ঢাকা, শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় শিক্ষিকা বরখাস্ত

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার কবজায় উইলস লিটল ফ্লাওয়ার কলেজ

মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ

প্রকাশিত : ১৫:৪৮, ১২ অক্টোবর ২০১৯ | আপডেট: ১৭:৫৫, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯

উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আরিফুর রহমান টিটু

উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আরিফুর রহমান টিটু

বর্তমানে একুশে টেলিভিশন’র নিজস্ব প্রতিবেদক। তিনি দৈনিক ইত্তেফাক, ডেইলি নিউএইজ, এনটিভি’র কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ছিলেন ও বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি’র নেতৃত্ব দিয়েছেন। একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৭’তে প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘আসমত আলীর অনশন’ প্রকাশিত হয়। তার বহু গবেষণা প্রবন্ধ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থাপিত হয়েছে।

প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন আরিফুর রহমান টিটু। দুই বছর আগে প্রভাব খাটিয়ে ভাগিয়ে নিয়েছেন রাজধানীর রমনায় খ্যাতনামা উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির পদ। এরপরও ক্ষান্ত হননি টিটু। স্কুল ও কলেজটিতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে দুর্নীতিসহ নানা অপকর্মের নায়কে পরিণত হয়েছেন তিনি। 

অভিযোগ রয়েছে- আর্থিক দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, অস্ত্রের মুখে ভয় ভীতি প্রদর্শন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় শিক্ষকদের বরখাস্ত করাসহ নানা অপকর্ম করছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওই নেতা। 

এ নিয়ে গত মে মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও অদৃশ্য কারণে তদন্ত প্রতিবেদন এখনও দাখিল করা হয়নি।

জানা যায়, টিটুর সঙ্গে মিলে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশিকুর রহমান নাদিম, পর্ষদের দাতা সদস্য মোজ্জাম্মেল হোসেন ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল হোসেন নানা দুর্নীতি করছেন। এছাড়াও আলোচিত ক্যাসিনো কারবারে টিটু সরাসরি জড়িত বলে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।

টিটুর নানা অপকর্মের বিষয়ে একুশে টেলিভিশনকে জানিয়েছেন উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষক, অভিভাবক এবং স্থানীয়রা। এছাড়াও তার বিভিন্ন অনিয়মের বেশ কিছু কাজগপত্রও পাওয়া যায়। 

নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক শিক্ষক জানান, পরিচালনা পর্ষদের (জিবি) সভাপতি আরিফুর রহমান টিটুসহ তার দুই ভাই প্রতিষ্ঠানটিতে দখলদারিত্ব কায়েম করেছেন। কেনাকাটার নামে প্রতিষ্ঠানের টাকা লোপাট এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের যখন-তখন বরখাস্ত ও হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন তারা। বিশেষ করে শিক্ষক-কর্মচারীদের বরখাস্ত করা একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। গত দুই বছর আগে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা টিটু প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ভেঙ্গে পড়েছে এর প্রশাসনিক ব্যবস্থা। তার একচ্ছত্র রামরাজত্বে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির শিকার হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। শিক্ষকদের মধ্যে কেউ তার এ দুর্নীতির প্রতিবাদ করলেই বরখাস্ত এবং কারণ দর্শানোর নোটিশের সম্মুখীন হয়েছেন।

তিনি জানান, বর্তমানে স্কুল ও কলেজটিতে ৩ শতাধিক শিক্ষক রয়েছেন। এ অবস্থায় শিক্ষক সঙ্কট না থাকলেও সম্প্রতি ২২ জন শিক্ষকসহ ৩০ জনকে নিয়োগ দিয়েছে পর্ষদ। যাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫-১০ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। নিয়োগ প্রাপ্তদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে শিক্ষকদের। 

‘টিটু অধ্যক্ষের চেয়ারে বসেন এবং স্কুলের যাবতীয় সিদ্ধান্ত তিনি নিজেই নেন। তার সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্কুলে বসেই করেন’ বলেন এই শিক্ষক।


উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফটক

অভিযোগ রয়েছে, পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও তার সহযোগীদের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করায় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় কলেজের প্রভাতী শাখার ইংরেজি মাধ্যমের প্রধান নাজমা হোসেন লাকীকে গত ৭ আগস্ট দুই মাসের জন্য বরখাস্ত করা হয়। দুই মাস পর সম্প্রতি তিনি যোগদানের জন্য কলেজে গেলে তাকে কলেজে প্রবেশ বাঁধা দেওয়া হয় বলে একুশে টেলিভিশনকে অভিযোগ করেন লাকী। বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করার কারণেই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল বলে দাবি করেন লাকী। 

গত ২৪ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে পরিচালনা পর্ষদের নানা অনিয়ম তুলে ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন নাজমা হোসেন লাকী। 

পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি টিটুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লাকী বলেন, ‘অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার পর গভর্নিং বডির সভাপতি আমাকে নানাভাবে হুমকি ধামকি দেয়। পরে গত ২৪ জুন থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। এরপর আমাকে কোনো কারণ ছাড়াই সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।’ 

পরিচালনা পর্ষদের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ করার পরও কোন প্রতিকার পাননি বলে জানান লাকী। বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে প্রতিবাদ করায় মাধ্যমিক শাখার বাংলা মিডিয়ামের এক শিক্ষককে জীবননাশের হুমকিও দেয় টিটুর বাহিনী বলে অভিযোগ রয়েছে। 

লাকী জানান, এখন পর্যন্ত ১৪ শিক্ষক-কর্মচারীকে বরখাস্ত করেছেন বর্তমান সভাপতি। তাদের মধ্যে ১২ জনের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিয়ে পুনর্বহাল করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ইনক্রিমেন্টের বকেয়া এবং বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও  তা দেওয়া হচ্ছে না। স্কুলের প্রাথমিক শাখায় ‘যোগ্যতাহীন’ ৩০ জন শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ তুলে লাকী বলেন, ‘তারা সব এইচএসসি পাস।’ টিটু প্রাথমিক শাখায় তার ভাইয়ের মেয়েকে শিক্ষক হিসেবে ‘অবৈধ নিয়োগ’ দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। 

কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারীকে বরখাস্ত করার পর যারা শিক্ষকতায় বহাল আছেন তাদের বেতন থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে টাকা কেটে নেওয়ার অভিযোগ করেন কয়েকজন শিক্ষক।

এছাড়া ১৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে গেলেও তাদের অবসর ও কল্যাণ ভাতার কোনোটিই দেওয়া হচ্ছে না। অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে একুশে টেলিভশনকে টেলিফোনে এসব অভিযোগের কথা জানান।

ব্যক্তিগত কমিশন প্রাপ্তির আশায় প্রতিষ্ঠানের আড়াই কোটি টাকার একটি  ফিক্সড ডিপোজিট রেট (এফডিআর) ব্যাংকের এ প্রাতিষ্ঠানের হিসাব থেকে অন্য ব্যাংকে হস্তান্তর করে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। পর্ষদের সভাপতি আরিফুর রহমান টিটু ও অধ্যক্ষ আবুল হোসেন স্বাক্ষরিত হস্তান্তর চেক ও আবেদনের অনুলিপি একুশে টেলিভিশনের হাতে এসেছে। এফডিআর ভেঙ্গে তারা ব্যাংক হিসেবের সুদ (লভাংশ) নিজেরা ভোগ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে কলেজের ১২ কোটি টাকার হিসাব নেই বলেও এক সূত্রে জানা যায়। 

অপর এক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগ না দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে প্রতিষ্ঠান চালানো হচ্ছে। জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘণ করে আবুল হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয়েছে যা বিধি মোতাবেক হয়নি। নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে পর্ষদের সভাপতি টিটুর ইচ্ছায় চলছে এ নামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। সভাপতি তার ছোট ভাই ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আশিকুর রমহান নাদিম ও আরেক ভাই বিএনপি নেতা আনিসুর রহমান লাভলু তাদের দলবল নিয়ে প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র বহন করে ঘোরাঘুরি করেন। যখন-তখন অস্ত্র প্রদর্শন করে শিক্ষক-কর্মচারীদের গালিগালাজ ও জীবননাশেরও হুমকি দিয়ে থাকে। 

এছাড়া কলেজ ক্যাম্পাসে তারা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে বলে স্থানীয় কয়েকজন জানান। 

কাঠামো অনুযায়ী স্কুল ও কলেজের পরিচালনা পর্ষদে ১১ সদস্য থাকেন। এর মধ্যে অধ্যক্ষ পদাধিকারবলে সদস্য সচিব এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের অভিপ্রায়ে সদস্যদের একজনকে সভাপতি মনোনয়ন দেয় শিক্ষাবোর্ড। বাকি ৯ সদস্যের মধ্যে দাতা সদস্য, শিক্ষক প্রতিনিধি এবং অভিভাবক প্রতিনিধি থাকেন। 


কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল হোসেন

অভিভাবক ও শিক্ষকরা আরও অভিযোগ করেন, গত ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে বিজয়ী হন টিটু। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আবুল হোসেন আধিপত্য বিস্তার করে নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করে পর্ষদে অন্তত ৯ জনকে এনেছেন যার বেশির ভাগই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তাদেরকে নানান হুমকি-ধমকিও দেয়া হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী স্থানীয় সংসদ সদস্য (ঢাকা-৮) রাশেদ খান মেনন শিক্ষাবোর্ডে সভাপতি পদের জন্য টিটুসহ তিনজনের নাম প্রস্তাব করেন। প্রস্তাব করার দুই একদিনের মাথায় শিক্ষাবোর্ডে প্রভাব খাটিয়ে তা অনুমোদনও করিয়ে আনেন টিটু।

পরিচালনা পর্ষদের ঐ নির্বাচনে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন লাকী। তিনি জানান, ভোটের দিন আমাকে কলেজে প্রবেশও করতে দেওয়া হয়নি। ভোটার তালিকায় আমার নাম ছিল তারপরও কলেজে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তবে লাকীর এমন অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ আবুল হোসেন বলেন, ‘তাকে ভোট প্রয়োগে বাধা দেওয়া হয়েছিল কিনা তা সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশন বলতে পারবে।’

এদিকে গত ২৬ মে অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) উপ-পরিচালক নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের অনিয়মের বিষয়ে গত ৩০ মে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা বলা হলেও এখনও প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি। 

তদন্তের অগ্রগতি ও প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়ে জানতে চাইলে গত বৃহস্পতিবার নাসির উদ্দিন একুশে টেলিভিশনকে বলেন, ‘আমাদের তদন্তের কাজ শেষ। আমরা খুব দ্রুতই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করব।’ 

কবে নাগাদ এ প্রতিবেদন দাখিল করা হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হতে পারে।’ 

তদন্তের সময় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছিল কিনা এমনটি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সভাপতি ও অধ্যক্ষের কাছে লিখিত তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক তথ্য তার দেননি। সব বিষয় তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকবে। আপনাকে এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারছি না।’

অভিযোগের বিষয়ে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল হোসেন বলেন, ‘কয়েকজন শিক্ষক যে অভিযোগ দিয়ে বেড়াচ্ছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা বিভিন্ন অনিয়ম করেছেন বলে কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।’ 

১৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে গেলেও তাদের অবসর ও কল্যাণ ভাতা না দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এ জন্য একটু সময় লাগছে।’ 

তদন্ত কমিটিকে সহযোগিতা না করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তদন্ত কমিটিকে যতটুকু সহযোগিতা করার কথা ছিল আমরা তা করেছি। তদন্ত কমিটি তাদের কাজ স্বাভাবিকভাবেই করেছে এখানে আমাদের কোন হস্তক্ষেপ নেই।’ 

কলেজ প্রাঙ্গণে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়টি অস্বীকার করে এ প্রতিষ্ঠান প্রধান বলেন, ‘এমন কোন অভিযোগই নেই। কোন শিক্ষক কখন দেখেছেন তা তো জানি না। এমন কোন অভিযোগও কেউ করেননি।’ 

আর্থিক বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনি তাদেরকে প্রমাণ দিতে বলেন।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান টিটুর সঙ্গে একুশে টেলিভিশনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তিন দিন ধরে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার রিং করলেও তিনি ফোন তোলেননি। পরে তার মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে দুই দিন অপেক্ষা করেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি ও অধ্যক্ষের অপকর্মের বিষয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের কাছেও একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন লাকী। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে অভিযোগ পেয়েছি তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তদন্তের জন্য ফরোয়ার্ড করে দিয়েছি।’ 

তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হলেও চার মাসের মধ্যেও তা দাখিল করা হয়নি এমনটি জানালে তিনি সংশ্লিষ্ট জনসংযোগ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে পরামর্শ দেন।  

এমএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি