ঢাকা, রবিবার   ০১ ডিসেম্বর ২০২৪

স্বর্গভূমি গড়তে চাই মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ

রাহুমা ইসলাম নাবা

প্রকাশিত : ১৪:৫৮, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২

প্রথমত এবং অবশ্যই আমি মনে করি, বাংলাদেশ একদিন ভালো মানুষের দেশ হবে, বিশ্বের কাছে আকাঙ্ক্ষিত, আকর্ষণীয় দেশের মর্যাদা লাভ করবে। এজন্য আমাদের শুদ্ধ মানুষ তৈরি করতে হবে। মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সৎ মানুষ থাকলেই স্বর্গভূমি হওয়া সম্ভব। আমরা যদি দেখি আমাদের যে প্রাকৃতিক সম্পদ, উর্বর মাটি ও দক্ষ পরিশ্রমী মানুষ আছে, পৃথিবীর আর কোথাও তেমনটি নেই।
দ্বিতীয়ত, আমাদের দেশের নব্বই শতাংশ মানুষ মুসলমান এবং ধার্মিক। এ বিশাল জনগোষ্ঠী যদি সঠিকভাবে ধর্মচর্চা করে তাহলে কোনো অনৈতিক কাজ সে করতে পারে না। নীতি-নৈতিকতার সকল বিষয়ে পবিত্র কোরান শরীফে স্পষ্ট নির্দেশনা আছে। অর্থাৎ একজন মানুষ কী করতে পারবে বা কী করতে পারবে না, সকল বিষয়ে সেখানে আলোকপাত করা হয়েছে। এর সঙ্গে যদি বলি, এ পবিত্র কোরান যার মাধ্যমে এসেছে, নবী করিম (সা.)’র জীবনী চর্চা করলে বা অনুসরণ করলেই ভালো মানুষের দেশ বা ভালো জাতির দেশ হতে খুব বেশিদিন সময় লাগবে না।
এখানে হয়তো কথা আসতে পারে, আমাদের দেশে এখনও তো মুসলমানরা পবিত্র কোরান এবং নবী করিম (সা.)কে জানেন, মানেন তাহলে এতো অনিয়ম, অন্যায় ভেজাল কেন হয়? এ বিষয়ে আমি কোনো মনগড়া মন্তব্য করতে আগ্রহী নই। আমি শুধু কোরআনের নির্দেশনা বা নবী করিম (সা.) এর পথচলা এবং জীবনী দেখেই আমার মতামত প্রকাশ করছি। 
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সঠিক কোরান চর্চা, নবী (সা.) এর চর্চা করে কোনো জাতি বা দেশ পিছিয়ে থাকতে পারেনা। প্রত্যেক মুসলমান মানুষ নিঃসন্দেহে পবিত্র কোরানের প্রতিটি আয়াত বিশ্বাস করে, এখন সেসব আয়াতের নির্দেশনা জীবন যাপনে এনে কাজ করলেই সকল চাওয়া-পাওয়া পরিপূর্ণ হয়ে যায়। আমরা কোরান বা নবী বিশ্বাসীরা দুনিয়া এবং পরকালে ভালো থাকতে চাই। অর্থাৎ এখানে সুখে-শান্তিতে থাকব এবং মৃত্যুর পর বেহশতে যাব। এখন কীভাবে দুনিয়াতে ভালো থাকব এবং কী করলে বেহেশত পাওয়া যাবে পবিত্র কোরানে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা দেওয়া আছে।
এখানে সূরা বাকারার শুরু থেকে তুলে ধরছি...
আলিফ-লাম-মীম। ২. এই সেই কিতাব, যাতে কোনো সন্দেহ নেই। এই কিতাব আল্লাহ-সচেতনদের পথপ্রদর্শক। ৩. আল্লাহ-সচেতনরা গায়েবে (মানুষের সীমাবদ্ধ জ্ঞানে বোধগম্য না হওয়া সত্ত্বেও অদৃশ্য বাস্তবতায়) বিশ্বাস করে, নামাজ কায়েম করে, প্রাপ্ত রিজিক থেকে অন্যের জন্যে ব্যয় করে (অর্থাৎ নিয়মিত দান করে)। ৪-৫. আর (হে নবী!) তোমার ও তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি যা নাজিল হয়েছে তা তারা বিশ্বাস করে। সেইসাথে বিশ্বাস করে আখেরাতে (প্রতিটি কাজের জবাবদিহিতায়)। তারাই তাদের প্রতিপালকের নির্দেশিত সঠিক পথের অনুসারী এবং তারাই সফলকাম।
মুসলমানদের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। বিশ্বের সর্বকালের সেরা মহামানব হিসেবে মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে প্রশ্নাতীতভাবে স্বীকৃত। ইন্টারনেট জায়ান্ট ‘গুগল’ ডটকমের র‌্যাংকিংয়েও বিশ্বসেরা মানুষ হিসেবে তালিকায় প্রথম স্থানে তারই নাম রয়েছে।
গুগলে best man, best human, best human in the world, 'who is the best man in the world- ইত্যাদি লিখে সার্চ করলে প্রথমেই চলে আসে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর নাম।
মাইকেল হার্টসের লেখা ‘বিশ্ব সেরা ১০০ মনীষী’ গ্রন্থে প্রথম স্থানেই রয়েছে হযরত মুহাম্মদ (সা.)’র নাম। ১৯৭৮ সালে প্রকাশিত ওই বইটি বিভিন্ন মহলে ব্যাপক হইচই ফেলে দেয়।
এখন যদি বলি বিশ্বের এক নম্বর ভালো মানুষ যদি আমাদের নবী (সা.) হয়, তাহলে আমরা ভালো মানুষ না হয়ে যাব কোথায়?
এখন আমাদের প্রয়োজন কোরানের নির্দেশ, নবীর পথচলা স্পষ্ট, সতর্ক, সহজভাবে জীবনযাত্রায় নিয়ে আসা। অর্থাৎ আমরা জীবনযাপনে ইসলাম ধর্ম মেনে চলব, কোরানে যেভাবে বলেছে এবং নবী যেভাবে চলেছেন, অর্থাৎ আমাদের সবকিছুতেই আচার-আচরণ, বিশ্বাস-ভাবনায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে সত্যিকারের ইসলামী বিধিনিষেধ ফুটে উঠবে।
লেখক: কলেজ শিক্ষার্থী


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি