সভ্যতা এবং মানবতা আশ্চর্য্য এবং অসাধারণ একটি দেশ
প্রকাশিত : ২২:৫৭, ৩ আগস্ট ২০২০
ইউরোপের একটি দেশ, যেখানে এই দৃশ্য অহরহ দেখতে পাবেন একটি রেস্তোরা। ঐ রেস্তোরার ক্যাশ কাউন্টারে এক ভদ্রমহিলা এলেন আর বললেন, ৫ টা কফি আর একটা সাসপেনশন। তারপর উনি পাঁচটি কফির বিল মেটালেন আর চার কাপ কফি নিয়ে চলে গেলেন।
কিছুক্ষণ পরে, এক ভদ্রলোক এলেন আর অর্ডার করলেন, দুটো লাঞ্চ প্যাক করুন আর দুটো সাসপেনশন রাখুন। উনি চারটে লাঞ্চ এর বিল মেটালেন আর দুটো লাঞ্চ প্যাকেট নিয়ে চলে গেলেন।
তার কিছুক্ষণ পর আরো একজন এলেন। অর্ডার করলেন, দশটা কফি, ছটা সাসপেনশন। উনি দশটা কফির পেমেন্ট করলেন আর চারটে কফি নিয়ে গেলেন।
এমন ভাবেই একের পর এক চলতে লাগলো। বেশ কিছুক্ষণ পরে, একটি বৃদ্ধ ব্যক্তি জর্জর অবস্থায় কাউন্টারে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, কোনো সাসপেনশন কফি আছে?
কাউন্টার থেকে জানানো হোলো, অবশ্যই আছে এবং এক কাপ গরম কফি ওনাকে দেওয়া হোলো। তারও অল্প কিছুক্ষণ পরে এক দাড়িওয়ালা ভদ্রলোক ভিতরে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, আজ কি কোনো লাঞ্চ সাসপেনশনে রাখা আছে? কাউন্টার থেকে যথারীতি সম্মতি জানিয়ে, তাকে গরম খাবারের একটি পার্সেল আর এক বোতল জল দেওয়া হোল।
এই ব্যাপারটা সারাদিন চলছে, চলছে তো চলছেই। কিছু মানুষ নিজেদের পকেট থেকে, নিজেদের অর্জিত রোজগার থেকে, কিছু অজানা মানুষের খাওয়ার জন্যে পেমেন্ট করছেন। আর কিছু গরীব, দুস্থ মানুষ বিনা পেমেন্টে নিশ্চিন্তে খাওয়া দাওয়া করছেন। দিনভর চলছে এই কান্ড। কেউ জানে না কারুর পরিচয়। না দাতা জানে গ্রহীতার পরিচয়, না গ্রহীতা জানে দাতার পরিচয়। প্রয়োজন নেই পরিচয় জানার, প্রয়োজন নেই নিজের নাম জাহির করার, কিন্ত প্রয়োজন আছে কিছু অভুক্ত মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেবার এবং সেটা একেবারেই গোপনে।
মানবিকতার এই চরম শিখরে পৌঁছনো দেশটির নাম নরওয়ে। এবং নরওয়ের দেখাদেখি এই পরম্পরা ছড়িয়ে পড়ছে, ইউরোপের অন্যান্য দেশেও।
আরকে//
আরও পড়ুন