সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের মজার স্কুলে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা
প্রকাশিত : ২৩:১০, ৯ নভেম্বর ২০১৮
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে ২০১৫ সালে শুরু হয় এইচ.এস.টিউ মজার স্কুলের পথচলা। দীর্ঘ তিন বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে স্কুলটি পরিচালিত হয়ে আসছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা ক্লাস নেয় তারা কোন রকম ভাতা বা বেতন পায় না। শুধুমাত্র সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মুখে হাসি ফুটাতে তারা একাজ করে থাকে ।মাঝে মধ্যে এজন্য তাদের অনেককে ক্লাস পরীক্ষা ছাড় দিতে হয়। এতো কিছুর পরেও তাদের মাঝে নেই বিন্দুমাত্র ক্লান্তি। এসব শিশুদের মাঝেই যেন তারা আনন্দ খুজে পান।
আজ শুক্রবার বিকাল ৪ টায় এইচ.এস.টিউ মজার স্কুলের তৃতীয় বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আবর্তন-২০১৮ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আবর্তন-২০১৮ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম-১ এ এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ভবেন্দ্র কুমার বিশ্বাস, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো.সফিউল আলম,ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. তারিকুল ইসলাম ও সহকারী পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রাজিব হাসান ও মজার স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবক বৃন্দ।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মজার স্কুলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ফাহিম ।
অনামিকা স্যানাল ও রাগীব হাসান সিফাত এর যৌথ সঞ্চালনায় শুরুতে মজার স্কুলের ক্ষুদে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক বৃন্দ অনুভুতি শেয়ার করেন । পরে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ভবেন্দ্র কুমার বিশ্বাস বলেন,যারা এই স্কুলে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছে তাঁরা আর যাই হোক চোর গুন্ডা হবে না ।আমি আমার ছাত্রদের চিনি! যারা আমার ছাত্র তাঁরা এই মজার স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা এটা অত্যন্ত আনন্দের একটা বিষয়।আমি তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই ।আমি বিশ্ববিদ্যলয় কর্তৃপক্ষকে তাদেরকে সকল ধরনের সহযোগিতার জন্য বলব ।
এইচ.এস.টিউ মজার স্কুলের সভাপতি ফাহিম জানান, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ও বর্ষের শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে পরিচালিত হচ্ছে স্কুলটি। এ তরুণ শিক্ষার্থীরা তাদের পকেট খরচ থেকে কিছু অর্থ বাঁচিয়ে সুবিধাবঞ্চিত এই শিশুদের বই, খাতা, কলম ও টিফিনের জন্য ব্যয় করছে। স্কুলটির শিক্ষক রয়েছে ৪০ জন। শিশু শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান দেয়া হয় এখানে। শিক্ষকরা পর্যায়ক্রমে সপ্তাহে ছয় দিনই ক্লাস নেন এই স্কুলে। প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চলে পথ শিশুদের ক্লাস। তবে শীতকালে ক্লাসের সময়সূচী কিছুটা এগিয়ে নিয়ে আসা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে মজার স্কুলে নিয়ে আসা হয়। হাবিপ্রবি স্কুলে অস্থায়ীভাবে ক্লাস নেয়া হয়। স্কুল ছুটির পর মজার স্কুলের ক্লাস শুরু হয়। বঞ্চনার শিকার কোন শিশু একবার মজার স্কুলে এলে আর ফিরতে চায় না। মজার স্কুলে আসা সব শিশু বিনামূল্যে বই, খাতা, কলম, রাবার, স্কেল, পেন্সিলসহ যাবতীয় শিক্ষা উপকরণ ও টিফিন সরবরাহ করা হয়। শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই নয়, মজার স্কুল শিক্ষার্থীদের মানসিক পরিশুদ্ধতার জন্য সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা এবং খেলাধুলার সুযোগও করে দেয়।
আরকে//
আরও পড়ুন