সবার কাছে গ্রহণযোগ্য বানানরীতি প্রণয়নের তাগিদ (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১২:১৭, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১
ভাষা আন্দোলনের ৬৯ বছরেও একেক গণমাধ্যম একেক ধরনের বানান রীতি অনুসরণ করছে। কেউ কেউ আবার নিজস্ব বানান রীতি তৈরি করে নিয়েছে। অন্যদিকে, সম্প্রচার মাধ্যমগুলোতে সংকট আছে প্রমিত বাংলা উচ্চারণে। এ অবস্থায় সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি বানানরীতি প্রণয়নের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। সেই সাথে স্কুল থেকেই প্রমিত উচ্চারণ শেখানোরও পরামর্শ তাদের।
ভাষা আন্দোলনের ৬৯ বছর। মায়ের ভাষার জন্য একমাত্র বাঙালিই প্রাণ দিয়েছে। সেই বাংলা আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
ভাষা সংগ্রামের ৬৯ বছরে এসেও বাংলা পত্রপত্রিকায় একেক রকম বানান। একসময় পত্রিকাগুলো সাধু রীতি অনুসরণ করলেও এখন চলিতরূপে প্রকাশ হচ্ছে। বানান রীতি অভিন্ন নয়। কোনো কোনো পত্রিকা আবার নিজেদের মতো করে বানান রীতি তৈরি করে নিয়েছে।
শুধু তাই নয় সম্প্রচার মাধ্যমগুলোতেও আছে সংকট। একেক শব্দ একেক রকমভাবে উচারণ করা হচ্ছে।
এজন্য এতোদিনেও বিশুদ্ধ বাংলা ব্যাকরণ বই না থাকা এবং স্কুলগুলোতে উচ্চারণ না শেখানোকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, একেকজন খেয়াল-খুশি মতো বানান রীতি অনুসরণ করবে সেটা আমাদের পছন্দের নয় এবং এটি সঠিকও নয়। যে ভাষার জন্য মানুষ রক্ত দিয়েছে সেই ভাষার এই পরিণতি আর যাই হোক আমাদের কাম্য হতে পারে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ইংরেজি ভাষা বা অন্য ১০টি বিদেশি ভাষার ব্যাপারে যতোটা গুরুত্ব সহকারে শেখাই আমাদের ছেলেমেয়েদেরকে, বাংলা ভাষাকে বরং তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে শেখানো দরকার। কারণ বাংলা আমাদের রাষ্ট্রভাষা, বাংলা আমাদের মাতৃভাষা।
সংকট থেকে উত্তরণে শিগগিরই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি বানান রীতি প্রণয়নের পরামর্শ তাদের। তারা বলছেন, অনেকেই গণমাধ্যম থেকে বানান শেখে। তাই গণমাধ্যমে প্রচারিত ভুল শব্দ বা বাক্য বাঞ্ছনীয় নয়।
আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আছে তারা কোথা থেকে ভাষা শেখে, মূলত তারা গণমাধ্যম থেকে শেখে। উচ্চারণটা শেখে, তারা বানানটা শেখে। গণমাধ্যমের দায়িত্ব শুধু সংবাদ পরিবেশন করা নয়, শিক্ষার মাধ্যম হিসেবেও গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
জাফর ওয়াজেদ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন অভ্যস্ত ছিলাম যে বানানরীতিতে, সেটা মোটামুটি আর থাকেনি। এসবের পেছনে মূল কারণ হচ্ছে বাংলাভাষার খাঁটি ব্যাকরণ বই নেই এবং এই কাজটা বাংলা একাডেমির দায়িত্ব। এই ভুল বানানগুলোকে চিহ্নিত করে সংশোধন করার পদক্ষেপ নেওয়া।
পূর্ণাঙ্গ বাংলা ব্যাকরণ ও বানান রীতি প্রণয়ন হলে এ সমস্যা নিরসন হবে বলেও মনে করেন তারা।
ভিডিও :
এএইচ/এসএ/