ইটিভি অনলাইনকে সুমন
সিনেমার গল্পটা হতে হবে জীবনের, জীবনবোধের
প্রকাশিত : ১৩:৪৪, ২৩ অক্টোবর ২০১৭ | আপডেট: ১৭:২১, ২৩ অক্টোবর ২০১৭
‘ঢাকা অ্যাটাক’ সিনেমায় সোয়াত টিমের ইনচার্জ (এসি, সোয়াত) এ বি এম সুমন, সিনেমাতে তার আশফাক চরিত্রটি ছিল এক কথায় অসাধারণ। অধিকাংশ দর্শকদের কাছে আশফাক চরিত্রটিই এই সিনেমায় পছন্দের শীর্ষে। সিনেমায় সন্তান সম্ভবা স্ত্রীর প্রতি আশফাকের প্রেম, দেশের প্রতি কর্তব্যবোধ, সুদর্শন চেহারা ও অসাধারণ অভিনয় হল ভর্তি দর্শকদের দৃষ্টি কেড়েছে। জীবনের গল্পগুলোতে আশফাকেরাই যেনো আসল হিরো। সিনেমার শেষ পর্যন্ত দর্শকের দৃষ্টি ছিল আশফাকের দিকে।
‘অচেনা হৃদয়’ ছবির মাধ্যমে ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে নায়ক এ বি এম সুমনের। অভিনয়ে যাত্রা শুরু করেন মডেলিংয়ের মাধ্যমে। মার্শাল আর্টে দক্ষ সুমন তাঁর সুঠাম দেহ ও আকর্ষণীয় চেহারার কারণে দ্রুত নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। আড়ং, ইজিসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসের বিলবোর্ডে তিনি পরিচিত মুখ। এছাড়া বিভিন্ন টেলিভিশন বিজ্ঞাপন ও নাটকে কাজ করেছেন সমানতালে। সবমিলিয়ে এ বি এম সুমনের বৃহস্পতি এখন তু্ঙ্গে।
একুশে টেলিভিশন (ইটিভি) অনলাইনের একান্ত সাক্ষাৎকারে এ বি এম সুমন বললেন সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ঢাকা অ্যাটাক নিয়ে, সেই সঙ্গে নিজের ভালোলাগা নিয়ে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন- সোহাগ আশরাফ
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : ভাই কেমন আছেন? অনেক ব্যস্ত সময় কাটছে মনে হয়?
এ বি এম সুমন : জি, ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন? সারাদিন একটু ব্যস্ত ছিলাম।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : আমিও ভালো আছি।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : ঢাকা অ্যাটকের সাফল্য কেমন উপভোগ করছেন?
এ বি এম সুমন : ভালোই। অনেকেই ম্যাসেজ দিচ্ছে। ফেসবুকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। দেখা হলে তাদের অনুভুতি শেয়ার করছে। সব মিলিয়ে ভালো সাড়া পাচ্ছি।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : ঢাকাই সিনেমায় এই সাফল্য অব্যাহত রাখতে হলে কি কি করা জরুরী বলে মনে করেন?
এ বি এম সুমন : যেকোনো চলচ্চিত্রে সাফল্য পেতে সবার প্রথম একটা ভালো গল্প নির্বাচন করা জরুরী। গল্পটা হতে হবে মানুষের গল্প, জীবনের, জীবনবোধের। আমাদের সমাজের গল্প। এরপর নির্মাণটাকে গুরুত্ব দিবো। নির্মাতা যদি তার নির্মাণশৈলীর মাধ্যমে গল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দর্শকদের ধরে রাখতে পারেন তবেই ভালো কিছু সম্ভব। অভিনেতা যদি চরিত্রের শতভাগ দিতে পারে তবেই একটা সিনেমা পূর্ণতা লাভ করে।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : সাদা পাঞ্জাবি পরা সুমন (আশফাক) আর স্ত্রী নওশাবার রোমান্টিসিজম ছিলো উপভোগ্য। সিনেমার চরিত্রে আশফাককে দেখে অনেকেই তার প্রেমে পড়ে গেছেন। দর্শকদের এই ভালোবাসায় আপনার মন্তব্য কি?
এ বি এম সুমন : আসলে বাংলাদেশের মানুষ অনেক বেশি আবেগ প্রবণ। তারা অল্প কিছু দিলে অনেক বেশি দেয়। আমরা যতটুকু না দর্শকদের দিতে পেরেছি দর্শক আমাদের তার চেয়ে অনেক বেশি ভালোবাসা দিয়েছে। দর্শকদের ভালোবাসায় আমি সিক্ত, বিমোহিত। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ ও চিরঋনী।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : অনেকের কাছে আপনিই পুরো সিনেমার হিরো। এর আগেও নায়ক হিসেবে আপনাকে দর্শক দেখেছে। তবে ঢাকা অ্যাটাকের পর আপনি দেশের মানুষের কাছে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। আগামীতে কি একক ভাবে হিরো হিসেবে দর্শক আপনাকে দেখতে পাবে?
এ বি এম সুমন : হ্যাঁ। অবশ্যই দেখবে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু সিনেমায় কাজ করেছি। অনেকগুলোতে আমি নাম ভূমিকায়ও অভিনয় করেছি। যেমন শফিকুল ইসলাম খান মিঠুর‘অচেনা হৃদয়’ (যা মুক্তি পেয়েছে), তানিম রহমানের ‘আদি’, এ ছবির অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছি। সৈয়দ জাফর ইমামীর অ্যাকশন ও থ্রিলার ঘরানার ‘রুদ্র দ্য গ্যাংস্টার’, নির্মাতা সোহেল আরমানের ‘ভ্রমর’। এছাড়া বেশ কিছু কাজ শুরু করেছি।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : দর্শকদের মধ্যে ঢাকা অ্যাটাক নিয়ে একটা প্রশ্ন ছিলো আপনাদের চুল নিয়ে…
এ বি এম সুমন : দুই বছর ধরে ‘ঢাকা অ্যাটাক’-এর শ্যুটিং হয়েছে। প্রথম লটে শুটিং করে মাঝে বেশ কিছু দিন বন্ধ ছিলো। অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে এমনটা হয়েছিলো। তাই পরিকল্পনামাফিক নির্ধারিত সময়ে এর কাজ শেষ করা যায়নি। তবে আমার মাথায় হেলমেট থাকায় কিছুটা রক্ষা পেয়েছি। শুভর (আরেফিন শুভ) চুলটা বেশি চোখে পরেছে। আসলে দীর্ঘ বিরতির কারণে আমরা অনেকগুলো সিনেমায় কাজ শুরু করি। অন্য পরিচালকদের কথাটাও মাথায় রাখতে হয়েছে। মূলত এ কারণে হেয়ার স্টাইলের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : আপনার অভিনয় জীবনের শুরুটা কীভাবে?
এ বি এম সুমন : ‘অচেনা হৃদয়’ ছবির মাধ্যমে ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। তবে এর আগে মডেলিং, টেলিভিশন বিজ্ঞাপন ও নাটকে কাজ করেছি।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : ব্যাক্তিগত জীবনে অভিনয় ছাড়া অন্য কোনো পেশার সঙ্গে কি জড়িত আছেন?
এ বি এম সুমন : এ মুহুর্তে শুধুই অভিনয় নিয়ে ভাবছি। তবে আগামীতে ভিন্ন কিছু করার পরিকল্পনা আছে।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : ঢাকা অ্যাটাক সিনেমার শুটিং চলাকালে কোনো একটা মজার ঘটনা বা অভিজ্ঞতার কথা যদি বলতেন…
এ বি এম সুমন : অভিজ্ঞতা তো অনেকই আছে। আমাদের শুটিং করতে বেশ পরিশ্রম করতে হয়েছে। পাহাড়ে ওঠা, জঙ্গলে পানির মধ্যে হাটা, ভারি পোশাক পড়ে অভিনয় করা ইত্যাদি। তবে একটা বিষয় আমাকে খুব প্রেরণা দেয়। আমার অভিনয় শেষে পরিচালক দীপংকর দীপন ভাই এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলেন। এই যে ভালোবাসা, কাজের মূল্যায়ন- অভিনেতা হিসেবে অনেক বড় পাওয়ার।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : যদি বলা হয়-অভিনেতা এবিএম সুমন অথবা সোয়াত টিমের ইনচার্জ আশফাক দুটি মধ্য কোনটি বেছে নিবেন?
এ বি এম সুমন : কোনোটি না। আমি মানুষ হয়ে থাকতে চাই। মানুষ-ই আসল পরিচয়।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন : একুশে টেলিভিন অনলাইনের পক্ষ থেকে অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
এ বি এম সুমন : একুশে টেলিভিশনের পাঠক-দর্শকদেরও অনেক ধন্যবাদ। আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। আর হ্যাঁ; আগামী ২৬ অক্টোবর সকালে হয়তো একুশে টেলিভিশনে দর্শক আমাকে দেখতে পাবে। কথা হবে সবার সঙ্গে। ভালো থাকবেন।
এস এ / এআর /