ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

সন্ত্রাসী বাহিনীর নির্যাতনে বাড়ি ছাড়ার অভিযোগ ব্যাংক কর্মকর্তার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৫৩, ২ অক্টোবর ২০২২ | আপডেট: ১৯:০১, ২ অক্টোবর ২০২২

হত্যা, নারী নির্যাতন, ভূমিদস্যুতা ও চাঁদাবাজিসহ ডজনখানেক মামলার আসামি কাউন্সিলর আতিকুর রহমান মোর্শেদ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর বিচার এবং জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলার বিশ্বাস বেতকা এলাকার ভুক্তভোগী ব্যাংক কর্মকর্তা মৌসুমী মাহমুদা।

রোববার (২ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘মোর্শেদ এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনী রাফসান, বাপ্পি, কটু, রনি, হৃদয়, দিপ্ত গ্যাং এর আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা টাঙ্গাইলের গোপালপুর-ভূঞাপুর আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনির। এই কথা তারা প্রকাশ্যে বলে বেড়ায়। এমপি ছোট মনিরের ক্যাডার এই রাফসানের নামে নারী নির্যাতন, হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা চলমান রয়েছে।’

লিখিত বক্তব্যে মৌসুমী মাহমুদা জানান, গত ২০২১ সালের ১২ জুন টাঙ্গাইল জেলা প্রেসক্লাবে ভূমিদস্যু ও চাঁদাবাজ-খুনি মোর্শেদের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট সন্ত্রাসী মোর্শেদকে দুইটি বিদেশি আগ্নোয়াস্ত্র, দুইটি ম্যাগজিন ও কয়েক রাউন্ড গুলিসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। ইয়াবা ব্যবসায়ী রাফসান, বাপ্পি, টুন্ডা রনি, পাঠা রনি, কিশোর গ্যাং দীপ্ত, কটুসহ আরো অনেক কিশোর গ্যাং সদস্যদের অপকর্মের খরচও সে চালায় এবং তাদেরকে দিয়ে বেআইনি কাজ করায়।

মোর্শেদের নামে আমি ২০২০ সালে চাঁদাবাজির মামলা করি (মামলা নং-২৮০/২০)। চার্জশিট দাখিল হওয়ায় মামলার চার্জ গঠনের জন্য গত ২০ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল আদালত আদেশ দেয়। এই আদেশের পরই সন্ত্রাসীরা ৫টি মোটর সাইকেলে তাদের পিছু নেয় এবং টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামের পাশের পুকুরপাড় রোডে কিশোরগ্যাং সন্ত্রাসী রাফসান, বাপ্পি, কটু, রনি, হৃদয়, দিপ্তসহ অজ্ঞাত আরো ১৪/১৫ জন সন্ত্রাসী তাদের রিক্সা আটকে চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, হেমার, লোহার পাইপ ও তরবারি দিয়ে হামলা চালায়। তাদের কুপিয়ে গুরুতর আহত করে সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করা হলে পুলিশ  ‘ডেংগু রিদয় ও দিপ্ত’ নামের ২ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে। এই দুই আসামি আদালাতে স্বীকারোক্তিও দিয়েছে। বাকিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও অজানা কারণে তাদের পুলিশ গ্রেফতার করছে না।

তিনি জানান, মোর্শেদসহ সন্ত্রাসীরা আমার জায়গা জোর করে দখল করে নেয়ার জন্য নানাভাবে চেস্টা করে যাচ্ছে। তাদের অত্যাচারে জায়গা বিক্রি করে দিতে চাইলেও কেউ ভয়ে কিনতে চাইছে না।

তিনি আরও জানান, এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা তার টাঙ্গাইলের বাড়িতে গিয়ে হাতুরি, দা, রড দিয়ে তাকে ও তার মাকে রক্তাক্ত করে। তার মাথায় হাতুরির আঘাতে ছয়টি সেলাই দিতে হয়। তার মাকে কুপিয়ে তার হাতের দুইটি আঙ্গুল কেটে ফেলে। এই ঘটনায় থানায় মামলা গ্রহণ না করায় তিনি আদালতে মামলা করেন (মামলা নম্বর-২২২, ১০/০২/২৯২২ ইং)। মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে থাকলেও অজানা কারণে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। সন্ত্রাসী মোর্শেদের একাধিক স্ত্রী থাকলেও সে জোরপূর্বক পিংকি নামের এক নারীকে বিয়ে করে ও হত্যা করে। পিংকির লাশটাও পাওয়া যায় নি। পিংকি হত্যার বিচার চেয়ে পিংকির বাবা ২০২১ সালে মোর্শেদসহ ৮ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি ৭ নম্বর প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষ্যি হওয়ায় তাকে হত্যা করতে চাইছে।

লিখিত বক্তব্যে এই ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, কিছুদিন আগেও টাঙ্গাইল পৌর এলাকার বাসিন্দা শাহিনুর ইসলাম ঠান্ডু এমপি ছোট মনিরের বিরুদ্ধে তার পৈত্রিক বাড়ী দখল ও সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেন। বর্তমানে সন্ত্রাসী রাফসান হুমকি দিয়ে বলছে, এক খুন করলেও ফাঁসি, দশ খুন করলেও ফাঁসি, জেলে যখন যামু তোগো সবগুলারে মাইরা তারপর যামু। একাধিকবার তারা আমার উপর হামলা চালিয়েছে। তারা যেকোন সময় আমাকে ও আমার মাকে হত্যা করতে পারে। মোর্শেদের বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যা ছাড়াও, আওয়ামীলীগ নেতা শামীম-মামুন, শফি, তুহিন, রেজা হত্যার অভিযোগে মামলা চলমান রয়েছে। মোর্শেদসহ সন্ত্রাসীদের মদদদাতা এমপি তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনিরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে টাঙ্গাইলের নিরীহ মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে।

টাঙ্গাইন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। দ্রুত তাদের আইনের আওতায় এনে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানান তিনি।

এসি
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি