ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অর্থনৈতিক করিডোর

সাড়ে তিন কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৮, ৬ জানুয়ারি ২০১৯ | আপডেট: ১১:৫৯, ৬ জানুয়ারি ২০১৯

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা চলতে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ এই অঞ্চল হতে বার্ষিক ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থনৈতিক উৎপাদন বা আয় হবে। যদি এই অঞ্চলকে নিয়ে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক করিডোর গঠন করা সম্ভব হয় সেক্ষেত্রে এই অঞ্চলের উৎপাদন বা অর্থনৈতিক আয় ১৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে উন্নীত করা সম্ভব হবে। সেইসঙ্গে বাড়তি আড়াই কোটি লোকের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। সমন্বিতভাবে এই অঞ্চলকে উন্নয়ন করা সম্ভব হলে ২০৫০ সাল নাগাদ শুধু এই অঞ্চলটি সাড়ে তিন কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের অঞ্চলে পরিণত হবে।

‘রিয়ালাইজিং দ্য প্রটেনশিয়াল অব বাংলাদেশ থ্রু ইকনমিক করিডোর ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এমনটি উল্লেখ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

সম্প্রতি প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কাঠামোগত রূপান্তর এবং আঞ্চলিক সুষম উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়নের মতো উন্নয়ন কৌশল গ্রহণ করতে হবে। এর মাধ্যমে শিল্প স্থাপন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন হবে। সেই সাথে গ্রাম শহরের মধ্যে ব্যবধান কমে আসা, অভ্যন্তরীণ বাজার ব্যবস্থা উন্নত হবে এবং বৈশ্বিক ভ্যালু চেইন ব্যবস্থার সাথে যুক্ত হওয়া সহজ হবে।
বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন উন্নয়নশীল বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই। এখানে নগরায়ণ ও শিল্পায়ন দুটি বিষয় ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এজন্য অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়নে শক্তিশালী রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন। শুধু সরকারি নয়, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদেরও অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়নে অঙ্গীকার প্রয়োজন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়নে সরকারের নানা পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা রয়েছে। এখন প্রয়োজন এগুলোর সময় ভিত্তিক বাস্তবায়ন।
বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ইকনমিক করিডোর স্থাপনের মাধ্যমে আমাদের রপ্তানি বহুমুখীকরণ করা সম্ভব। দেশের তৈরি পোশাক খাতের সফলতার পরে অন্য খাতেও অগ্রগতি করা প্রয়োজন। এডিবির সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনায় ১৪টি খাতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এগুলো হলো- খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানা স্থাপন বিশেষ করে মৎস ও কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, তৈরি পোশাক, বাইসাইকেল, অটোমোবাইল, শিপবিল্ডিং, ফার্মাসিউটিক্যালস, চামড়াজাত পণ্য, আসবাব পণ্য, গ্লাস, সিরামিক, প্লাস্টিক, টায়ার প্রস্তুত কারখানা উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশের বর্তমান শিল্প উৎপাদন ব্যবস্থায় দেশীয় পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে মনযোগী হতে হবে। এজন্য এসব শিল্প গড়ে তোলার সুপারিশ করা হয়েছে যাতে করে অভ্যন্তরীণ কাঁচামাল ব্যবহার বেশি করা যায়।
দাক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল অন্যান্য অঞ্চলের মতো গড়ে উঠেনি। খুলনা বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহৎ শহর। নৌ-বন্দর সুবিধা থাকায় এই অঞ্চল পণ্য বাণিজ্যের অন্যতম প্রবেশদ্বার হতে পারে। এজন্য দ্রুত অবকাঠামো অগ্রগতির মাধ্যমে বহুমুখী পরিবহন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে। যাতে উৎপাদন কেন্দ্র এবং বর্ধিষ্ণু চাহিদার কেন্দ্র হিসেবে বিনিয়োগকারীদের কাছে এই করিডোর আকর্ষণীয় হয়ে উঠে।

একইসঙ্গে বৃহৎ বাজার ব্যবস্থার সঙ্গে করিডোরের সংযোগ তৈরিরও সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়, অর্থনৈতিক করিডোর বাস্তবে রূপ দিতে হলে আগামী ৩০ বছরে রূপান্তরিত অবকাঠামো খাতে অন্তত ১৪০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। প্রস্তাবিত ইকোনমিক করিডোর কেবল বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল নয়, পার্শ্ববর্তী নেপাল, ভুটান এবং ভারতের উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ আরো শক্তিশালী করবে।
এসএ/

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি