সোনালি ধানে কৃষকের ঈদ আনন্দ
প্রকাশিত : ১০:৫৪, ১৯ এপ্রিল ২০২৩
মাঠের পর মাঠ, গ্রাম থেকে গ্রামান্তর। যেদিকেই তাকানো যায়, শুধু সোনালি ধানের দোলা। কৃষকের চোখে-মুখে তাই রঙিন স্বপ্ন। এখন ধান তোলার ব্যস্ততা কৃষকদের ঘরে ঘরে। প্রায় ১৫দিন আগে নড়াইলে শুরু হয়েছে বোরো ধানকর্তন।
কৃষকেরা জানান, এ জেলায় ধানে কোনো রোগ তেমন দেখা যায়নি। তাই স্বাচ্ছন্দে আছেন কৃষক। সোনালি ধান কেটে ছেলে-মেয়েদের নতুন পোশাকসহ ঈদের কেনাকাটা করছেন অনেকে। প্রায় প্রতিটি কৃষকের ঘরে সোনালি ধানে ঈদ আনন্দ শুরু হয়েছে।
নড়াইলের নড়াগাতী থানার মাউলি গ্রামের জয়নাল হোসেন জানান, গত বছরের তুলনায় চাষাবাদ যেমন বেড়েছে, তেমনি ফলনও ভালো হয়েছে। সোনালি ধানের ভালো ফলনে কৃষকদের ঘরে ঈদ আনন্দ শুরু হয়েছে। বোরো ধান কেটে ঈদের নতুন পোশাক, সেমাই, চিনিসহ বিভিন্ন উপকরণ কিনছেন সবাই।
নড়াইল সদরের চাকই গ্রামের লায়েক বিশ্বাস, জিহাদ শেখ ও নূর হোসেন এবং রুখালী গ্রামের আকিদুল বিশ্বাস বলেন, প্রায় ১৫ দিন আগে ধানকাটা শুরু হয়েছে। নতুন ধান ঘরে তুলতে পেরে ঈদের আগে ঈদ আনন্দ শুরু হয়েছে। প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে ধান কাটতে কষ্ট হলেও নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে বুকটা আনন্দে ভরে উঠছে। ঝড়-বৃষ্টিমুক্ত থাকায় ধান কাটতে সুবিধা হচ্ছে। ঈদের পরে পুরোদমে ধানকাটা শুরু হবে।
কৃষি সমবায় সমিতি নড়াইল সদর উপজেলার সভাপতি আলী হায়দার লিটু বলেন, মোটা ধান প্রতিমণ এক হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চিকন ধান ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে অঞ্চল ভেদে দামের কিছুটা পার্থক্য আছে। ধানের দরপতন না হলে কৃষক লাভবান হবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নড়াইলের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, খাদ্যশষ্যে উদ্বৃত্ত জেলা নড়াইলে এ বছর ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ২৫ হেক্টর জমিতে বেশি চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। এদিকে, গতবারের তুলনায় ৮৫ হেক্টর জমিতে আবাদ বেশি হয়েছে।
অন্যদিকে, ২০২১ সালে নড়াইল জেলায় ৪৭ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৬২০ হেক্টর জমিতে আবাদ বেশি হয়েছিল। তিন বছরের তথ্যানুযায়ী দেখা যাচ্ছে, প্রতিবছরই নড়াইল জেলায় ধানের উৎপাদন বাড়ছে।
কৃষিবিদ দীপক কুমার রায় আরও জানান, নড়াইলে এক লাখ ৭৩ হাজার টন চালের চাহিদা রয়েছে। এক্ষেত্রে চাহিদার তুলনায় এক লাখ ৫৮ হাজার মেট্রিক টনের বেশি চাল উদ্বৃত্ত থাকে। আর মোট উৎপাদন ৩ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টনের বেশি।
এএইচ
আরও পড়ুন