সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রীর স্ত্রী মোনালিসা ৩ দিনের রিমান্ডে
প্রকাশিত : ১৬:১৫, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী ও কেন্দ্রিয় যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি সৈয়দা মোনালিসা ইসলামকে দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মেহেরপুরের আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে মেহেরপুর আদালতে নিয়ে আসা হয়। এদিন দুপুর সাড়ে বারটার দিকে মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ আমলি আদালতে হাজির করা হয় সৈয়দা মোনালিসা ইসলামকে।
মোনালিসাকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং অপর একটি মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালতের বিচারক শারমিন নাহার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কোর্ট ইন্সপেক্টর মানষ রঞ্জন দাস বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দায়েরকৃত মামলাটিতে মোনালিসার ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত তিন দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন এবং পলি খাতুন নামের এক নারীর দায়েরকৃত মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সৈয়দা মোনালিসার নামে মেহেরপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার উপর হামলাসহ কয়েকটি অভিযোগে তিনটি মামলা রয়েছে।
গতকাল রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকার ইস্কাটনের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের আগে প্রশাসনসহ এলাকার মানুষ এতোদিন জানতেন মন্ত্রীপত্নি সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম সরকার পতনের পরপরই কানাডাতে পালিয়ে গেছেন। কানাডাতে পালিয়ে যাওয়ার ভূঁয়া তথ্য মন্ত্রীর পরিবার ও দোষররা সমাজে ছড়িয়ে দিয়েছিল তবে শেষ রক্ষা হয়নি মোনালিসার।
স্থানীয়রা জানান, মেহেরপুর জেলায় অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা অবৈধপথে পাচার করেছেন মন্ত্রীর স্ত্রী মোনালিসা। অনলাইন জুয়ার নিয়ন্ত্রক ছিলেন সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম। তিনি নিয়মিত টাকা নিতেন জুয়াড়িদের নিকট থেকে এমন খবর এখন মানুষের মুখে মুখে। তারা বলেন, মন্ত্রীর স্ত্রী প্রশাসনকে ম্যানেজ করায় নির্ভয়ে জুয়াড়িরা ব্যবসা করতে পারতেন।
গত ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক এমপি এবং মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে মেহেরপুরে দুটি হত্যা মামলা হয়। সরকারি ত্রাণের কোটি টাকার মালামাল আত্মসাতের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হয়েছে। ক্ষমতার পালাবদলের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা এলাকায় থাকলেও মন্ত্রী ও তার ভাইবোন-স্বজন সবাই এখন পলাতক। অথচ ক্ষমতাকালে মন্ত্রী বাইরের ভালো লোক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন।
এদিকে, মন্ত্রী পত্নীর দুর্নীতির কথা ফাঁস করেছেন তারই দেবর সরফরাজ হোসেন মৃদুল। তিনি এক অডিও সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভাবির দুর্নীতির কারণেই আজ আমরা সবাই ঘরছাড়া, পালিয়ে বেড়াচ্ছি এবং মামলার আসামি হয়েছি। অথচ ভাবি ঢাকাসহ তার পিতার বাড়ি কিশোরগঞ্জে অনেক সম্পদ করেছেন।
পরে মন্ত্রীর ভাই সরফারাজ হোসেন মৃদুলও অপর দুটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মেজবাউদ্দিন বলেন মন্ত্রী পত্নীকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের উপর হামলা মামলা ও এক নারীর দায়ের করা দুটি মামলায় আদালতে হাজির করা হয়েছে। ছাত্রদের করা মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মুঞ্জুর করেছেন।
এএইচ
আরও পড়ুন