সাক্ষীর অভাবে ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৩:০৫, ৭ জুন ২০২৩
এখন কেউ সাক্ষী দিতে চায় না। আর সাক্ষী না থাকলে ন্যায় বিচার থাকবে না বলে আশঙ্কা করছেন ফৌজদারী আইন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় সাক্ষী ভাতা বাড়িয়ে নিরাপত্তা প্রদানসহ বেশ কিছু আইনের সংশোধন ও দ্রত বাস্তবায়নের তাগিদ আইন বিশেষজ্ঞদের।
১৯৯৮ সালে মহাখালীতে খুন হন আকরাম। নিহতের মা আয়েশা খাতুন গুলশান থানায় এজাহার করেন। তিনিসহ রাষ্ট্রপক্ষের ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যের জন্য ১৯০ বার দিন ধার্য হয়। এরমধ্যে মাত্র একজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। বাকিরা আদালতমুখীই হননি। ফলে ২৪ বছর পর চার্জশিটভুক্ত চার আসামিই খালাস পান।
চাক্ষুশ সাক্ষী না থাকায় চূড়ান্ত রায়েও উচ্চ আদালত থেকে খালাস পান নারায়ণগঞ্জের ১১ জন ফাঁসির আসামি। খুনের মামলায়ও অনেক আসামি জামিনে বের হয়ে যাচ্ছেন।
নিম্ন আদালতের মামলার ওয়েবসাইট থেকে দেখা যায় ১৯৯১ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যার ৪৬টি মামলা হয়।
বিষয়টি হাইকোর্ট বিভাগের নজরে আসায় এসব মামলা নিষ্পত্তির জন্য সময় বেঁধে দেয়। ফলে ট্রাইব্যুনালের বিচারক যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ আছে তার ভিত্তিতে বেঁধে দেওয়া সময়ে মামলা নিষ্পত্তি করে রায় দেন।
আদালতের আদেশের পর সাক্ষী হাজির করার দায়িত্ব পুলিশের। আর সাক্ষীর বিষয়টি নিশ্চিত করবে প্রসিকিউশন। কিন্তু এ দুই পক্ষের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় বিচার বিলম্ব হচ্ছে।
ফৌজদারী আইন বিশেষজ্ঞ এস এম শাহজাহান বলেন, “এখন কেউ সাক্ষ্য দিতে চায় না। সাক্ষ্য দিতে গেলে আসামিদের সঙ্গে সাক্ষীদের বৈরিতা শুরু হয়ে যায়। পুলিশের দায়িত্ব সাক্ষী আনা আর সাক্ষ্য দিতেও আসে না।”
ফৌজদারি মামলায় পুলিশ, চিকিৎসকসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাক্ষী হন। চাকরিরত অবস্থায় সাক্ষ্য দিতে গেলে যাতায়াতসহ অন্যান্য ভাতা পান তবে তা খুবই অপ্রতুল। অবসরে গেলে সেই ভাতা নেই, ফলে তখন সাক্ষ্য দিতে আর আগ্রহ থাকে না।
আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী তাপস কান্তি বল বলেন, “নতুন যে আইনটি মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন প্রস্তাব করেছে সেখানে সবার জন্যই একটি আম্রেলা প্রোটেকশনের কথা হয়েছে। এই ধরনের আইনগুলো নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের চিন্তা করা প্রয়োজন। পার্লামেন্টে এই আইনগুলো পাস হলে অবশ্যই সাক্ষীরা অনুপ্রানিত বোধ করবেন যে, তারা সাক্ষ্য দিতে গিয়ে অযথা হয়রানি বা শারীরিক নিগ্রহের ব্যাপারটা থাকবেনা। একই সঙ্গে সাক্ষ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে যদি কোনো অর্থনৈতিক সংকট থাকে সেই সংকট হয়তো কাটিয়ে ওঠা যাবে।”
এক্ষেত্রে সাক্ষী সুরক্ষা আইন বাস্তায়নের তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।
ফৌজদারী কার্যবিধি সংশোধন করে দ্রুত বাস্তবায়নই কেবল পারে সাক্ষীকে সাক্ষ্যদানে উৎসাহ দিতে।
এএইচ