ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪

সামাজিক সূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২৮, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ২৩:০২, ১২ ডিসেম্বর ২০১৮

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রকাশিত মানবউন্নয়ন প্রতিবেদনে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সূচকে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ওই দুটি দেশের চেয়ে বেশি। মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু, স্কুলে পাঠগ্রহণ-এসব খাতে বাংলাদেশ বেশ এগিয়ে গেছে।

গত শুক্রবার ইউএনডিপি’র প্রকাশিত মানবউন্নয়ন প্রতিবেদন ২০১৮-এ এই চিত্র পাওয়া গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ি, ১৮৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৬তম, গতবার ছিল ১৩৮তম ।

এবার ভারতের অবস্থান ১৩০তম, আর পাকিস্তান ১৫০তম। গতবারের চেয়ে বাংলাদেশ দুইধাপ এগিয়ে গেলেও ভারত ও পাকিস্তান একধাপ পিছিয়েছে। ওই ১৮৯টি দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, গড় আয়সহ বিভিন্ন সূচকের ২০১৭ সালের পরিস্থিতি এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সার্বিকভাবে গতবারের মত এবারও নরওয়ে শীর্ষস্থান দখল করে আছে।

বাংলাদেশের মানুষ ভারত ও পাকিস্তানের মানুষের চেয়ে গড়ে অনেকদিন বাঁচে। মানব উন্নযন প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু এখন ৭২ দশমিক ৮ বছর। ভারতে গড় আয়ু ৬৮ দশমিক ৮ বছর ও পাকিস্তানের ৬৬ দশমিক ৬ বছর। নবজাতক মৃত্যু ও পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর হার হ্রাসেও এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। এক হাজার জীবিত শিশু জন্ম গ্রহন করলে বাংলাদেশে ২৮ দশমিক ২ জন নবজাতক মারা যায়। ভারত ও পাকিস্তানে এই সংখ্যা যথাক্রমে ৩৪ দশমিক ৬ এবং ৬৪ দশমিক ২। একইভাবে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ভালো করছে। বাংলাদেশে ১ হাজার জীবিত শিশুর মধ্যে ৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই মারা যায় ৩৪ দশমিক ২ জন। পাকিস্তানের তা দুই গুনের চেয়ে বেশি, ৭৮ দশমিক ৮ জন। আর ভারতের ৪৩ জন।

সন্তান প্রসবজনিত মাতৃমৃত্যু অবশ্য তিন দেশই কাছাকাছি অবস্থানে। বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে পিছিয়ে, পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে। বাংলাদেশে প্রতি ১ লাখ গর্ভবতী মায়ের মধ্যে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে গড়ে মারা যান ১৭৬ জন। ভারত ও পাকিস্তানে এই সংখ্যা যথাক্রমে ১৭৪ ও ১৭৮।

বাংলাদেশ সাক্ষরতার হার বর্তমানে ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। ভারত ও পাকিস্তানে যথাক্রমে ৬৯ দশমিক ৯ শতাংশ ও ৫৭ শতাংশ। অথচ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে বাংলাদেশ ওই দুটি দেশের চেয়ে কম খরচ করে।

নারীর ক্ষমতায়নেও এগিয়ে বাংলাদেশ। ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব বেশি। বাংলাদেশের সংসদে যতজন নারী আসন আছে, এর মধ্যে ২০ দমমিক ৩ শতাংশই নারী। পাকিস্তানে তা ২০ শতাংশ ও ভারতে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ।

তবে মাথাপিছু আয়ে বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ। ক্রয়ক্ষমতার সক্ষমতা অনুযায়ী (পিপিপি হিসাবে) বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় এখন ৩ হাজার ৬৭৭ ডলার। ভারতের প্রায় দ্বিগুনের কাছাকাছি, ৬ হাজার ৩৫৩ ডলার। আর পাকিস্তানে ৫ হাজার ৩১১ ডলার।

সার্বিকভা্বে অবশ্য দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান কিছুটা দুর্বল। ৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৫ম। শীর্ষস্থানে আছে শ্রীলঙ্কা (৭৬তম)। এছাড়া বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকা অন্য দেশগুলো হলো মালদ্বীপ (১০১তম), ভারত (১৩০তম) ও ভূটান (১৩৪তম)। বাংদেশের পিছনে আছে নেপাল (১৪৯ তম), পাকিস্তান (১৫০তম) ও আফগানিস্তান (১৬৮তম)।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের নারীরা পুরুষের চেয়ে বেশ পিছিয়ে আছেন। পুরুষরা নারীদের থেকে আড়াই গুন বেশি আয় করতে পারেন। নারীদের মাথাপিছু গড় আয় (পিপিপি হিসাবে) মাত্র ২ হাজার ৪১ ডলার। আর পুরুষের গড় আয় ৫ হাজার ২৮৫ ডলার। তবে বাংলাদেশের পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি দিন বাঁচেন। পুরুষেরা গড়ে ৭১ দশমিক ২ বছর বাঁচেন, নারীরা বাঁচেন ৭৪ দশামিক ৬ বছর।

ইউএনডিপির ওই প্রতিবেদনে মানব নিরাপত্তার বিষয়টিও উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রতি ১০ লাখ লোকের মধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে ১৩১জন বাস্তুচ্যুত হন। এছাড়া অভ্যন্তরীণভাবে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা ৪ লাখ ৩২ হাজার। সার্বিকভাবে দেশে প্রায় ২৩ লাখ এতিম শিশু রয়েছে।

এসএ/

 

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি