্য রাজনৈতিক দল।
তিনি বলেন, একই সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শক্তিশালী বিরোধী দলের অনুপস্থিতির যে কথা বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সেটাই প্রতীয়মান হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতি অনুযায়ী বিরোধী দলের শক্তিমত্তা প্রতিষ্ঠিত করার স্থান হলো মহান জাতীয় সংসদ। সে অর্থে বিরোধী দলকে ছায়া সরকার হিসেবেও অভিহিত করা হয়। সেজন্য যে কোনো রাজনৈতিক দলকে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন প্রাপ্তি নিশ্চিত করা আবশ্যক। যদি বিএনপি নেতাদের প্রশ্ন করি, বর্তমানে জাতীয় সংসদে তাদের আসন সংখ্যা কত? আর সেটা দিয়ে তারা কতটুকু শক্তিশালী বিরোধী দল হতে পেরেছে তা জাতির সামনে প্রমাণিত।’
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন ব্যতীত জাতীয় সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দল হয়ে ওঠা কোনোভাবেই বিএনপির পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কী ধ্বংসাত্মক এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে অগ্নিসন্ত্রাসের মতো ন্যাক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত শক্তি প্রদর্শনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বিএনপি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের সচেতন জনগণ মনে করে, বিএনপির এই দূরভিসন্ধিমূলক ঘোষণার নেপথ্যে দেশবিরোধী গভীর কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে। অবশ্য অতীত ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বিএনপি নেতাদের ‘অতি অল্প সময়’-এর কোনো সীমা রেখা নেই! তাই বিএনপির হাক-ডাক হুমকি-ধামকিতে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলামের দ্বিচারিতার কারণ হলো তারা জনকল্যাণে কখনো কোনো রাজনীতি করেন না। যে কোনো উপায়ে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করা তাদের রাজনীতির একমাত্র লক্ষ্য। নিজেদের স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদী আদর্শের নিকৃষ্ট ইতিহাসকে আড়াল করতে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্যই বিএনপি নেতৃবৃন্দ বারবার এই চিত্তাকর্ষক পরিভাষাকে ব্যবহার করে। বিএনপি তার দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসী নেতৃত্বের স্বার্থ চরিতার্থে জনগণের স্বার্থকে ঢাল হিসেবে সামনে নিয়ে আসে। মূলত বিএনপি অন্তরে ফ্যাসিবাদী আর মুখে গণতন্ত্রী।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিকশিত মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্ভাসিত। তাই দেশে যখনই কোনো ফ্যাসিবাদী শাসন জেঁকে বসতে চেয়েছে তখনই জনগণ গণআন্দোলন গড়ে তুলেছে। আর সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে গণমানুষের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ফ্যাসিবাদী বিএনপি রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফ্রেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে যখন ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চেয়েছিল তখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জনগণের দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলে; একইভাবে স্বৈরচারী বিএনপি ২০০৬ সালে ক্ষমতাকে জবর দখল করতে যখন নীল নকশার নির্বাচনের আয়োজন করে তখনও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাংলার জনগণ।
এসি
আরও পড়ুন