সুদ হার কমেনি ক্রেডিট কার্ডে
প্রকাশিত : ১১:৩৯, ১৭ জুলাই ২০১৮ | আপডেট: ১২:১০, ১৭ জুলাই ২০১৮
দেশের শিল্প খাতে গতি আনতে সরকারের উদ্যোগে শিল্প ও প্রস্তুতকারক খাতের মেয়াদি ও চলতি মূলধন ঋণের সুদ ৯ শতাংশে নামিয়ে এনেছে ব্যাংকগুলো। কোনো কোনো ব্যাংক এসএমই ও নারী উদ্যোক্তাদের ঋণের সুদও কমিয়ে ৯ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও এই উদ্যোগ থেকে বাদ পড়েনি। ব্যাংকগুলোতে একেএকে সব ধরনের ঋণের সুদহার কমিয়ে আনা হলেও কমানো হয়নি ক্রেডিট কার্ডে ঋণের সুদহার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংকের সব ধরনের ক্রেডিট কার্ডের ঋণের সুদহার মাসিক ২ শতাংশ। অর্থাৎ এই ব্যাংকটির ক্রেডিট কার্ডধারীদের ঋণের বিপরীতে বছরে সুদ গুনতে হবে ২৪ শতাংশ হারে। এই ব্যাংকটি সমান মাসিক কিস্তির ঋণে কোনো সুদ আরোপ করে না।
বিদেশি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ভিসা ও মাস্টারসহ কয়েক ধরনের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। এই ব্যাংকটির ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকরা কার্ডের বিপরীতে কোনো ঋণ নিলে বছরে সুদ দিতে হবে ৩৬ শতাংশ।
ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের ঋণের বার্ষিক সুদহার ২৭ শতাংশ। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের ঋণের বার্ষিক সুদহার ২১ থেকে ২৩.৫০ শতাংশ (কার্ড ভেদে)।
যমুনা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে ১৫ শতাংশ, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ১৮ শতাংশ, ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে ২৪ শতাংশ, এবি ব্যাংকের ২৫ শতাংশ, আইএফআইসি ব্যাংকের ২৭ শতাংশ সুদ দিতে হচ্ছে ক্রেডিট কার্ডধারীদের।
ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ক্রেডিট কার্ড কোনো ঋণ পণ্য নয়। এটি একটি বিলাসী পণ্য। তা ছাড়া এটা দিয়ে কোনো গ্রাহককে ঋণ করতে বাধ্য করা হচ্ছে না। এটা মূলত কেনাকাটার জন্য দেওয়া হয়। এটা দিয়ে একজন গ্রাহক ৪৫ দিন পর্যন্ত বিনা সুদে ব্যাংকের টাকায় কেনাকাটা করতে পারে। কেউ যদি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ঋণ করতে চায় তাহলে তাকে একটু বেশি সুদ দিতে হবে। সারা বিশ্বেই ক্রেডিট কার্ডের সুদহার বেশি।
তিনি আরো বলেন, ব্যাংকগুলো অনেক ধরনের ঋণের সুদহার কমিয়েছে। তার পরও কোনো কোনো ঋণের সুদহার ১৮ থেকে ১৯ শতাংশ আছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, বিদ্যমান ঋণের মধ্যে যেটা সর্বোচ্চ হার সেই হারের সঙ্গে ৫ শতাংশ যোগ করে ক্রেডিট কার্ডের সুদহার নির্ধারণ করতে। ব্যাংকগুলো সেটাই করছে।
দীর্ঘদিন ধরেই ক্রেডিট কার্ডের ঋণের সুদহার অন্যান্য ঋণের থেকে বেশি। ক্রেডিট কার্ডের সুদহার সহনীয় মাত্রায় রাখার জন্য গত বছরের মে মাসে ক্রেডিট কার্ড নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ভোক্তা ঋণের সর্বোচ্চ সুদহারের সঙ্গে আরো ৫ শতাংশ যোগ করে ক্রেটিট কার্ডের ঋণের সুদহার নির্ধারণের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে পরে ব্যাংকগুলোর চাপে ওই বছরের আগস্টে ওই নির্দেশনা বদলে বিদ্যমান ঋণের মধ্যে সর্বোচ্চ সুদহারের সঙ্গে আরো ৫ শতাংশ সুদ যোগ করে ক্রেডিট কার্ডের ঋণের সুদহার নির্ধারণের সুযোগ দেওয়া হয়। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে এই নীতিমালা কার্যকর করতে বলা হয়।
আরকে//
আরও পড়ুন