সরকারি নার্সিং কলেজে ৩৭৫ জনের ভর্তি সুযোগ
প্রকাশিত : ১৬:৩০, ৮ জুন ২০১৮
দেশের তিনটি সরকারি নার্সিং কলেজ-এ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে পোস্ট বেসিক বিএসসি ইন নার্সিং/ বিএসসি পাবলিক হেলথ নার্সিং কোর্সে ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভর্তির জন্য এরই মধ্যে অনলাইনে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছে। প্রার্থীর আবেদনপত্র যাচাই-বাঁছাই সাপেক্ষে আগামী এক মাসের মধ্যে কলেজগুলোতে মোট ৩৭৫ জনের পরীক্ষা ও ভর্তি কার্যক্রম শেষ হবে। বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, রাজধানীর মহাখালীতে কলেজ অব নার্সিংযে ১২৫ জন, চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট নার্সিং কলেজে ১২৫ জন এবং বগুড়ার নার্সিং কলেজে ১২৫ জনকে ভর্তি করা হবে। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের নির্দিষ্ট www.dgnm.gob.bd ওয়েবসাইটে ৫ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ থাকবে। আবেদনকারীদের আগামী ৬ জুলাই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার ফল ঘোষণা হবে ৭ জুলাই। এরপর থেকেই দুই বছর মেয়াদি এ কোর্সের ভর্তির কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তন্দ্রা শিকদার বলেন, নার্সিং একটি মহৎ পেশা। এই পেশায় নিজেকে উৎসর্গ করে বহু নারী মহীয়সী হয়েছেন। তাদের মধ্যে ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল, মাদার তেরেসা অন্যতম। নার্সিং-ই একমাত্র পেশা যার মাধ্যমেই মানুষের সবচেয়ে নিকটে গিয়ে সেবা করা সম্ভব। তাছাড়া নিজেকে সমাজে সম্মানসূচক স্থানে প্রতিষ্ঠিত করতেও এ পেশার জুড়ি নেই।
বর্তমান সরকার নার্স বান্ধব সরকার। ০৪ (চার) বছর মেয়াদি ব্যাচেলর অব নার্সিং এবং ০৩ (তিন) বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স এন্ড মিডওয়াইফারি কোর্স সম্পন্ন করার পর পরই পাচ্ছেন দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদায় বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করার সুযোগ। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে থাকছে দ্বিতীয় শ্রেণির নন-ক্যাডার বিভাগে নার্সিং অফিসার হিসেবে `সিনিয়র স্টাফ নার্স` পদে সরকারি হাসপাতালে চাকরির অপূর্ব সুযোগ।
এসব সুযোগকে আরো ত্বরান্বিত করছে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। যার ধারাবাহিকতায় ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে পোস্ট বেসিক বিএসসি ইন নার্সিং/ বিএসসি পাবলিক হেলথ নার্সিং কোর্সে ভর্তির কার্যক্রম চলছে। এ কোর্স একেবারে নতুনদের জন্য নয়, এখানে তারাই সুযোগ পাচ্ছেন যারা এরই মধ্যে নার্সিং বিষয়ে কোন না বিষয়ে প্রার্থমিক সনদ ও যোগ্যতা অর্জন করেছেন।
অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ভর্তিচ্ছু প্রাথীকে আবেদনের জন্য নিম্বতম এসএসসি বা সমমান পাশ হতে হবে। ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি পাশ হতে হবে। বাংলাদেশ নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিল হতে নিবন্ধনকৃত হতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য সিনিয়ির স্টাফ নার্স বা স্টাফ নার্স পদে কমপক্ষে ২ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন হলে ৫০০ টাকা বিকাশের মাধ্যমে পরীক্ষার ফি জমা দিতে হবে।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক শাহিনূর বেগম বলেন, রোগীর মানসম্মত ও উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে গুণগত নার্সিংসেবা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য মানসম্মত ও আধুনিক নার্সিং শিক্ষাও অপরিহার্য। চিকিৎসা সেক্টরে সেবিকার অবদান অনস্বীকার্য। হাসপাতালে ডাক্তাররা যতই রোগীর চিকিৎসা দিন না কেন, নার্সদের সেবা ছাড়া ওই চিকিৎসা পূর্ণতা পাবে না। শুধু চিকিৎসক দ্বারা রোগীকে সম্পূর্ণরূপে নিরাময় করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সেবিকার ভূমিকা অপরিসীম যা কেবল শিক্ষিত ও দক্ষ সেবিকা দ্বারাই প্রদান সম্ভব। আর সেই শিক্ষিত ও দক্ষ সেবিকা গড়ে তুলতে এ কোর্সে ভর্তি প্রকৃয়া চলছে।
নার্সি ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের তথ্য মতে, দেশে মোট ৯৮টি নার্সিং ইনস্টিটিউট আছে। সরকারি ৪৩টি, স্বায়ত্তশাসিত ১টি, বেসরকারি ৫৪টি। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করে বর্তমানে সরকারি হাসপাতালে কর্মরত নার্সের সংখ্যা ৩০ হাজার। পাবলিক সার্ভিস কমিশন ২০১৬ সালে ১০ হাজার নিয়োগ দেবার পরও, চিকিৎসক ও নার্সের অনুপাত ৮:৯।
আরকে/এসএইচ/
আরও পড়ুন