ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

নীরবতা ভেঙ্গে সামিরা বললেন

সালমান খুন নয়, আত্মহত্যা করেছেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:১৫, ১৪ আগস্ট ২০১৭

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়কদের একজন সালমান শাহ খুন হয়েছেন না আত্মহত্যা করেছেন? তার রহস্যজনক মৃত্যুর দুই দশক পরও সেটি এখনো ধা-ধা রয়ে গেছে সালমানের নিযুত ভক্তের কাছে।  


এখনও পর্যনন্ত আইন বলছে, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছিলেন! কিন্তু সালমান শাহের পরিবার ও সালমান ভক্তদের দাবি, সালমান শাহকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। আর এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে তার স্ত্রী সামিরা জড়িত।


এই পরিকল্পিত হত্যার জন্য পরিবার থেকে বরাবরই দায়ী করা হয়েছে সালমানের স্ত্রী সামিরাকে। এ বিষয়ে সামিরা নিরবতা অবলম্বন করেছেন। আড়ালেই থেকেছেন দীর্ঘদিন। নিরবতা ভেঙ্গে সামিরা সোমবার গণমাধ্যমকে বলেছেন, সালমান খুন নয়, আত্মহত্যা করেছেন। সামিরার ভাষ্য, সালমান তাকে অনেক ভালোবাসতেন। তাকে খুশি করতে শত পাগলামি করেছেন সালমান। সামিরার দাবি, কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই সালমানের মা তাকে বারবার খুনি বলছেন।  


প্রসঙ্গত, সালমান খুনের আসামি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী রুবি সুলতানা সম্প্রতি এক ভিডিও বার্তা দিয়ে দাবি করেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেনি। তাকে খুন করা হয়েছে। এই খুনের সঙ্গে জড়িত সামিরা ও তার পরিবার। তার তথ্য পেয়ে তোলপাড় শুরু হয় দেশজুড়ে। সালমানের মা নীলা চৌধুরী ওই বক্তব্য সমর্থন করে ইন্টারপোলের তদন্ত দাবি করেন।


এ বিষয়ে সামিরা সোমবার গণমাধ্যমকে বলেন, সত্য একটাই, আর সেটি হচ্ছে সালমান আত্মহত্যা করেছেন।আমি যা বলছি সেটাই প্রমাণ হবে। ইন্টারপোল, এফিবিআই আসলেও আমার কোনো সমস্যা নেই। আমিও চাই তারা আসুক।


তিনি বলেন, আমার শাশুরি বারবার ইন্টারপোল, এফবিআই এর তদন্ত চেয়েছেন। আমার কোনো আপত্তি নেই। আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থা এলে আমার জন্য আরো সুবিধা হবে প্রমাণ করতে যে, এটি আসলেই আত্মহত্যা, কোনোভাবেই হত্যা না।


তিনি বলেন, এই মামলার সঠিক তদন্ত আমিও চেয়ে এসেছি। স্বামী খুনের অপবাদ আমি বয়ে বেড়াতে চাই না। সালমান সেই স্বামী যিনি আমার একটু সুখের জন্য কতো পাগলামি করেছেন। আমিও তাকে প্রাণের মতো ভালোবেসেছি। সেইসময় যারা সালমানের কাছের মানুষ ছিলেন তারা সবাই জানেন এসব। আমাকে সালমানের মা ব্যক্তি আক্রোশ থেকে খুনের আসামি বলছেন।


সালমান শাহের অগনিত ভক্তদের উদ্দেশ্যে সামিরা বলেন, আমার কথাগুলো সালমান শাহের ভক্তদের মানতে কষ্ট হবে। কিন্তু এটাই সত্যি। আমারও কষ্ট হয়। যার হাত ধরে বাবা, মা পরিবার ছেড়ে চলে এসেছিলাম তাকে হারিয়েছি ভাবতে। আজও ইমনের (সালমান) বিকল্প কেউ নেই আমার মনে। বেঁচে আছি, বেঁচে থাকতে হয়।


ইমনের মায়ের ভুল কথায় বিভ্রান্ত হয়ে, আবেগতাড়িত হয়ে তার ভক্তরা আমাকে নিয়ে বাজে কথা বলেন, বাজে ধারণা করেন। কিন্তু কারো উপর আমার কোনো রাগ নেই, কষ্ট নেই। প্রথম থেকেই তারা সালমান শাহকে ভালোবাসেন।


সামিরা আরও বলেন, সালমানের আত্মহত্যার পর তিনটা বছর একা একা কাটালাম। একটা সময় আমি ভেবেছি বিদেশ চলে যাবো পড়াশোনা করতে। সেটা আর হয়নি। আমি ইমনের মৃত্যু মানতে পারছিলাম না। তার স্মৃতি নিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিতে চাইলাম। তখন খুব প্রয়োজন বোধ করলাম যদি একটি সন্তান আমাদের থাকতো! একটা সময় ইমনেরই বন্ধু মোস্তাক ওয়াইজ আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলো। আমি তাকে ফিরিয়ে দেই। পরে তার পরিবার ও আমার পরিবারের প্রচেষ্টায় বিয়েটা হয়। আমি এখন ভালো আছি।


সামিরা বলেন, আমার শাশুরি উদ্দেশ্যমূলকভাবে ইমনের মৃত্যুকে ‘ইনক্যাশ’ করতে চাইছেন। বারবার তিনি কোনো প্রমাণ ছাড়াই ইমনের খুনি হিসেবে বলছেন- সামিরা-সামিরা-সামিরা।


সামিরার ভাষ্য, আমার ইমন (সালমান শাহ) যতদিন বেঁচে ছিল আমার শাশুরি কি সে সময় বোবা ছিলেন? কেন ইমন নিজে বলেনি? আমাকে নিয়ে কারো কাছে কোনো অভিযোগ করেনি? কারণ সত্যিটা হলো আমার কোনো দোষ ছিলো না। ইমন ওর মাকে পছন্দ করতো না। এটা ইমনের পরিবার, খালা-মামা ও তাদের বাচ্চারা জানতন। ফিল্মের লোকেরাও জানতন। ওর মাকে নিয়ে সবসময়ই ও মানসিক চাপে ভুগতো। অনেক কষ্ট নিয়ে সে আলাদা হয়েছিলো মায়ের কাছ থেকে।


সালমানের মা কারাগারে ছিলো কিছুদিন। ইমন দেখতে যেতো না। আমিই জোর করে পাঠিয়েছি। এসব কথা নীলা চৌধুরী কী করে ভুলে যান। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি তার পাশে থাকতে। কিন্তু তিনি দজ্জাল শাশুরিই হতে চেয়েছেন। যার কাছে নিজের ছেলে ভালোবাসা বঞ্চিত, তার কাছে ছেলের বউয়ের ভালোবাসা আশা করা যায় না। এসব কথা বলতে গেলে আমি অনেক আবেগ প্রবণ হয়ে যাই। আমার উপর দিয়ে অনেক ঝড় যাচ্ছে। আমিও চাই আসল সত্যটা বের হোক। তাহলে আমি শান্তি পাব।’


সামিরা তার বর্তমান সংসার নিয়ে বলেন, ‘এখানে আমার তিনটি সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে মালয়েশিয়াতে থাকে। তারপর আরও দুটি মেয়ে রয়েছে আমার। তারা ঢাকার একটি স্কুলে পড়াশোনা করছে।’
//এআর


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি