ঢাকা, সোমবার   ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্বাধীনতার পর দ্বিতীয় দফায় নিষিদ্ধ জামায়াত

আদিত্য মামুন

প্রকাশিত : ১১:৩৭, ২ আগস্ট ২০২৪

স্বাধীনতার পর দ্বিতীয় দফায় আবারও নিষিদ্ধ হলো জামায়াত। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে, বাংলাদেশকে অস্বীকার এবং ধর্মের নামে রাজনীতিই ছিল জামায়াতের অস্ত্র। সম্প্রতি কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস, সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ, ষড়যন্ত্র, উস্কানি এবং একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে নিষিদ্ধ করা হলো জামায়াতকে। 

১৯৪১ সালের ২৫শে আগস্ট ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবে জন্ম জামায়াতের। দেশভাগের পরও বাংলাকে পাকিস্তানি মতাদর্শে দেখতে থাকে আবুল আলা মওদুদীর প্রতিষ্ঠিত জামায়াত। পাকিস্তানি সরকারের সুবিধাভোগি তাবেদারিই ছিল তাদের রক্তে। 

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দোসর হিসেবে নীল নকশা করে জামায়াত।  তাদের সহযোগি সংগঠন তৎকালীন ছাত্র সংঘ, আলবদর, আল শামস, রাজাকার ও শান্তি কমিটি গঠনের মাধ্যমে মুক্তিকামি জনতা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ধান দেয়ার পাশাপাশি লুটপাট আর জ্বালাও-পোড়াও এর মাধ্যমে ধ্বংসাত্মক, বিভীষিকাময় পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল।

স্বাধীনতার পর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেন জাতির পিতা। তবে  ৭৫-এর পর আবারো তাদের রাজনীতির দরজা খুলে দেন জেনারেল জিয়াউর রহমান। 

তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৯১ সালে বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয় চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধিরা। চলতে থাকে দেশব্যাপী ভিন্নমত ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের খুন-গুম। 

পরবর্তীতে ২০০১ সালে বিএনপির সাথে জোট করে সরকারের মন্ত্রীও হন নিজামি-মুজাহিদ। ৩০ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত দেশে জাতীয় পতাকাবাহি গাড়ি হাকিয়ে বেড়ায় জামায়াতের অন্তত ১৮ জন এমপি! 

জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় জঙ্গিবাদের চাষ হয় বাংলাদেশে। গজিয়ে ওঠে জামায়াতুল মোজাহেদিন বা জেএমবি। ৬২ জেলায় সিরিজ বোমা হামলা, ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা, ছায়ানটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে হামলা, খুলনার মসজিদে বোমা হামলাসহ ২০০৭ সালে ঢাকাসহ দেশব্যপি জামায়াতের নারকীয় তাÐব দেখে বিশ্ববাসী।

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের মুখোশ খুলে যায় ২০০৮ সালের নির্বাচনে। ২০০৯ সালে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জেরে তাদের নিবন্ধন বাতিল করে আদালত।

এরপর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হলে একে একে ফাঁসিতে ঝোলানো হয় শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের। এবারও ফুঁসে ওঠে জামায়াত-শিবির। দেশব্যাপী আগুন সন্ত্রাসে হত্যা-খুনে রক্তাত্ব হয় বাংলাদেশ। 

২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচন থেকে নির্বাসিত হয়ে দীর্ঘদিন গা-ঢাকা দিলেও আবারও গুলশানের হলি আর্টিসানের সন্ত্রাসী হামলার পর চোরাগোপ্তা হামলা, ২০১৮ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নেপথ্যে থেকে অরাজকতা সৃষ্টি করে তারা।

সবশেষ কোটাবিরোধীদের আন্দোলনের নেপথ্যে সরকার পতনের ষড়যন্ত্রে থেকে ধ্বংশত্মক কার্যক্রম চালায় জামায়াত। 

কেবল বাংলাদেশেই নয়--পাকিস্তান এবং ভারতেও নিষিদ্ধ হয়েছে জামায়াতে ইসলামি। 

এমএম//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি