সাবেক স্বামীর এসিড নিক্ষেপ: চিকিৎসাধীন গৃহবধূ সাদিয়ার মৃত্যু
প্রকাশিত : ১৫:৪০, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
মাদারীপুরের শিবচরে সাবেক স্বামীর এসিড নিক্ষেপে ঝলসে যাওয়া স্ত্রীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ দিন পর মৃত্যু হয়েছে। গত ১৬ আগস্ট এক সন্তানের জননী গৃহবধূ সাদিয়ার মাথায় এসিড নিক্ষেপ করে সাবেক স্বামী সুমন শিকদার ও তার সহযোগিরা।
ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে দীর্ঘ ২৫ দিন যাবত চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শনিবার বিকালে মৃত্যু হয় তার।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৪ বছর আগে জেলার শিবচর উপজেলার মাদবরচর ইউনিয়নের সিরাজ শিকদারের ছেলে স্পীডবোট চালক সুমন শিকদারের (২৬) সঙ্গে একই ইউনিয়নের লিটু হাওলাদারের মেয়ে সাদিয়া আক্তার (২০) বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে এক শিশু কন্যা সন্তানও রয়েছে।
সংসার জীবনের শুরু থেকেই সুমন মাদকসেবী হওয়ার কারণে সংসারে অশান্তি লেগেই ছিল। সম্প্রতি এ দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করলে তাদের মধ্যে তালাক হয়ে যায়। এরপর মাদকাসক্ত সুমন দফায় দফায় সাদিয়ার বাবার বাড়িতে হামলা চালাতে থাকে। এ নিয়ে সাদিয়া শিবচর থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ সুমনের বাড়িতে গিয়ে তাকে সতর্ক করে আসে। এতে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে সে।
কয়েকদিনের মধ্যেই সাদিয়ার অন্যত্র বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বিয়ের খবর পেয়ে সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৬ আগস্ট বুধবার রাত ১০টার দিকে কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সাদিয়ার বাড়িতে গিয়ে তার মাথায় এক বোতল এসিড ঢেলে দেয়। এসিডের আঘাতে সাদিয়ার মাথা, মূখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ মারাত্মকভাবে পুড়ে যায়।
পরবর্তীতে স্বজনরা সাদিয়াকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করেন। সেখানে ২৫ দিন মৃত্যুর সাথে লড়ে শনিবার বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাদিয়ার মৃত্যু হয়।
সাদিয়ার লাশ রাতে বাড়িতে পৌঁছলে স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এদিকে সাদিয়াকে এসিড নিক্ষেপের পরদিন তার বোন তাছলিমা বাদী হয়ে শিবচর থানায় সুমনসহ ৫ জনের নামে এসিড দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর গত ২৪ আগস্ট রাতে অভিযুক্ত সুমন শিকদারকে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার মাঝিরচর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
শিবচর থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সাবেক স্বামীর এসিড নিক্ষেপে আহত গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তার লাশ বাড়িতে আনা হয়েছে।
এএইচ
আরও পড়ুন