ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪

সারা বিশ্বে ৭ কোটিরও বেশি মানুষ ঘরহারা: জাতিসংঘ

প্রকাশিত : ২৩:৩২, ১৯ জুন ২০১৯ | আপডেট: ২৩:৪০, ১৯ জুন ২০১৯

সারা বিশ্বে ৭ কোটিরও বেশি মানুষ ঘরহারা বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। যুদ্ধ, নিপীড়ন এবং সংঘাতের কারণে বিশ্বজুড়ে গেল বছর এমন হয়েছে যা প্রায় ৭০ বছরের মধ্যে এ সংখ্যা সর্বোচ্চ।

বুধবার ইউএনএইচসিআর তাদের এক বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্বে বাস্তুচ্যুত হওয়া এ মানুষদের অর্ধেকই শিশু। আর ধনী পশ্চিমা দেশগুলো নয় বরং উন্নয়নশীল দেশগুলোই এ বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর বোঝা বহন করছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি জেনেভায় ‘গ্লোবাল ট্রেন্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে বৈশ্বিক প্রবণতা ভুল দিকেই যাচ্ছে৷ নতুন করে যুদ্ধ আর সংঘাত বাড়ছে এবং তৈরি করছে নতুন নতুন শরণার্থী৷ যারা আগের শরণার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন, অথচ পূর্ববর্তীদের সমস্যার কোনো কিনারা হয়নি৷’

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ২০১৮ সালে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা সাত কোটি ৮০ লাখে পৌঁছেছে। যা ২০১৭ সালের চেয়ে সংখ্যায় দুই কোটি ৩০ লাখ বেশি। বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন গড়ে ৩৭ হাজার মানুষ বাড়ি-ঘর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। এ সংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার তুলনায় বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়ার কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

১৯৫১ সাল থেকে রিফিউজি কনভেশনে রাখা তথ্যানুযায়ী, এর আগে ১৯৯২ সালে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার তুলনায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল। সেবার গড়ে প্রতি ১০০০ জনে ৩ দশমিক ৭ জন বাস্তুচ্যুত হত। কিন্তু ২০১৮ সালে ওই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি (৯ দশমিক ৩) হয়ে গেছে।

২০১৮ সালে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৭ কোটি ছাড়ালেও প্রকৃত সংখ্যাটা আরো বেশি হবে বলেই জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা। কারণ, সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের কারণে যত মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে তাদের মাত্র একটি আংশিক হিসাব এ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে কারণ ভেদে গৃহহীনদের তিনটি প্রধান দলে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম দলে যুদ্ধ, সংঘাত বা নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালানো মানুষদের রাখা হয়েছে। ২০১৮ সালে বিশ্বজুড়ে এ ধরনের শরণার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় দুই কোটি ৫৯ লাখ। যা ২০১৭ সালের তুলনায় প্রায় পাঁচ লাখ বেশি। এর মধ্যে ফিলিস্তিনি শরণার্থী ৫৫ লাখ। দ্বিতীয় দলে আছে আশ্রয়প্রার্থীরা। যারা নিজেদের জন্মভূমি ছেড়ে নানা দেশে আশ্রয় প্রার্থনা করেছে। তাদের সংখ্যা প্রায় ৩৫ লাখ। তৃতীয় দলে আছেন ওই সব গৃহহীন মানুষ যারা বাস্তুচ্যুত হয়ে নিজ নিজ দেশের ভেতরই আশ্রয় নিয়ে আছেন। বিশ্বজুড়ে এ সংখ্যা প্রায় চার কোটি ১৩ লাখ।

বিশ্বজুড়ে এসব শরণার্থীর দুই-তৃতীয়াংশের বেশিই সিরিয়া, আফগানিস্তান, দক্ষিণ সুদান, মিয়ানমার ও সোমালিয়া থেকে এসেছেন। তার মধ্যে সিরিয়ার শরণার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৬৭ লাখ। তারপরই আছে আফগানিস্তান, ২৭ লাখ।

আর ২০১৭ সালের শেষ দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের কারণে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান বাড়িঘর ছেড়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। এখনো মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরাক ও ইয়েমেন এবং সাব-সাহারা আফ্রিকার কয়েকটি দেশে যুদ্ধ চলছে।

এসি

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি