ঢাকা, শুক্রবার   ১০ জানুয়ারি ২০২৫

সীমান্তে ফের ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের চেষ্টা বিএসএফের, বিজিবির বাধা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:০৪, ৯ জানুয়ারি ২০২৫

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে ধবলসূতী সীমান্তে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে শূন্য রেখা বরাবর ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের চেষ্টার চালায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের বাধায় কাজ গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয় বিএসএফ।

ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের চেষ্টা ঘটনা ঘটে গত মঙ্গলবার বিকেলে। পরদিন বুধবার স্থানীয়রা বিষয়টি দেখতে পেয়ে বিজিবিকে খবর দেন। খবর পেয়ে রংপুর ৬১ বিজিবি (তিস্তা-২) ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লোহার বৈদ্যুতিক খুঁটি ও খুঁটির সঙ্গে স্থাপিত যন্ত্রটি দেখতে পায়। কোনোকিছু না জানিয়ে রাতের অন্ধকারে শূন্যরেখার মধ্যে এসব স্থাপনের প্রতিবাদ জানায় বিজিবি। পরে তাদের তীব্র প্রতিবাদে তা সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় বিএসএফ।

বিষয়টি গতকাল বুধবার রাতে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন বিজিবির রংপুর ৬১ ব্যাটালিয়নের (তিস্তা-২) অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল শেখ মুহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম।

বিজিবি ও স্থানীয়রা জানান, গত মঙ্গলবার রাতে পাটগ্রামের গাটিয়ারভিটা সীমান্তের প্রধান পিলার ৮২৯ নম্বরের ২ নম্বর উপপিলারের ওপারে শূন্যরেখার ৫০ গজ ভেতরে ভারতের কোচবিহার ৯৮ বিএসএফের ব্যাটালিয়নের ফুলকাডাবরী ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা সে দেশের নির্মাণ শ্রমিকদের নিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও যন্ত্র স্থাপনের কাজ শুরু করে। খবর পেয়ে পরেরদিন বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে বিজিবি বিএসএফ সদস্যদের নিকট তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত বৈদ্যুতিক খুঁটি ও যন্ত্র সরিয়ে নিতে বলে। এ সময় পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে চিঠিও দেয়া হয়।

পরে ওই সীমান্ত পয়েন্টে সন্ধ্যায় বিএসএফ-বিজিবির মধ্যে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ২০ মিনিটের বৈঠকে ভারতের পক্ষে ছয় সদস্যর বিএসএফের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নেতৃত্ব দেন ইন্সপেক্টর জিতেন্দ্র সিং। বাংলাদেশের পক্ষে ছয় সদস্যর নেতৃত্ব দেন সুবেদার মাহবুবর রহমান। বৈঠকে কোনোকিছু না জানিয়ে রাতের অন্ধকারে শূন্যরেখার মধ্যে খুঁটি ও যন্ত্র স্থাপন করার প্রতিবাদ জানায় বিজিবি। এ সময় বিএসএফকে শূন্যরেখার মধ্যে কোনোকিছু নির্মাণ বা স্থাপনে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন মেনে চলার আহ্বান জানায় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনী। স্থাপিত খুঁটি ও যন্ত্র সরিয়ে নিতে আহ্বান জানালে সরিয়ে নেয় বিএসএফ।

বিজিবি রংপুর ৬১ ব্যাটালিয়নের (তিস্তা-২) অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল শেখ মুহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম সাংবাদিকদের বলেন, বিএসএফ সদস্যরা জানিয়েছে তাদের চা বাগানে নাকি বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হয়, এজন্য যন্ত্র ও খুঁটি স্থাপন করেছিল। আমরা স্পষ্ট জানিয়েছি শূন্যরেখার মধ্যে আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তি অনুযায়ী কোনো কিছু স্থাপনা করার সুযোগ নেই। না জানিয়ে করা যাবে না। এ নিয়ে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়েছে। তারা নির্মিত স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছে। চুপিসারে আর যেন না করতে পারে সেজন্য সর্তক দৃষ্টি রাখা হয়েছে।

এরআগে চলতি মাসের ১ জানুয়ারি একই উপজেলার দহগাম ইউনিয়নের সরকারপাড়া সীমান্তে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) শূন্যরেখা বরাবর ভারতের অরুণ ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যসহ নির্মাণ শ্রমিকরা। কাঁটাতারের বেড়া ও ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের কাজ শুরু করার চেষ্টা চালায়। এ সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বিজিবি সদস্যদের তীব্র প্রতিবাদ ও বাধায় পিছু হটে বিএসএফ সদস্যরা।

এমবি


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি