সামাজিক দূরত্ব মেনে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
প্রকাশিত : ১৪:৩৯, ২৯ জুলাই ২০২০
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সামাজিক দূরত্ব মেনে মাত্র দশ হাজার অংশগ্রহণকারী নিয়ে শুরু হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। ইহরাম বেঁধে মক্কায় পবিত্র কাবা শরীফে তাওয়াফে কুদুমের মাধ্যমে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
মক্কা থেকে সাত কিলোমিটার দূরে মিনায় বৃহস্পতিবার ফজর পর্যন্ত অবস্থান করবেন হাজিরা। সেখানে তারা পাঁচ ওয়াক্ত (জোহর, আসর, মাগরিব, এশা ও বৃহস্পতিবার ফজর) নামাজ আদায় করবেন। ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনা, মুজদালিফা, আরাফাতের ময়দান ও মক্কায় হজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন হাজিরা।
এবার সৌদি আরবে হজের চিত্র ভিন্ন। এমন হজ আর কখনো দেখেনি বিশ্ববাসী। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিদেশ থেকে যাওয়া হাজিদের অনুমোদন দেয়নি সৌদি আরব। বরং সৌদিতে বসবাসরত ও স্থানীয় নাগরিকদের মধ্যে মাত্র দশ হাজার জনকে স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে হজের অনুমতি দেয়া হয়েছে। প্রতিবছর ২৫ লাখ মুসলিম হজ আদায় করেন। তবে এবারের প্রেক্ষাপট পাল্টে দিয়েছে করোনাভাইরাস।
পবিত্র মক্কা শহর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে মিনা বিশ্বের সবচেয়ে বড় তাঁবুর শহর হিসেবে খ্যাত। কারণ প্রতিবছর ২৫ লাখের বেশি মানুষ হজে পালন করেন। যারা এই তাঁবুতে অবস্থান করেন।
করোনা থেকে রক্ষা পেতে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সৌদি সরকার। হজের জন্য মনোনীত প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। হজ শুরুর আগে দুই ধাপে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
চলতি বছর বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার স্বার্থে বেশ কিছু নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ওই পদক্ষেপের আওতায় প্রত্যেক হজযাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন।
সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় নিবন্ধিত হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠিয়েছে। এসব সামগ্রীর বাইরে অন্য কিছু বহন করতে পারবেন না হজযাত্রীরা। প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে- চিপলাগানো একটি স্মার্ট ব্রেসলেট, দুই সেট ইহরামের কাপড়, ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি, জামারাতে নিক্ষেপের জন্য জীবাণুমুক্ত কঙ্কর, জুতা, ফোনের চার্জার, জায়নামাজ, জুতার ব্যাগ, হাতব্যাগ এবং হজের বিধি-বিধানসহ প্রাসঙ্গিক বই-পত্র ও স্বাস্থ্যবিধি সম্বলিত হজ নির্দেশিকা।
হাজিদের জন্য ইসলামের পবিত্রতম স্থান কাবা শরিফের হাজরে আসওয়াদ নামক কালো পাথরে চুমু দেওয়া ও স্পর্শ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সংক্রমণ যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য জমজমের পবিত্র পানি পানেও থাকছে বিধিনিষেধ। এবার সবার জন্য জমজমের পবিত্র পানি সরবরাহ করা হবে প্লাস্টিকের প্যাকেটে। সেই পানিই পান করতে হবে সবাইকে।
বিশেষ পরিস্থিতির কারণে শয়তানকে পাথর ছোড়ার আনুষ্ঠানিকতাতেও থাকছে নতুনত্ব। এবার সর্বোচ্চ ৫০ জন হাজি একসঙ্গে পাথর নিক্ষেপ করতে পারবেন। তবে এটি সাধারণ কোনও পাথর নয়। এবার জীবাণুমুক্ত পাথর সরবরাহ করা হবে হাজিদের।
যাতায়াতের জন্য প্রতি ২০ জন করে একটি দল করা হয়েছে। প্রত্যেক বাসে বিশজন করে হজযাত্রী চলাফেরা করবেন এবং ৫০ হাজির জন্য একজন করে চিকিৎসক রয়েছেন।
সূত্র : আরব নিউজ
এসএ/