সরকারের যোগসাজশে গত ১৫ বছর পুঁজিবাজারে লুটতরাজ হয়েছে: ড. হেলাল
প্রকাশিত : ১৭:৪৫, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান ও পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্য অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ হেলাল বলেছেন, পুঁজিবাজারে গত ১৫ বছরে যে অনিয়ম ও লুটতরাজ হয়েছে, তার সবই হয়েছে বিগত আওয়ামী সরকারের প্রশ্রয় ও যোগসাজসে। সাবেক সরকার প্রধানও এর দায় এড়াতে পারেন না।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ইনোভা সিকিউরিটিজের শাখা উদ্বোধন ও ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, যখন গণতন্ত্র ও জনগণের প্রতি জবাবদিহিতা থাকে না, নানা কৌশলে মানুষের সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, তৎকালীন সরকার এভাবে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় তাদের অনুগত ও পা চাটা ব্যক্তিদের বিভিন্ন পদে বসিয়েছিল। পুঁজিবাজারও তার ব্যতিক্রম নয়।
তিনি আরও বলেন, গত দেড় দশকে পুঁজিবাজারে শেয়ারের যোগান যতটা বেড়েছে, চাহিদা ততটা বাড়েনি। এ সময়ে বাজারে যেসব আইপিও এসেছে, তার বড় অংশই নিম্নমানের। এ কারণে বাজারে প্রকৃত চাহিদা তৈরি হয়নি। অনেকে অন্যের দেখাদেখি বিনিয়োগ করে পরে সব হারিয়ে বসে থাকে।
ড. হেলাল বলেন, বিএসইসির বর্তমান কমিশন বাজারে সংস্কার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। যদি তারা বাজার ফাউল প্লে বন্ধ করতে পারে, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয় তাহলে ধীরে ধীরে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে, বাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।
তিনি বলেন, আমি কমিশনকে বলেছি৷-ভালো শেয়ার নিশ্চিত না হয়ে বাজার নতুন শেয়ার না আনে। কারণ বাজারে ঘিয়ের চেয়ে ছাইয়ের দাম বেশি হলে ঘি নিয়ে কেউ সেই বাজারে আসবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থসূচক সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, গত সরকারের সময়ে পুঁজিবাজারে যত ইনস্ট্রুমেন্ট আছে, তার প্রতিটির অপব্যবহার করা হয়েছে। তৎকালীন কমিশন শুধু দুষ্টচক্রকে প্রশ্রয়ই দেয়নি, অনেক ক্ষেত্রে অনিয়ম ও কারসাজির পথও বাতলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজারে যে নাজুক অবস্থা চলছে তার অন্যতম কারণ গত ১৫ বছরের অনিয়ম ও দুর্নীতি।
তিনি বলেন, বিশ্বের প্রায় সব দেশেই শেয়ারবাজারে কারসাজি ও দুর্নীতি হয়। তবে সেখানে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে অপরাধ করে সবাই পার পেয়ে গেছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ভৈরব পৌরসভার সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট ফখরুল আলম আক্কাছ, ভৈরব বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এসএস//
আরও পড়ুন