সুগন্ধি ব্যবহারের নিয়ম
প্রকাশিত : ১৮:০৫, ৯ আগস্ট ২০১৭ | আপডেট: ১২:৪৩, ১০ আগস্ট ২০১৭
স্নিগ্ধ ভোর, তপ্ত দুপুর, এমনকি বৃষ্টি বিকেলেও সুগন্ধির ব্যবহার অপরিহার্য। দিন-রাতের কর্মব্যস্ততা আর ছোটাছুটিতে নিজেকে সতেজ রাখতে সুগন্ধির জুড়ি নেই। কাজ শেষে বাড়ি ফিরে গোসল শেষে নিজেকে সতেজ রাখতে সুগন্ধির ব্যবহার জরুরি। বন্ধুদের আড্ডায় কিংবা অফিস মিটিংয়ে আপনার সুগন্ধির সুবাস অন্যকে আকৃষ্ট করবে। আপনার ব্যাক্তিত্বকে তোলে ধরবে।
কাজের প্রয়োজনে হরহামেশাই আমাদের ঘরের বাইরে যেতেই হয়। সাজের অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে আমরা সুগন্ধি কমবেশি সবাই ব্যবহার করে থাকি। আর আমাদের ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় এই সুগন্ধি। আবার আপনার সুগন্ধি অন্য কারো বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে কি না সেদিকে খেয়াল রাখাও জরুরি। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সুগন্ধি আপনার ব্যক্তিত্ব প্রকাশে বাধা দেয়। তাই সুগন্ধি ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটু সচেতন হয়ে কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। সুগন্ধির সঠিক ব্যবহার জানলে এটি যেমন আপনার ব্যাক্তত্ব ফুটিয়ে তোলবে তেমনি মনে এনে দেবে সতেজতা। লাইফস্টাইল বিষয়ক ওয়েবসাইট অ্যাবাউটে সুগন্ধি ব্যবহারের আদবকেতার কিছু দিক তুলে ধরা হয়েছে।
জেনে নিন সুগন্ধি ব্যবহারের কিছু নিয়ম :
*জায়গা বুঝে সুগন্ধি নির্বাচন করুন। কোথাও যাওয়ার আগে বুঝে নিন সেখানে কেমন সুগন্ধি ব্যবহার করা ভালো;
*বদ্ধ স্থানে হালকা ধরনের সুগন্ধি এবং খোলা স্থানে কড়া সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন;
*অতিরিক্ত সুগন্ধি ব্যবহার করবেন না। এর ঘ্রাণে অন্য কারও সমস্যা হতে পারে। এমনকি সে অসুস্থও হতে পারে;
*আপানার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিলিয়ে সুগন্ধি ব্যবহার করুণ। আগে জানুন আপনার কোন ঘ্রাণ পছন্দ। মিষ্টি অথবা ফুলেল কোনোকিছু অথবা তীব্র ও ঝাঁঝালো কিছু, যাই হোক না কেন নিজের কথা চিন্তা করে নির্বাচন করুন;
*যে ব্র্যান্ডের সুগন্ধি আপনার পছন্দ সেটাই কিনুন। অন্যের পছন্দের ব্র্যান্ড না কেনাই ভালো;
*যে সুগন্ধির ঘ্রাণ অন্যের গায়ে ভালো লাগছে তা আপনার গায়ে ভালো নাও লাগতে পারে। তাই সুগন্ধি কেনার আগে নিজের ত্বকের ওপর পরীক্ষা করে দেখে নিন;
*সুগন্ধি কোথায় ব্যবহার করবেন সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। ভালো ঘ্রাণ পেতে চাইলে হাতের কবজি, কানের পিছনে এবং গলায় দিতে পারেন। তাহলে ঘ্রাণ বেশিক্ষণ স্থায়ী হবে;
*কর্মস্থলে খুব বেশি তীব্র ঝাঁঝের সুগন্ধি ব্যবহার না করাই ভালো। অন্য সহকর্মীরা বিরক্ত হতে পারে;
*অনেকই ঘামের মধ্যে সুগন্ধি ব্যবহার করে। এতে উৎকট গন্ধ তৈরি হয়। অন্যদেও কষ্টের কারণ হয়;
*কাপড়ে সুগন্ধি ব্যবহার করবেন না। এতে কাপরের সুতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে;
*শরীরে সুগন্ধি অনেকক্ষন স্থায়ী হয়;
*সুগন্ধি ব্যবহার না করে রেখে দিলে এর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। পুরনো সুগন্ধি ব্যবহার করে লোকজনের সামনে না যাওয়াই ভালো;
সুগন্ধি ব্যবহারের কিছু টিপস
* সুগন্ধি বাছাইয়ের সহজ সূত্র হলো, পোশাক অনুযায়ী সুগন্ধি ব্যবহার করুন। হালকা পোশাকে স্নিগ্ধ ঘ্রান। আর জমকালো পোশাকে একটু কড়া ঘ্রাণ ব্যবহার করতে পারেন;
* গোসলের সময় লোমকূপ খুলে যায়। এ কারণে গোসলের পরপরই পারফিউম ব্যবহার করা হলে লোমকূপ সুগন্ধ অনেকাংশেই টেনে নেয়। সুগন্ধি এ কারণে অনেকক্ষণ ধরে থেকে যায়;
* ত্বকের ধরনভেদে সুগন্ধির স্থায়িত্ব বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন-তৈলাক্ত ত্বকে সুগন্ধি বেশিক্ষন স্থায়ী হয়। আর শুষ্ক ত্বকে তাড়াতাড়ি চলে যায়;
* ত্বক থেকে চুলে সুগন্ধির ঘ্রাণ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়। ভালো ফল পেতে চিরুনিতে সুগন্ধি স্প্রে করে পুরো চুল একবার আচড়ে নিন;
* যেকোনো গয়না পরার আগে সুগন্ধি ব্যবহার করুন। অন্যথায় গয়নার রঙ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকবে;
* শুষ্ক এবং ঠান্ডা জায়গায় সুগন্ধি সংরক্ষণ করুন। অবশ্যই সরাসরি সূর্যালোক থেকে দূরে রাখুন;
*শরীরের পালস পয়েন্টগুলো পারফিউম দেয়ার আদর্শ জায়গা। কবজি, কনুইয়ের ভাঁজের অংশ, কলার বোন, বাহুমূলে, হাঁটুর পেছনে, পায়ের গোড়ালি, নাভির কাছে, কানের পেছনে পারফিউম লাগালে সেই গন্ধটা স্থায়ী হয় বেশ কিছু সময়। বেশ খানিকটা দূর থেকে চুলে পারফিউম স্প্রে করলেও বেশ ভালো ফল মিলবে। ব্যবহারের আগে নির্দিষ্ট স্থানে একটু পেট্রোলিয়াম জেলি বা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে সুগন্ধি দিন। এতে ত্বকের ভেতর পর্যন্ত শোষণ হয়ে সুগন্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে। বিশেষ করে শুষ্ক ত্বকে সুগন্ধি তুলনামূলক কম দীর্ঘস্থায়ী হয়।
*গরমের জন্য উপযুক্ত হালকা ও দীর্ঘস্থায়ী সুগন্ধি। ফ্রেশ ফ্রুটি, আইস কুল, ল্যাভেন্ডার, গোলাপ সুগন্ধি ব্যবহার করা যেতে পারে। স্পাইসি ও উড কালেকশন বেছে নিতে পারেন বৃষ্টির সময়টাতে। কিছু কিছু পারফিউম নির্দিষ্টভাবে ব্যবহার করা হয় রাত ও দিনের জন্য।
//এআর