ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

স্থবির হয়ে পড়েছে নতুন ভ্যাট আইন: সিপিডি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৪৬, ১০ জুলাই ২০১৭ | আপডেট: ২১:১৫, ১০ জুলাই ২০১৭

‘স্তবির হয়ে পড়েছে নতুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আইনের বাস্তবায়ন। তিনটি কারণে এ ভ্যাট আইন মুখ থুবড়ে পড়েছে। আগে থেকে কারণগুলো সমাধান করে ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নেওয়া হলে এমন হতো না।’ সোমবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার পর বাজেট পর্যবেক্ষণ নিয়ে মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, পরিচালক (সংলাপ) আনিসাতুল ফাতেমা ইউসুফ, গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নতুন আইনের পক্ষে সিপিডি। যদি ১২ শতাংশ একক ভ্যাট হার নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হতো; তবে নতুন আইনের এই পরিণতি হতো না। যে কারণে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এগুলো হলো প্রস্তুতির অসম্পূর্ণতা; রাজনৈতিক সহমতের অভাব এবং সামাজিক তাৎপর্যের প্রভাব। সিপিডি আরও বলেছে, একক ভ্যাট হার না থাকায় এতদিন যারা সুবিধা পেয়েছেন, নতুন আইনে তারা অসুবিধায় পড়তেন। আবার রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত অনেক ব্যক্তি এতদিন অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিষয়টি দুই দিক থেকে দেখতে হবে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, একদিকে টাকা বিদেশে চলে যাবে, অন্যদিকে সৎ করদাতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হবে—এটা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। টাকা পাচারকারীর নাম-পরিচয় জানার পরও যদি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হয়; আবার সৎ করদাতাদের ওপর করের জন্য চাপ সৃষ্টি করা—এতে ন্যায়বিচার হয় না। সৎ করদাতারা নিরুৎসাহিত হতে পারেন। এমনিতেই নির্বাচনের বছরে টাকা পাচার বৃদ্ধি পায়।

চলতি অর্থবছরে (২০১৭-১৮) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য কতটা অর্জিত হবে—এ নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে সিপিডি। সিপিডি বলছে, রাজস্ব আদায়ে ৪৩ হাজার কোটি টাকা থেকে ৫৫ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি হতে পারে। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নতুন ভ্যাটের প্লেন উড়তে পারেনি; মুখ থুবড়ে পড়েছে। নির্বাচনের পরে যাতে আবার শূন্য থেকে শুরু করতে না হয়, সে জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। তাই অনলাইন-ব্যবস্থাসহ অন্য প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। ক্র্যাশ ল্যান্ড করা প্লেন আবার উড়াতে হবে—এটাই মূল চেষ্টা হওয়া উচিত।

এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে বাজেটে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মূলধন জোগানে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার সমালোচনা করেছে সিপিডি। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেন, এই টাকা দেওয়া উচিত নয়। সিন্ধুর মধ্যে বিন্দুর মতো তা তলিয়ে যাবে। তিনি বলেন, নতুন ব্যাংকের পাশাপাশি প্রথম প্রজন্মের ব্যাংকও এখন সমস্যায় পড়েছে। ব্যাংকের অভ্যন্তরে সুশাসনের অভাব আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে নজরদারি করার কথা ছিল, তা হয়নি। রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকলে এ আবর্জনা পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। এখনই সংস্কার-প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত।

আরকে/ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি